Author Topic: ফিজিওথেরাপি সম্পর্কে জানুন  (Read 2157 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 363
  • Gender: Male
    • View Profile
ফিজিওথেরাপি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা WHO-এর নির্দেশনা অনুযায়ী ফিজিওথেরাপি বা ফিজিক্যাল থেরাপি হল এমন একটি চিকিৎসা ব্যবস্থা যা সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক স্বতন্ত্রভাবে রোগীর রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসাব্যবস্থা প্রদান করতে পারেন।  বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং ওয়ার্ল্ড কনফেডারেশন ফর ফিজিক্যাল থেরাপি (ডব্লিউসিপিটি)-এর মতে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক প্রফেশনাল ডিগ্রীধারীরাই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক বা ফিজিওথেরাপিস্ট এবং স্বাধীনভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে পারেন।

ফিজিওথেরাপি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক অন্যতম এবং একটি অপরিহার্য শাখা। শুধুমাত্র ঔষধ সব রোগের পরিপুর্ণ সুস্থতা দিতে পারে না। বিশেষ করে বিভিন্ন মেকানিক্যাল সমস্যা থেকে যে সব রোগের সৃষ্টি হয়, তার পরিপুর্ণ সুস্থতা লাভের উপায় ফিজিওথেরাপি।

ফিজিওথেরাপি হল একটি আধুনিক ও বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা  পদ্ধতি যেখানে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর সব কথা শুনে-বুঝে, রোগীকে ভালভাবে দেখে এবং প্রয়োজনে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোগীর সঠিক রোগ , আঘাত বা অঙ্গ বিকৃতির ধরন নির্নয় করে রোগীকে বিভিন্ন ধরনের ফিজিক্যাল মেথড যেমন ম্যানুয়াল টেকনিক , তাপ এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে চিকিৎসা করে থাকেন ।



সড়ক দুর্ঘটনা, শারীরিক প্রতিবন্ধিতা, বিকলাঙ্গতা, পক্ষাঘাত এবং বড় কোন অস্ত্রোপচারের পর রোগীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের বাত, মাথা, ঘাড়, কাঁধ, পিঠ, কোমর ও হাঁটুর ব্যথায় এবং স্পোর্টস ইঞ্জুরিতে ফিজিওথেরাপি বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত চিকিৎসাব্যবস্থা।

ফিজিওথেরাপি’র সূচনা ও বাংলাদেশে পরিচয়
ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা সাম্প্রতিক কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা নয়। হিপোক্রেটাস সেই প্রাচীন গ্রীসে ম্যাসেজ ও ম্যানুয়াল থেরাপি দ্বারা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার  পরিচয় করিয়েছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ৪৬০ সালে হেক্টর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার একটি শাখা ব্যবহার করতেন যাকে বর্তমানে হাইড্রোথেরাপী বলা হয়।  যতটুকু জানা যায় ১৮৯৪ সালে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার বর্তমান ধারা অর্থাৎ ম্যানুয়াল থেরাপি, ম্যানিপুলেটিভ থেরাপি, এক্সারসাইজ থেরাপি, হাইড্রোথেরাপি, ইলেক্ট্রোথেরাপি ইত্যাদি প্রবর্তন করা হয়। নিউজিল্যান্ডে ১৯১৩ এবং আমেরিকাতে ১৯১৪ সালে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শুরু হয়।

বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপির যাত্রা অনেক দিন পরে। ১৯৭২ সালে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য বিদেশী ফিজিওথেরাপিষ্ট দ্বারা স্বাধীন বাংলাদেশে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার সূচনা হয়। এর পরে ফিজিওথেরাপীর ব্যবহার এ দেশে উত্তর উত্তর বাড়তেই থাকে। এর গুরুত্ব উপলব্ধি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা অনুষদের অধীনে স্নাতক ডিগ্রী চালু করা হয়। বর্তমানে নিটোর, সিআরপি, পিপলস্‌ ইউনিভার্সিটি, গণবিশ্ববিদ্যালয়, স্টেট্‌ কলেজ অব হেলথ্‌ সায়েন্স সহ এগারোটি ইনষ্টিটিউটে ফিজিওথেরাপী গ্রাজুয়েশন কোর্স চালু রয়েছে। দুটি প্রতিষ্ঠান এ মাস্টার্স কোর্স চালু রয়েছে।



ফিজিওথেরাপির প্রকারভেদ
একজন ফিজিওথেরাপিষ্ট রোগীর রোগ বর্ণনা, ফিজিক্যাল টেষ্ট, ফিজিওথেরাপিউটিক স্পেশাল টেষ্ট, প্রয়োজন সাপেক্ষে বিভিন্ন রেডিওলজিক্যাল টেষ্ট এবং প্যাথলজিক্যাল টেষ্ট এর মাধ্যমে রোগ নির্ণয় বা ডায়াগ্‌নোসিস করে থাকেন। ফিজিওথেরাপি নিতে আসা প্রত্যেকটি ব্যক্তির চিকিৎসা চিকিৎসকগণ রোগীর সুনির্দিষ্ট প্রয়োজন অনুসারে বেশ কিছু থেরাপি থেকে পছন্দ করে নেন।

ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞগণ তাদের বিশেষ জ্ঞান (এক্সপার্টিজ) অনুযায়ী অর্থোপেডিক, নিউরোলজি, গাইনি কিংবা শিশু রোগীর চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও ফিজিওথেরাপির উপ-শাখার বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক রয়েছেন।

  • ম্যানুয়েল থেরাপিঃ ম্যানুয়েল থেরাপির মধ্যে রয়েছে জয়েন্টগুলো নড়াচাড়া করা , স্ট্রেচিং ইত্যাদি এর মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে মেরুদন্ডের নাড়াছাড়া, হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্টের মুভমেন্ট ও স্ট্রেচিং
  • এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম থেরাপিঃ এর মধ্যে রয়েছে মাসল ট্রেইনিং ও শক্তিশালী করন , কার্ডিওভাসকুলার ট্রেইনিং ও স্ট্রেচিং
  • ইলেক্ট্রোথেরাপিঃ – যার মধ্যে রয়েছে  ট্রান্সকুটানিয়াল বৈদ্যুতিক স্নায়ু উত্তেজক (Transcutaneous Electrical Nerve Stimulation TENS), লেজার থেরাপি, ডায়থেরমি এবং আল্ট্রাসাউন্ড।  তবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাতে মেশিনের ব্যবহার খুবই নগন্য।

Sushanta Kumar Ghose
Physiotherapist
DIU Medical Center
Daffodil International University
Daffodil Smart City, Ashulia, Dhaka.