Author Topic: ওজন কমাতে কেন খাবেন লাল চাল-লাল আটার তৈরি খাবার?  (Read 2204 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 363
  • Gender: Male
    • View Profile


‘ভেতো বাঙালি’ তকমা ছাড়ানোটা কিন্তু বেশ কঠিন। আপনি হয়তো স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে উঠছেন, চেষ্টা করছেন খাদ্যতালিকা থেকে দু-এক বেলা ভাত বা রুটিজাতীয় খাবারকে বিদায় দিতে। বাদ সাধলেন মা, ‘ভাত-রুটি না খেলে সারা দিন থাকবি কী করে?’ চলল খানেক তর্কবিতর্ক, মান-অভিমান। আবেগের লড়াইয়ে মায়েরই হয়তো জয় হলো। ভাত-রুটিই বহাল রইল। আবার আপনজনের কাছ থেকে বাধাবিপত্তি না এলেও অনেকের পক্ষেই আজীবনের অভ্যাস বদলে ভাত-রুটিকে বিদায় জানানো মুশকিল।

তাই ভাত-রুটিকে নিয়েই গড়ে তুলতে পারেন নতুন ধারার খাদ্যাভ্যাস। ওজন কমাতে লাল চাল-লাল আটার তৈরি খাবার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। শ্বেতশুভ্র চাল কিংবা আটা-ময়দা বাদ দিয়ে কেন খাবেন লাল চাল-লাল আটার তৈরি খাবার?

ক্যালরির হিসাব-নিকাশ
লাল চাল বা লাল আটার তৈরি খাবার থেকে ঠিক ততটাই ক্যালরি পাওয়া যায়, যা পাওয়া যায় সাদা চাল বা সাদা আটার তৈরি খাবার থেকে। স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে বেশি দাম দিয়ে লাল চাল–আটা কেন খাব? উত্তরটা লুকিয়ে আছে এগুলোর পরিপাকপ্রক্রিয়ার মধ্যে। পরিশোধিত (রিফাইন) চাল বা আটা (অর্থাৎ সাদা চাল বা সাদা আটা কিংবা ময়দা) থেকে তৈরি খাবার পরিপাক হয় খুব দ্রুত। অর্থাৎ এগুলো পাকস্থলিতে খুব বেশি সময় থাকে না। ফলে ভাত, রুটি বা পাউরুটির মতো ‘ভারী’ খাবার খাওয়ার কিছু সময় পরেই ফের ক্ষুধা বোধ করি আমরা। ক্ষুধা মেটাতে আবার হয়তো পুরি, শিঙাড়া, বিস্কুট বা কেকের মতো ‘হালকা’ নাশতার দ্বারলরির হিসাব-নিকাশস্থ হই। মূল খাবারের ফাঁকে ফাঁকে প্রতিনিয়ত এভাবে নাশতা যোগ করা হলে ওজন কিন্তু কমবে না। এমনকি নাশতা হিসেবে ডায়াবেটিস রোগীর উপযোগী (কম শর্করাসম্পন্ন) বিস্কুট খেলেও ক্যালরির মোট হিসাবে খুব একটা হেরফের হয় না; কারণ, এগুলোও পরিপাক হয়ে যায় চটজলদি। তাই আবার অনুভূত হয় ক্ষুধা। আবার নিতে হয় বাড়তি ক্যালরি। অথচ ভাত বা রুটি যেটিই খান, সেটি যদি ঢেঁকিছাঁটা অর্থাৎ লাল চাল বা লাল আটার হয়, তাহলে সহজে ক্ষুধা লাগে না। কারণ, এগুলোতে প্রচুর আঁশ থাকে। তাই পরিপাক হয় ধীরে ধীরে। দীর্ঘ সময় পাকস্থলীতে থাকে বলে অন্যান্য ‘টুকিটাকি’ খাবার গ্রহণের প্রবণতা কমে। এভাবেই কমে যায় সারা দিনে মোট ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ। ওজনও থাকে নিয়ন্ত্রণে।

লেখক: শম্পা শারমিন খান, সহযোগী অধ্যাপক, খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগ
গভর্নমেন্ট কলেজ আব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স

সূত্র – প্রথম আলো