Author Topic: কাচের ভেতর দিয়ে আসা রোদ থেকে কি ভিটামিন ডি পাওয়া যাবে  (Read 2180 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 363
  • Gender: Male
    • View Profile

শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য ভিটামিন ডি প্রয়োজনীয় এক উপাদান। এটি একটি ফ্যাট সলিউবল ভিটামিন, যার প্রধান কাজ অন্ত্র থেকে ক্যালসিয়াম শোষণ। পাশাপাশি এটি আয়রণ, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাসকেও দ্রবীভূত করে।

ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হলে যে ধরনের উপসর্গ দেখা যায়—

  • মাংসপেশির দুর্বলতা।
  • মাংসে ব্যথা ও কামড়ানো।
  • হাড়ে ফাটল।
  • সিঁড়ি ভাঙা, ওঠা–বসার মতো কাজ করতে অসুবিধা।
  • বিষণ্নতা।
  • উচ্চ রক্তচাপ।
  • ক্লান্তি, কাজে অমনোযোগিতা ও অতিরিক্ত ঘুম।
  • ওজন বেড়ে যাওয়া।
  • অতিরিক্ত চুল পরা।
  • শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস।
  • অস্টিওপরোসিস, জরায়ু ক্যানসার, স্তন ক্যানসার—এমনকি ডায়াবেটিস ও মেদ বৃদ্ধি প্রতিরোধে ভিটামিন ডি’র ভূমিকা আছে।
রোজ কতটুকু ভিটামিন ডি দরকার

পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ডি ও ১০০০ মাইক্রো গ্রাম ক্যালসিয়ামের চাহিদা থাকে। অন্যদিকে ৭০-এর বেশি যাঁদের বয়স, তাঁদের ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি-র পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ২০০ মাইক্রোগ্রাম।

ভিটামিন ডি’র ঘাটতি কীভাবে বুঝবেন

রক্ত পরীক্ষার সাহায্যে ভিটামিন ডি-র অভাব নির্ণয় করা যায়। দুই ধরনের পরীক্ষা রয়েছে, যা এই ঘাটতি নিশ্চিত করতে পারে। সব চেয়ে সাধারণ হলো ২৫-হাইড্রোক্সিভিটামিন ডি, যা সংক্ষেপে ২৫ (ওএইচ) ডি নামে পরিচিত।

ভিটামিন ডি-র উৎস কী

সূর্যের আলো ভিটামিন ডি-র অন্যতম প্রধান উৎস। যেহেতু সূর্যালোক থেকে সরাসরি আমাদের ত্বকে ভিটামিন ডি সংশ্লেষ হয়, তাই একে বলে সানশাইন ভিটামিন। নিয়মিত রোদে গেলে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি অনেকাংশে লাঘব হবে। ভিটামিন ডি-র অভাব পূরণের জন্য হালকা রোদে সামান্য ব্যায়ামও করতে পারেন।

সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত রোদ সবচেয়ে ভালো। এই সময়ের সূর্যের আলো ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরি করতে সবচেয়ে কার্যকর।

রোদ লাগানোর সময় গায়ের অনাবৃত অংশে সানস্ক্রিন লাগানো যাবে না। কাচের ভেতর দিয়ে আসা রোদ ভিটামিন ডি তৈরিতে কার্যকর নয়। কেবল শীতকাল নয়, সব ঋতুতেই যদি আমরা কিছুক্ষণ রোদে বসি, ১০ থেকে ১৫ মিনিট করে সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ দিন, তাহলে উপকার পাওয়া যাবে।

এ ছাড়া বিভিন্ন খাবার থেকেও কিছু ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। যেমন চিজ বা পনির, মাশরুম, তেলযুক্ত মাছ বা সামুদ্রিক মাছ, দুধ ও ডিম।

কী কী কারণে ভিটামিন ডি-র অভাব হতে পারে

  • সূর্যের আলোর সংস্পর্শে কম এলে।
  • ত্বকের রঙের জন্য ভারতীয় উপমহাদেশে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি বেশি।
  • হজমের সমস্যা থাকলে।
  • বয়সের কারণে।
  • কিডনি ও যকৃতের দীর্ঘমেয়াদি অসুখ থাকলে।
  • কিছু ওষুধের ব্যবহার।
  • ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার কম খেলে।

লেখক: ডা. নওসাবাহ্ নূর: মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, পপুলার মেডিকেল কলেজ, ঢাকা

সূত্র – প্রথম আলো