ওটস সম্পর্কে যারা জানেন তারা নিশ্চয় জানেন যে এটা কতটা পুষ্টিকর এবং দেহের জন্য কতটা উপকারী। বিগত এক দশকে, ওটমিল একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হেলদি খাদ্য হয়ে উঠেছে। ডাক্তারদের মতে, ওটসে প্রচুর ফাইবার এবং অ্যাভিন্যানথ্রামাইড থাকে, যা স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুবই কার্যকর। অ্যাভিন্যানথ্রামাইড ধমনীতে প্রদাহ কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। প্রতিদিন যারা ওটমিল খাবে, তাদের দেহে বিভিন্ন উপকার হয়ে থাকে।
ওটস আমাদের কি কি উপকার করেওজন কমাতেযখন আপনি আপনার ওজন হ্রাস করতে চান তখন অন্য সব নিয়ম মেনে চলার সাথে সাথে আপনার খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন ওটস। এটি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। অ্যামোলার নিউট্রিশন এবং ফুড রিসার্চ এর একটি ইস্যুতে ২০০৯ সালে প্রকাশিত একটি গবেষণা এই দাবির প্রমাণ দেয় যে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ওটস কতটা কার্যকরী । গবেষণায় দেখা গেছে যে বি-গ্লুক্যান নামে একটি যৌগ ওটমিল-এ পাওয়া যায়। এটি এমন একটি যৌগ যা হরমোন কোলেসিসটোকাইনিন বৃদ্ধি করে ক্ষুধা কমাতে পারে।
রক্তচাপ হ্রাস করাআমাদের দেশে মৃত্যুর শীর্ষ কারণগুলোর মধ্যে একটি হলো হার্টের রোগ, যার প্রধান কারণ উচ্চ রক্তচাপ। তাই ওটস এর মাধ্যমে যেকোনো সময় আমরা আমাদের রক্তচাপ কমাতে পারি, এবং হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করতে পারি। আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য ঔষধ হিসাবে উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ এই খাদ্যটিই কার্যকর।
রক্তের সুগার স্তরের স্থিরতাডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে সুগারের ওঠানামা নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। ওটমিলে থাকা উচ্চ ফাইবারের কারণে, চিনির রক্তচাপ থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি পাওয়া যায়, যার মানে এটাতে একটি নিম্ন গ্লাইসিমিক সূচক আছে। যা সুগার প্রেসার কমায়। জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে কম গ্লাইসিমিক ডায়েট কম ইনস্যুলিন প্রতিরোধের সাথে সম্পর্কিত এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং বিপাকীয় সিন্ড্রোমের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
উচ্চ মাত্রার পুষ্টিকর খাবারব্রিটিশ জার্নাল অব নিউট্রিশনের একটি সম্পূরক ইস্যুতে প্রকাশিত, ওটসে আছে প্রচুর ভিটামিন, পাচক ও উন্নত খাদ্য গুণমান যা দেহের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। অনেক সময় দেখা যায় আমরা সময়ের অভাবে বা অভ্যাসবশত দ্রুত খাবার খেয়ে ফেলি তাই মাঝে মাঝে প্রয়োজনের চাইতে অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন একবেলা যদি ওটস খাওয়া হয় তাহলে অতিরিক্ত খাওয়া হলেও ওটস একটা সামঞ্জস্য বজায় রেখে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে।
কোলোরেক্টল ক্যান্সারের ঝুকি কমায়প্রতিদিন মাত্র ১০ গ্রাম ওটস কোলেস্টেরল ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ১০% কমিয়ে দেয়। এটি নাইট্রিক অক্সাইড উৎপাদন বৃদ্ধি করে, যা ধমনীতে ক্যান্সারের কোষ তৈরিতে শক্তভাবে বাধা দেয়। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস ধমনীকে ফ্রি র্যাডিকলস থেকে রক্ষা করে। এই ফ্রি র্যাডিকলস ক্যান্সার এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। পুষ্টি ও ক্যান্সারে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ওটসের অ্যাভিন্যানথ্রামাইড-গুলি আসলে কোলন ক্যান্সার কোষের বিস্তারকে হ্রাস করে।
ওটসের পুষ্টিগুণ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বলে শেষ করার মত নয়। তাই নীরোগ এবং ফিট থাকতে আজ থেকেই আপনার খাদ্য তালিকায় ওটস যোগ করুন।