কেউ হয়তো সারা দিন অফিসের ডেস্কে কাজ করেন, বসে থাকেন কম্পিউটারের সামনে। কেউ আবার পিঠ বাঁকিয়ে বসে গৃহস্থালি কাজ করেন, কেউ ভারী জিনিস বহন করেন। কাজের সময় ভুল অঙ্গভঙ্গির কারণেই হোক, আর বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনের কারণেই হোক, আমাদের প্রত্যেকের কোমরব্যথা হতেই পারে।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিশ্রাম, নিয়মিত ব্যায়াম আর দু-একটা ব্যথানাশক সেবনের মাধ্যমে এ যন্ত্রণা কমে যায়। সিংহভাগ কোমরব্যথাই নিরীহ প্রকৃতির, এ নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এ ক্ষেত্রে ব্যথার নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ দেখা যায়, যার সাহায্যে চিকিৎসকেরা ধারণা করেন কোনো জটিলতা আছে। জেনে নিন এমন কিছু লক্ষণ:
১. বিশ্রাম নিলেও ব্যথা উপশম না হওয়া অথবা পিঠ সোজা রেখে শুয়ে থাকা অবস্থায়ও ব্যথা বাড়া
২. ঘুম থেকে ওঠার পর বেশ কিছুক্ষণ পর্যন্ত স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে প্রচণ্ড আড়ষ্টভাব অনুভব করা
৩. কোমরে আঘাত লাগার পর থেকে ব্যথা শুরু হওয়া
৪. কোমরব্যথার সঙ্গে দুপায়েও ব্যথা ছড়িয়ে পড়া
৫. বেশ খানিকক্ষণ হাঁটাচলা করলে পা অবশ হয়ে পড়া বা পায়ের মাংসপেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করা
৬. ২০ বছরের কম বয়সী কারও কোমরে ব্যথা হলে কিংবা বয়স্ক ব্যক্তির হঠাৎ প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হওয়া
৭. পিঠের ওপরের অংশে ব্যথা হওয়া
৮. ব্যথার পাশাপাশি শরীরের ওজন হ্রাস, জ্বর, রাতে প্রচুর ঘাম হয়ে জ্বর সারা, পেটে কোনো গোটা বা চাকা অনুভূত হওয়া ইত্যাদি।
এছাড়া যদি আগে কখনো যক্ষ্মা বা ক্যানসার অথবা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবনের ইতিহাস থাকে, সে ক্ষেত্রেও কোমরব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।
কোমর ব্যথা বা যে কোন ব্যথা কে কম গুরুত্ব দেয়া উচিত নয়। উপযুক্ত ও দ্রুত চিকিতসা প্রয়োজন।
লেখক: সুশান্ত কুমার ঘোষ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিআইইউ মেডিকেল সেন্টার