ব্যাক পেইন শব্দটি আমরা আজকাল বেশ শুনতে পাই। এই ব্যাক পেইন বা পিঠ ব্যথা সাধারণত নিচের পিঠের পেশি, লিগামেন্ট, মেরুদণ্ড, কশেরুকার সমস্যা থেকে তৈরি হয়। পিঠ ব্যথার কারণগুলোর ভেতর সবচেয়ে বেশি থাকে পিঠের পেশিতে চাপ পড়া এবং পিঠের কাঠামোগত সমস্যা। চলুন জেনে নেওয়া যাক পিঠ ব্যথা বা ব্যাকপেইনের কারণগুলো কী কী।
১. পিঠের পেশিতে চাপ বা স্ট্রেইন: পিঠের পেশিতে অতিরিক্ত চাপ, ভারী বস্তু ভুলভাবে উত্তোলন এবং ভুল ভঙ্গিতে শরীরের আকস্মিক নড়াচড়াতে প্রায়ই পিঠে ব্যথা করে। অতিরিক্ত কাজ করার ফলেও পেশিতে চাপ পড়তে পারে।
২. কাঠামোগত সমস্যা: কশেরুকা হলো মেরুদণ্ডকে ঘিরে থাকা চাকতি আকারের হাড়। এই হাড়গুলো একে অপরের সাথে সংযুক্ত। প্রতিটি কশেরুকার মধ্যবর্তী স্থানগুলোতে ডিস্ক নামক টিস্যু থাকে এবং কশেরুকাগুলোকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখে। এই ডিস্কে আঘাত পিঠে ব্যথার সাধারণ কারণ।
কখনো কখনো এই ডিস্কগুলো ফুলে যেতে পারে, বেরিয়ে পড়তে পারে (হার্নিয়েট হওয়া), অথবা ফেটে যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে মেরুদণ্ডের স্নায়ুতে চাপ পড়ে। এগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশি ব্যথা হয় হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা ডিস্কগুলো কশেরুকা থেকে বেরিয়ে গেলে। বেরিয়ে পড়া ডিস্ক স্নায়ুতে চাপ দিলে পিঠ বা কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা, শিরশিরে অনুভুতি এবং অল্প থেকে প্রচণ্ড পরিমাণ ব্যথা হতে পারে।
৩. বাত বা আর্থ্রাইটিস: স্পাইনাল অস্টিওআর্থারাইটিস পিঠে ব্যথার একটি সম্ভাব্য কারণ। এই রোগে আপনার পিঠের নিচের জয়েন্টগুলোর কারটিলেজের অবনতি ঘটে যার কারণে মেরুদণ্ড চেপে আসতে পারে বা সংকীর্ণ হতে পারে, যা ব্যথার কারণ।
৪. অস্টিওপোরোসিস: হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস এবং হাড় পাতলা হয়ে যাওয়াকে অস্টিওপোরোসিস বলা হয়। এতে আপনার কশেরুকার ছোটো ছোটো ফাটল হতে পারে যেগুলো গুরুতর ব্যথার কারণ।
৫. পিঠে ব্যথার অন্যান্য কারণ: ওপরে দেওয়া কারণগুলোর বাইরেও আরো কিছু কারণেও আপনার ব্যাকপেইন বা পিঠে ব্যথা হতে পারে।
– ডিজেনারেটিভ স্পন্ডিলোলিস্থেসিস: একটি কশেরুকা তার স্থান থেকে সরে গিয়ে কাছাকাছি একটি কশেরুকার দিকে চলে যাওয়া।
– কাউডা ইকুইনা সিন্ড্রোম: মেরুদণ্ডের নিচের অংশে স্নায়ুর কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়া।
– মেরুদণ্ডের ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ।
– মেরুদণ্ডে ক্যান্সার বা টিউমার।
– কিডনি সংক্রমণ বা কিডনি পাথর।
ব্যাকপেইন যন্ত্রণাদায়ক এবং এটি কাজের ক্ষমতা হ্রাস করে দেয়। তাই আপনি যদি অনেকদিন ধরে, ঘনঘন পিঠের ব্যথা অনুভব করেন তবে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করতে ভুলবেন না।
Author: Sushanta Kumar Ghosh, Physiotherapy Specialist, DIU Medical Center