উন্মুক্ত জায়গায় ব্যায়াম করা শরীরের জন্য উপকারী। মুক্ত বাতাসে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে; উদ্বেগ, উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে থাকে। দিনে খোলা জায়গায় হাঁটলে ভিটামিন ডি-ও পাওয়া যায়।
কিন্তু শীতে খোলা জায়গায় ব্যায়ামের কিছু সমস্যা আছে। অনেকের হাঁপানির সমস্যা রয়েছে, তাঁদের শীতে কষ্ট বাড়ে। শীতে শুষ্কতা ও ধুলার কারণে চোখও জ্বালা করে। ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। ভোরে বা সন্ধ্যায় হাঁটলে কুয়াশায় ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ঝুঁকি আছে।
তাই শীতের সময় বাইরে না গিয়ে বাড়িতেই কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। সাধারণত তিন ধরনের ব্যায়াম করা হয়ে থাকে—প্রথমে জয়েন্ট স্ট্রেচিং, দ্বিতীয় ভাগে মাসকুলার ও একেবারে শেষে কার্ডিওভাসকুলার।
কিন্তু শীতে এই ব্যায়ামের ধারাটা ভিন্ন। এ ক্ষেত্রে প্রথমে কার্ডিওভাসকুলার, দ্বিতীয় ভাগে মাসকুলার ও শেষে জয়েন্ট স্ট্রেচিং করতে হয়। কারণ, শীতে ওয়ার্মআপ করা কঠিন হয়ে যায়। তাই কার্ডিওভাসকুলার দিয়েই ব্যায়াম শুরু করতে হয়।
- কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে হাঁটা, দৌড়ানো, স্কিপিং, সাইকেল চালানো ইত্যাদি।
- মাসকুলার ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে বুকডন, ওঠা-বসা। যাঁরা জিমে যাচ্ছেন, তাঁরা ডাম্বেল বা ভারী জিনিস তুলবেন।
- স্ট্রেচিংয়ের মধ্যে পড়ে বিভিন্ন ধরনের ইয়োগা বা যোগব্যায়াম।
যাঁরা জগিংয়ে অভ্যস্ত, তাঁরা ঘরে বসেই স্পট জগিং ও অ্যারোবিকস করতে পারেন। শীতের সময় যাঁরা দৌড়াতে বা হাঁটতে পারবেন না, তাঁরা শরীরে ঘাম ঝরানোর জন্য ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল বা টেবিলটেনিসের মতো ইনডোর গেম খেলতে পারেন।
গ্রীষ্মকালের চেয়ে শীতকালে ব্যায়াম করলে বেশি পরিমাণে ক্যালরি ক্ষয় হয়। শীতে ঘাম কম হয়। ফলে বেশি সময় ওয়ার্কআউট করা যায়। হার্টের ওপর অনেক কম চাপ পড়ে। কম শারীরিক কষ্টে বেশি ব্যায়াম করা যায়।
শীতে শরীরে তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে হয় বেশি পরিশ্রম করে। তাই এ সময় ব্যায়াম করলে হৃৎপিণ্ড ভালো থাকে। শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠলে হাত-পায়ের পেশিতে টান পড়ার সমস্যায় ভোগেন অনেকে। ব্যায়ামের কারণে পেশি সচল থাকবে। টান ধরার সমস্যাও কমে যাবে। তাই শীতের জন্য ব্যায়াম বন্ধ নয়।
লেখক: সুশান্ত কুমার ঘোষ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিআইইউ মেডিকেল সেন্টার