Author Topic: কম বাজেটে প্রোটিনের কয়েকটি সেরা উৎস  (Read 2121 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 363
  • Gender: Male
    • View Profile


প্রতিদিন আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন বা আমিষ অপরিহার্য। প্রোটিন আমাদের শরীরে নতুন কোষ উৎপাদনে সহায়তা করে এবং এছাড়াও এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া এবং হরমোন সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।

আমাদের শরীরের প্রতি কেজী ওজনের বিপরীতে ১.২ – ২ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। শরীরের এই প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ আবশ্যক।

ডিম
সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারগুলোর মধ্যে ডিম অন্যতম। এটি প্রোটিনের ভালো উৎস এবং আমাদের শরীরে সহজেই শোষিত হয়। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ পদার্থ, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট বিদ্যমান রয়েছে ৷



কটি ডিম সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি-১২ এবং এ দিয়ে পরিপূর্ণ। ডিমে কোলিন নামক উপাদানটি মেয়েদের গর্ভাবস্থা এবং বুকের দুধ খাওয়ার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি বৃদ্ধি ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ডিমের সাদা অংশে বিশুদ্ধ প্রোটিন রয়েছে যা পেশিগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। একটি ডিমে ৬.৩ – ৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে।

বাদাম
বাদাম ফাইবার, ভিটামিন-ই, ম্যাঙ্গানিজ এবং ম্যাগনেসিয়ামের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে ভরপুর থাকে।

বাদামে প্রচুর পরিমাণে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন বিদ্যমান। বাদাম খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য খুব উপকারী। পরিমিত পরিমাণে খেলে এটি আমাদের খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) এবং উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।



বাদাম ওজন বাড়াতে সহায়ক। যারা নিয়মিত জিম করেন তাদের জন্য বাদাম খাওয়া খুবই কার্যকরী হতে পারে। বাদামে থাকা প্রোটিন পেশিগঠনে সাহায্য করে।

১০০ গ্রাম বাদামে ২০-২৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে।

চিকেন
মুরগীতে ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, জিংক ও সেলেনিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান থাকে।



শরীরে প্রোটিন গ্রহণ বাড়াতে মুরগীর ব্রেস্ট এর অংশটুকু গুরুত্বপূর্ণ। একটি চিকেন ব্রেস্ট এর অর্ধেক অংশে (৮৬ গ্রাম) প্রোটিনের পরিমাণ ২৫-২৭ গ্রাম।

দুধ
দুধে আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সকল ধরণের পুষ্টি থাকে। এতে উচ্চমানের প্রোটিন বিদ্যমান। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং রিবোফ্লাভিন (ভিটামিন-বি২) থাকে।



অনেকে ল্যাক্টোজ অসহিষ্ণুতার কারণে দুধ বা দুগ্ধজাত দ্রব্য খেতে পারেনা। বাজারে এখন বিভিন্ন ধরণের ল্যাকটোজ-ফ্রি প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। যেমনঃ ল্যাকটোজ-ফ্রি দুধ,দই ও চিজ।

২৫০ মি.লি দুধে প্রায় ৮.৫ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।

মসুর ডাল
মসুর ডাল উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের অন্যতম উৎস। প্রোটিন ছাড়াও এতে ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন ও কপার বিদ্যমান।



নিয়মিত ডাল খেলে হৃদরোগ ও ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি কমে যায়।

১০০ গ্রাম মসুর ডালে ৯ গ্রাম প্রোটিন থাকে।

গরুর মাংস
গরুর মাংস প্রোটিনের একটি সমৃদ্ধ উৎস। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন,জিংক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি-৬ এবং বি-১২ থাকে।



১০০ গ্রাম চর্বিহীন গুরুর মাংসে ২৮-২৯ গ্রাম প্রোটিন বিদ্যমান থাকে।

তবে গরুর মাংস পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

মাছ
মাছ প্রোটিনের একটি চমৎকার উৎস। প্রোটিন ছাড়াও এতে আয়োডিন, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন বি-১২ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন এবং খনিজ লবণ সরবরাহ করে।



যারা প্রচুর পরিমাণে মাছ খায় তাদের হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়।

এছাড়াও স্যামন এবং হেরিং এর মতো চর্বিযুক্ত মাছগুলোতে ওমেগা-৩ ফ্যাটিএসিডের পরিমাণ বেশি থাকে৷ যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।

১০০ গ্রাম মাছে ২০-২৫ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।

কুমড়োর বীজ
কুমড়োর বীজ অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। এতে আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম এবং জিংক বিদ্যমান। কুমড়োর বীজ ফাইবার এবং উদ্ভিজ্জ প্রোটিন সমৃদ্ধ।



১০০ গ্রাম কুমড়োর বীজে ৩০ গ্রাম প্রোটিন থাকে।

প্রতিদিন পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের প্রতি কেজী ওজনের ১.২-২ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ আবশ্যক। আমরা প্রাণীজ এবং উদ্ভিজ্জ দুধরণের উৎস থেকেই প্রোটিন গ্রহণ করতে পারি।

source: https://nutrition-bd.com/