ওজন কমাতে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী এবং নিরাপদ উপায় হলো জীবনযাত্রার পরিবর্তন। আপনি যদি খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম এবং জীবনযাপনের ধারায় কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন তবে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবেন। সপ্তাহে আধা কেজি থেকে এক কেজি ওজন হ্রাস করা একটি নিরাপদ ও সংগত লক্ষ্য। ওজন হ্রাস আপনার জীবন রক্ষা করবে-আপনাকে বাঁচাবে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্ট্রোক থেকে।
তবে ওজন কমানোর আগে আপনার শলরে কি ধরনের চর্বি বা ফ্যাট আছে সেটা জেনে নিতে হবে, সলিড ফ্যাট, সেমি সলিড ফ্যাট, সেমি লিকুইড ফ্যাট। এর উপর ভিত্তি করে ব্যায়ম ও ডায়েট চার্ট করে চলতে হবে।
ওজন কমাতে খাদ্য নিয়ন্ত্রণের নিয়ম* দৈনিক কয়েক বার বা বার বার খাবেন। পরিমাণে অল্প।
* কোনো অতিরিক্ত ফ্যাট যুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
* খাবার শুরুতে এক গ্লাস পানি খেয়ে নেওয়া ভালো। সারা দিনে ৮-১০ গ্লাস পানিই যথেষ্ট।
* বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার যেমন চিনি, গুড়, মিষ্টি, সফট ড্রিংকস, আইসক্রিম, মাখন, চর্বিযুক্ত মাংস, আলু, কলা খাওয়া যাবে না।
* প্রচুর পরিমানে শাকসবজি, সালাদ, তাজা ফল (জুস নয়) খাবেন বেশি করে।
* ব্যস্ত জীবন কাটাবেন, অলস জীবনে খাবারের চাহিদা বেড়ে যায়।
* প্রতিদিন ২-৩ মাইল ঘাম ঝরিয়ে জোরে হাঁটবেন।
ওজন কমাতে ব্যায়াম* নিয়মিত হাঁটা সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। এতে ওজন কমে।
* নিয়ন্ত্রিত খাবারের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত হাঁটলে ওজন কমানোর পর আবার ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে না।
* আস্তে বা জোরে হাঁটার ওপর নির্ভর করে শরীরের শক্তির কোন উৎস বেশি ক্ষয়প্রাপ্ত হবে-চর্বি, শর্করা নাকি প্রোটিন। নিচু থেকে মাঝারি মাত্রায় হাঁটলে শরীরের চর্বি কমবে বেশি হারে। এতটুকু জোরে হাঁটতে হয় যাতে নাড়ির গতি ৬৫ শতাংশ বেড়ে যায়। আরও জোরে হাঁটলে শর্করা ক্ষয় হয় তখন। এমন জোরে হাঁটতে হয় যাতে নাড়ির গতি ৭৫ শতাংশ বেড়ে যায়। তাই অনেকে বলেন, চর্বি কমানোর জন্য আস্তে হাঁটাই ভালো। কিন্তু এতে সমস্যা হলো মোট ক্যালরি হ্রাসের পরিমাণ কম হয়। তাই আস্তে হেঁটে ওজন কাক্সিক্ষত মাত্রায় কমাতে হলে বেশিক্ষণ হাঁটতে হবে।
* যদি শুধু ওজন কমানো মূল উদ্দেশ্য হয় তাহলে বেশি জোরে হাঁটা শ্রেয়। এতে ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণ হয়। তবে শুরুতেই জোরে হাঁটা উচিত নয়। প্রথম দিকে আস্তে হেঁটে অভ্যস্ত হতে হয়। এরপর শরীরে সহনীয় মাত্রায় হাঁটার গতি বাড়ানো দরকার।
বি:দ্র: তবে ওজন কমানে ও ধরে রাখার ক্ষেত্রে উপরের দুইটি পদ্ধতির কোন বিকল্প নেই।লেখক: সুশান্ত কুমার ঘোষ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিআইইউ মেডিকেল সেন্টার