Author Topic: খোসপাঁচড়া রোগের লক্ষণ, প্রতিকার ও চিকিৎসা  (Read 2533 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 363
  • Gender: Male
    • View Profile
চুলকানির রোগগুলোর মধ্যে স্ক্যাবিস একটি বিরক্তিকর ও বিব্রতকর সমস্যা। সহজ বাংলায় একে বলা হয় খুজলি বা খোসপাঁচড়া। এটিকে বৈজ্ঞানিকভাবে স্ক্যাবিস বলা হয়ে থাকে।

স্ক্যাবিসে বেশি চুলকানি থাকে এবং এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। কতগুলো লক্ষণ দেখে আমরা বুঝতে পারি এটি খোসপাঁচড়া কিনা। এটিতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। এর কারণ তাদের চামড়া বেশ সংবেদনশীল থাকে।

কতগুলো কারণে শিশুদের  খোসপাঁচড়া হয়ে থাকে। যেমন-তারা হাত-পা ভালো করে ধুতে জানে না। হাইজেনিক ব্যবহার তারা জানে না।

এটি প্রথমে ফুসকুড়ির মতো দেখা যাবে, লাল লাল দানা দেখা দেবে। হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে হয় সাধারণত, এরপর কনুইতে, এলবোতে এবং বগলে হয়ে থাকে। পরে সেটি নাভির কাছে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে।

বাচ্চাদের খোসপাঁচড়া দেখা দেওয়ার পর সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারলে তারা চুলকিয়ে ইনফেকশন করে ফেলে। একটা পর্যায়ে সেখানে পুঁজ দেখা দেয়।
শিশুদের ক্ষেত্রে ইনফেকশন হলে সেটি কমানোর ওষুধ আমরা আগে দিই। এরপর গায়ে লাগানোর ওষুধ দিয়ে থাকি। এক্ষেত্রে গোটা ফ্যামিলিকে চিকিৎসা নিতে হয়।

বড়দের ক্ষেত্রে যখন স্ক্যাবিস হয় তখন চেনার লক্ষণ প্রায় একই। অনেক বেশি চুলকাবে বিশেষ করে রাতে বেশি চুলকানি হয়। পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে প্রায় সবাই আক্রান্ত হয়ে পড়ে।

এক বিছানায় একত্রে অনেকেই গাদাগাদি করে ঘুমালে, এক তোয়ালে বা বালিশ–চাদর ব্যবহার করলে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় এ রোগ। এ ছাড়া অনেক শিশু বিদ্যালয় থেকেও স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হয়।

সাধারণ কিছু হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ ধরনের বিরক্তিকর রোগ এড়ানো সম্ভব। পরিবারের সদস্যদের তোয়ালে, জামাকাপড় আলাদা থাকা উচিত। এ ছাড়া একজনের গামছা-তোয়ালে ও বালিশ অন্যের ব্যবহার করা উচিত নয়। জামাকাপড় ও নিয়মিত ব্যবহার্য জিনিস নিয়মিত সাবান দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে অন্তত চার ঘণ্টা শুকাতে হবে।

স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় পারমিথ্রিন ক্রিম সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া অ্যান্টিহিস্টামিন খেতে হবে। ওষুধের ব্যবহার করতে হবে নিয়ম মেনে। পরিপূর্ণ চিকিৎসা না দিলে পূণরায় স্ক্যাবিস হতে পারে।

পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে বা ঘা হয়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক লাগতে পারে।

ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে আসেন এমন সবারই একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। চিকিৎসা নেওয়ার পর সব কাপড়চোপড়, চাদর, তোয়ালে, বালিশ, গরম সাবান–পানি দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে। কড়া রোদ না পেলে কাপড় শুকানোর পর ইস্তিরি করে নিতে হবে।

খোসপাঁচড়া সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে কিডনিকেও প্রদাহে আক্রান্ত করতে পারে। এই ইনফেকশন কিডনি রোগের সৃষ্টি করতে পারে।