চোখ চুলকানো বিরক্তিকর এক সমস্যা। চিকিৎসাবিজ্ঞানে একে বলে ওকিউলার প্রুরিটাস। একটি ট্রিগার বা অ্যালার্জেনের প্রতিক্রিয়ার কারণে শরীরে হিস্টামিন নামক একধরনের রাসায়নিক নিঃসৃত হয় বেশি। ফলে চোখের রক্তবাহী নালি প্রসারিত হয়। এ কারণে চোখ চুলকায় ও জ্বলে, চোখ পানিতে ভরে যায়, কখনো লাল হয়ে যায়।
চোখে চুলকানির সঙ্গে যেসব লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা যায়— - চোখের পৃষ্ঠে ও পৃষ্ঠতলের ঝিল্লিতে প্রদাহ।
- সর্দি, গলা ধরে যাওয়া, হাঁচি।
- চোখের পাতা ফুলে যাওয়া। চোখ জলে ভরে যাওয়া।
- চোখ জ্বালা করা। চোখ লাল হওয়া।
কারণ# অ্যালার্জির কারণ: ধুলাবালু, মোল্ড (একধরনের ছত্রাক), চোখের ড্রপ বা পশুর পশম থেকে চোখে চুলকানি হতে পারে। চোখের চারপাশে যদি ডার্মাটাইটিস হয়, তাহলেও চোখ চুলকায়।
# ড্রাই আই সিনড্রোম: যখন চোখের ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি প্রয়োজনীয় পরিমাণ অশ্রু উৎপাদন করতে পারে না, তখন চোখের পৃষ্ঠতল যথাযথ আর্দ্র হয় না। ফলে অস্বস্তি হয়, চুলকানি হয়। কেমিক্যাল বা বাইরে থেকে কোনো পদার্থ চোখে প্রবেশ করলে (মেকআপ বা সুইমিংপুলে থাকা ক্লোরিন) চুলকানি হয়।
# ব্লেফারাইটিস: সংক্রমণে চোখের পাতায় প্রদাহ হতে পারে। কন্ট্যাক্ট লেন্সের কারণেও সংক্রমণ হতে পারে। এতে চুলকানি হতে পারে। আবার কোনো ওষুধের (অ্যান্টিহিস্টামিনিকোস, পেইনকিলার, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস বা জন্মনিয়ন্ত্রণ ওষুধ) প্রতিক্রিয়াতেও চুলকানি হতে পারে।
চিকিৎসাচোখের পাতা, কর্নিয়া ও কনজাংকটিভা (ঝিল্লি), চোখের গতি, আলোয় চোখের পিউপিল বা চক্ষুতারার প্রতিক্রিয়া, দৃষ্টিশক্তি ইত্যাদি পরীক্ষা করে চুলকানির কারণ নির্ণয় করতে হবে।
চোখ চুলকানির চিকিৎসা হলো মূলত চিহ্নিত কারণগুলোর চিকিৎসা। যেমন যদি বাইরে থেকে কোনো পদার্থ চোখের ভেতর প্রবেশ করে থাকে, সে ক্ষেত্রে স্যালাইন বা উষ্ণ গরম জল দিয়ে চোখ পরিষ্কার করা যেতে পারে। বন্ধ চোখে আইস প্যাক বা পরিষ্কার, ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে কাপড় চোখের ওপর রাখা, ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ ধোয়া। চোখ রগড়ানো যাবে না। যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আরাম না পাওয়া যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অ্যালার্জির ক্ষেত্রে অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ বা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামারেটরি আই ড্রপ ব্যবহার করতে হয়; বিশেষ করে চোখের পৃষ্ঠ থেকে অ্যালার্জেন ধোয়ার জন্য ড্রপ, শুষ্ক চোখকে আর্দ্র (কৃত্রিম জল আনতে সাহায্য করে) রাখতে সাহায্য করে—এমন ড্রপ ব্যবহার করা যেতে পারে।
শুষ্ক চোখের চিকিৎসার জন্য ঘরের বায়ুকে যতটা সম্ভব আর্দ্র রাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে ঘরের মধ্যে চারপাশে গামলা, বাটি বা বালতিতে পানি ভরে রাখতে হবে।