Author Topic: শীতে নাক বন্ধের সমস্যায় করণীয়  (Read 2183 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 363
  • Gender: Male
    • View Profile

আমাদের নাকের চারপাশের অস্থিগুলোর ফাঁকে বাতাসপূর্ণ কুঠুরি থাকে। এগুলোকে বলে সাইনাস। এর কাজ হলো মাথাকে হালকা রাখা, আঘাত থেকে মাথাকে রক্ষা করা, কণ্ঠস্বরকে সুরেলা রাখা, দাঁত ও চোয়াল গঠনে সহায়তা করা।

সাইনাসের ভেতরের মিউকাস (তরল) স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিদিন নাসিকাগহ্বর দিয়ে বেরিয়ে যায়। নাকের মধ্য দিয়ে সাইনাসে বাতাস চলাচল করে। এ প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটলে বাতাসের পরিবর্তে সেখানে পানি বা তরল পদার্থ জমা হয়ে প্রদাহ হয়। একে বলা হয় সাইনুসাইটিস।

কেন হয়
নাকে এলার্জির সমস্যা, ভাইরাস সংক্রমণ, মৌসুম পরিবর্তনজনিত সাধারণ ঠান্ডা-সর্দি, নাকের মাঝখানের হাড় বাঁকা হওয়া, নাকের ভেতরে মাংস (টারবিনেট) বৃদ্ধি, পলিপ, টিউমার ইত্যাদি কারণে সাইনুসাইটিস হয়। শীত বা এর শুরুতে অ্যালার্জি, ঠান্ডা ও ইনফ্লুয়েঞ্জা বেশি হয় বলে যাঁদের উল্লিখিত সমস্যাগুলো আছে, তাঁদের রোগটির প্রকোপ বেশি দেখা দেয় এ সময়।

লক্ষণ ও উপসর্গ
নাক থেকে ঘন, হলুদ বা সবুজাভ শ্লেষ্মা (সর্দি) বের হয়। সঙ্গে জ্বর হতে পারে।
নাক বন্ধ ও নাক দিয়ে শ্বাস নিতে অসুবিধা হতে পারে।
নাকের চারপাশে ব্যথা, চোখের নিচে অথবা কপালে ফোলাভাব থাকতে পারে। চোখ, গাল, নাক বা কপালের চারপাশে ব্যথাও হতে পারে।
কানের ভেতরে চাপ অথবা বন্ধ বন্ধ ভাব অনুভব হতে পারে।
মাথাব্যথা, এমনকি দাঁতে ব্যথাও হতে পারে।
ঘ্রাণশক্তি বা গন্ধের অনুভূতি কমে যেতে পারে।

শীতের আগেই সতর্কতা
রাতে বা ভোরে বের হলে কান-মাথা-গলা ঢেকে বের হওয়া উচিত। শীত কমাতে পায়ে মোজা পরা ভালো।
শীতে ধুলা থেকে অ্যালার্জি বাড়ে। তাই রাস্তায় বের হলে মাস্ক পরা ভালো।
অ্যালার্জি থাকলে এর নির্দিষ্ট কারণ জেনে নিতে হবে; যাতে সতর্ক হয়ে সেই উপাদান এড়িয়ে চলা যায়।
ধূমায়িত ও দূষিত পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে।
ঘুমানোর সময় মাথা উঁচু রাখতে হবে; যাতে সাইনাস নিজে থেকেই পরিষ্কার হতে পারে।
দীর্ঘক্ষণ ঠান্ডা পানি না ঘাঁটা উচিত।
মশার কয়েলের ধোঁয়াসহ যেকোনো ধরনের ধোঁয়া ও স্প্রে থেকে দূরে থাকুন।
করণীয়
ভাপ নিয়ে নাক পরিষ্কার করতে পারেন। দিনে অন্তত দুবার গরম পানির ভেপার (বাষ্প) নিতে হবে। গরম পানিতে মেনথলের দানা মিশিয়ে চোখ বন্ধ করে ভেপার বা ইনহেলেশন নাক দিয়ে টেনে নিন। এতে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস নাক থেকে সহজেই দূর হবে।
এ অসুখে সাধারণত অ্যান্টিহিস্টামিন–জাতীয় ওষুধ খুব কার্যকর ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে বাজারে চলতি নাকের ড্রপে সাময়িক আরাম মিললেও দীর্ঘদিন ব্যবহারে ঘ্রাণশক্তি কমে যেতে পারে।
সমস্যা বাড়লে নাক-কান-গলা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

লেখক: ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী, নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ, রেজিস্ট্রার, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

সূত্র – প্রথম আলো