শীতে ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে ত্বকের পিগমেন্টেশনের সমস্যা থেকে শুরু করে ত্বক খসখসে হয়ে পড়ে। দেখা দেয় ত্বক ও ঠোঁট ফাটার মতো সমস্যা। শীতের ত্বকের যত্নে ত্বক আর্দ্র রাখা জরুরি। ময়েশ্চারাইজার নির্বাচনে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন। সঠিক ময়েশ্চারাইজার ত্বকের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে সাহায্য করে, ত্বকের বাইরে একটি প্রতিরোধক স্তর বা স্তর তৈরি করে। এতে বাইরের ক্ষতিকর জীবাণু ও ধুলাবালি সহজেই ত্বকের ক্ষতি করতে পারে না। ত্বকের পিগমেন্টেশনের সমস্যা বা দাগ দূর করতেও ময়েশ্চারাইজার জরুরি।
শীতে ঘরে বা বাইরে যেখানেই থাকুন না কেন, খুব দ্রুত আর্দ্রতা হারায় ত্বক। ময়েশ্চারাইজার মূলত আমাদের ত্বকের এই হারিয়ে যাওয়া আর্দ্রতাকে ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। বলিরেখা রোধেও ময়েশ্চারাইজার জরুরি। যাঁদের ত্বক শুষ্ক, অন্যদের তুলনায় তাঁদের বলিরেখা খুব দ্রুত পড়ে। শীতে অনেকের সানস্ক্রিন ব্যবহারে অনীহা থাকে। ফলে ত্বকে সানট্যান বা সানবার্নের মতো সমস্যা হয়। কিন্তু শীতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি আরও বেশি ত্বকের ক্ষতি করে। এ সময় ত্বকের সুরক্ষায় এসপিএফ+৫০ যুক্ত ময়েশ্চারাইজার বেছে নিতে হবে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এই ধরনের ময়েশ্চারাইজার জরুরি।
শীতে শরীরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের জন্য গোসলের পরের সময়টাই ভালো। ত্বক ভেজা থাকা অবস্থায় ব্যবহার করা ভালো। এতে কার্যকারিতা বেশি পাওয়া যায়। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ পরিষ্কার করার পর ভেজা ভাব থাকা অবস্থায় ময়েশ্চারাইজার দিতে হবে। প্রতিদিন সকালে এবং রাতে ত্বক পরিচর্যার পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার দিন।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের নিয়মশুষ্ক ত্বকে ময়েশ্চারাইজার না লাগিয়ে ভেজা ভাব থাকতে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। ভালো ফলাফল পেতে প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এবং ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুই বেলা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের অভ্যাস গড়ে তুলুন। অনেকেই শীতকালে অভিযোগ করেন, ত্বক শুষ্ক হওয়ায় প্রসাধন ভেসে ভেসে থাকে। এ সমস্যার সমাধান হলো মুখ পরিষ্কার করার আগেই একটু ময়েশ্চারাইজার দিন। কিছুক্ষণ হালকা হাতে ম্যাসাজ করার পর মুখ ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করে আবার ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে তারপর প্রসাধন ব্যবহার করুন। এ ছাড়া যাঁরা প্রতিদিনই বাইরে বের হন কিংবা মেকআপ করেন তাঁরা ডাবল ক্লিনজিং করার পর সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার দিন।
কোন ত্বকে কেমন ময়েশ্চারাইজারতৈলাক্ত ত্বকের জন্য যতটা সম্ভব কম ঘনত্বের ময়েশ্চারাইজার দিতে হবে। যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, তাঁদের মুখে ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডসের সমস্যা হয়, সে ক্ষেত্রে ‘নন কমডোজেনিস’ জাতীয় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করাই ভালো। এসেনশিয়াল অয়েল যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যাবে না। শুষ্ক ত্বকে জেল বেসড, গ্লিসারিন বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো।
লেখক: ডা. জাহেদ পারভেজ: সহকারী অধ্যাপক, চর্ম-যৌন ও হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, ঢাকা
সূত্র – প্রথম আলো