পাকস্থলীর ক্যান্সার:
----------------------------------------------------------
পাকস্থলীর ক্যান্সার পরিচিত রোগ । প্রতিবছর অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং অনেকেই মৃত্যুবরণ করে। তবে এই রোগটি যদি প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা যায় এবং যথাযথ চিকিৎসা করা যায় তবে রোগী সুস্থ হয়ে যায় । অপারেশনের মাধ্যমে ক্যান্সার আক্রান্ত স্থান ফেলে দিলে রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যায়।
পাকস্থলীর ক্যান্সারের বিভিন্ন কারণ আছে। হেলিকোব্যাকটর পাইলোরি নামক এক প্রকার ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে ক্যান্সার হতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়া আলসারও তৈরি করে। মদপান করলে পাকস্থলীর ক্যান্সার সহ বিভিন্ন ক্যান্সার হয়। প্রচুর পরিমাণে যারা মদপান করেন তারা বিভিন্ন জটিল জটিল সমস্যায় আক্রান্ত হন। টিনজাত খাবার বেশি গ্রহন করলে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বর্তমানে অনেকেই টিনজাত খাবার প্রচুর পরিমাণে খাচ্ছেন। ফলে দেখা দিচ্ছে ক্যান্সার।
অত্যধিক লবণ আছে এমন খাবার গ্রহণ করলে পাকস্থলীর ক্যান্সার হয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের অভাব রয়েছে এমন খাবার কম গ্রহণ করলে কিন্তু পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে। ফলমূল ও শাকসবজিতে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ধূমপান করলে এবং বংশগত কারণেও দেখা দিতে পারে পাকস্থলীর ক্যান্সার। নারীদের চেয়ে পুরুষ পাকস্থলীর ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয়
পাকস্থলীর ক্যান্সার রোগের প্রাথমিক অবস্থায় পেটে অস্বস্তি ছাড়া আর তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না। রোগীরা বা তার সাথের লোকজন এই সমস্যাগুলোকে তেমন গুরুত্ব দেন না । তারা মনে করেন গ্যাস্ট্রিক বা আলসার হয়েছে। এদের অনেকেই গ্যাসের ওষুধ খেয়ে সাময়িক আরাম অনুভব করেন। কিন্তু এর ফলে পরে দেখা দিতে পারে মারাত্মক সমস্যা। ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়তে পারে অন্য জায়গায়। তখন চিকিৎসা করে ভাল ফল পাওয়া যায়না । আমাদের দেশে রোগীরা যখন ডাক্তারের কাছে যান তখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্যান্সার পাকস্থলীর বাইরে ছড়িয়ে পড়ে এবং এর ফলে চিকিৎসা করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে
৪০ বছরের পর যদি অরুচি হয়, রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় , খাদ্য গ্রহণের পর পেট ব্যথা হয় , শরীরের ওজন কমে যায় , বমির সাথে রক্ত কিংবা যদি আলকাতরার মতো কালো পায়খানা হয় তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে এবং এন্ডোস্কপি করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে ফলাফল খুব ভাল। তখন চিকিৎসা অনেক সহজ হয়ে যায় ।
এক সময়ে জাপানে পাকস্থলী ক্যান্সারের কারণে অনেক লোক মারা যেত। বর্তমানে তারা বিভিন্ন ব্যাবস্থা নিয়েছে। এর ফলে প্রকোপ অনেক কমে এসেছে। আমাদেরও সচেতন হতে হবে। ফলমূল শাকসবজি বেশি খেতে হবে। টিনজাত খাবার কম খেতে হবে। মদপান ও ধূমপান থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকতে হবে। সবাই সচেতন হলে পাকস্থলীর ক্যান্সার অনেক কমানো সম্ভব।