Author Topic: স্তন ক্যান্সার কেন হয়, প্রতিরোধের উপায়গুলো (ডা. সৈয়দ জাহেদুল আলম)  (Read 1647 times)

0 Members and 2 Guests are viewing this topic.

Rasel Ali

  • Administrator
  • Full Member
  • *****
  • Posts: 242
  • Gender: Male
  • Trust Your Strength It Will take U Toward Success
    • View Profile
    • Daffodil Hospital

শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ক্যান্সার হলো স্তন ক্যান্সার। সারা বিশ্বে বর্তমানে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৫ হাজারের বেশি মানুষ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এসব রোগীর মধ্যে ৯৮ শতাংশের বেশি নারী এবং অল্পসংখ্যক পুরুষ রয়েছেন। পুরুষের চেয়ে নারীদের এই  রোগে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা বেশি। কারণ হিসেবে দেখা যায়, নারীরা তাদের নিজেদের  গোপনাঙ্গের রোগগুলো বা টিউমারের মতো অনুভূত হলেও এ নিয়ে সহজে কারও সঙ্গে কথা বলতে চান না। যে কারণে অজ্ঞানতা আর লজ্জার কারণেই নারীরা স্তন ক্যান্সারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।


স্তন ক্যান্সার কি?
চিকিৎসা পরিভাষায় স্তন ক্যান্সার বলতে স্তনের কিছু কোষ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়াকে  বোঝায়। কালক্রমে এই অনিয়মিত ও অতিরিক্ত  কোষগুলো বিভাজনের মাধ্যমে টিউমার বা পিণ্ডে পরিণত হলে রক্তনালির লসিকা ও অন্যান্য মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।


যেসব কারণে স্তন ক্যান্সার হতে পারে বলে মনে করা হয়:
স্তন ক্যান্সার হওয়ার নির্দিষ্ট  কোনো কারণ আজও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে সন্তানদের বুকের দুধ না খাওয়ানো মায়েদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি বলে তারা মনে করছেন। এ ছাড়া বংশগত বা হরমোনজনিত কারণে, অতিরিক্ত ওজন থাকলে, বেশি বয়সে বিয়ে করা, ৩০ বছরের পর নারীদের প্রথম বাচ্চা নেয়া, বারো বছরের আগে ঋতুস্রাব হওয়া এবং  দেরিতে মেনোপজ বা ঋতু বন্ধ হওয়াকেও ক্যান্সারের কারণ বলে গণ্য করা হচ্ছে
দীর্ঘদিন ধরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল বা হরমোনের ইনজেকশন নেয়া, ফ্যাটযুক্ত খাবার খাওয়া, ডায়েটে শাকসবজি ও ফলমূল কম রাখা, প্রক্রিয়াজাত খাবার বা প্রিজারভেটিভ খাবার খাওয়ার অভ্যাস, কৃত্রিম মিষ্টি ও রংযুক্ত খাবার খাওয়া, অ্যালুমিনিয়াম  বেজড উপাদান সমৃদ্ধ ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা, দীর্ঘদিন এয়ার ফ্রেশনার, কীটনাশক, অতিরিক্ত  কেমিক্যালযুক্ত কসমেটিকস, ডিওডোরেন্ট এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থের সংস্পর্শে থাকাকে চিকিৎসকরা স্তন ক্যান্সারের কারণ বলে মনে করছেন।


লক্ষণগুলো:
স্তনে ক্যান্সার হলে এর কিছু লক্ষণ দেখা যায়। এগুলো হলো- স্তন বা বগলে চাকা বা দানা দেখা  দেয়া, স্তনের চামড়ার রং পরিবর্তন হওয়া বা চামড়া মোটা হওয়া, নিপল বা স্তনের বোঁটা  ভেতরে দেবে যাওয়া, নিপল দিয়ে রক্ত বা পুঁজ পড়া ইত্যাদি। তাই যদি এসব লক্ষণ স্তনে শরীরে  দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।


পরীক্ষা বা টেস্টগুলো:
যদি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণগুলো সন্দেহ হয় তাহলে চিকিৎসক আপনাকে দেখে সত্যিই শরীরে ক্যান্সার আছে কিনা, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য  মেমোগ্রাম, স্তন এবং বগলের আলট্রাসনোগ্রাম, এফএনএসি, কোর বায়োপসি বা ট্রুকাট বায়োপসি এবং হিস্টোপ্যাথলজির মতো পরীক্ষাগুলো করার জন্য বলে থাকেন।


চিকিৎসা ও প্রতিরোধ:
যদি স্তন ক্যান্সার ধরা পড়ে তাহলে ধরন অনুযায়ী সার্জারি, কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, হরমোন থেরাপি ও টার্গেটেড  থেরাপি এসব চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। কেবল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই কোন চিকিৎসা করবেন তা নির্ধারণ করে থাকেন। তবে প্রতিরোধই হলো সর্বোৎতম চিকিৎসা। এর জন্য প্রয়োজন নিয়মিত ব্রেস্ট ক্যান্সার স্ক্রিনিং।  সেই সঙ্গে সুশৃঙ্খল জীবনযাত্রা ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এই ক্যান্সার জয় করা সম্ভব। স্তন ক্যান্সার জটিলতা বেড়ে গেলে মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই লজ্জা নয়, প্রতিটি সমাজে এর সচেতনতা প্রয়োজন, যাতে স্তনে এর লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত প্রতিরোধি ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে সময়ক্ষেপণে স্তনে টিউমার বা পিণ্ডটি বড় হয়ে না যায় বা ছড়িয়ে না পড়ে। তাই স্তনে শুরুতে কিছুটা দানা বা পিণ্ড অনুভব করেন কোনো অবহেলা নয় দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। এর রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের হোমিও ওষুধ ও চিকিৎসা। যদি প্রাথমিক অবস্থায় স্তনে টিউমার দেখা যায় এবং সচেতনতার সহিত সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করতে পারলে হোমিও চিকিৎসাতে  স্তন ক্যান্সার বা টিউমার আরোগ্য হয়। ভালো থাকুন, সুস্থ জীবনযাপন করুন।


লেখক: হোমিও চিকিৎসক ও ক্যান্সার গবেষক
Source:Manobjamin
BR
Rasel Ali