Author Topic: মেথির উপকারিতা  (Read 2676 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Lamia Tahsin Kamal Purnata

  • Newbie
  • *
  • Posts: 21
  • Gender: Female
    • View Profile
মেথির উপকারিতা
« on: February 13, 2023, 11:52:16 AM »










মেথি (methi) কি ?


মেথি বা Fenugreek যার বৈজ্ঞানিক নাম Trigonella foenum-graecum। একটি মৌসুমী গাছ যার পাতা এবং বীজ (বাদামি-হলুদ বর্ণের চারকোণা আকৃতির) উভয়ই অত্যন্ত সুন্দর উপায়ে ব্যবহৃত হয়।



মেথির ব্যবহার


মেথি যেসকল রূপে ব্যবহৃত হয়-

১. মেথিপাতার মুখরা
গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত এবং জনপ্রিয় একটি শাক হলো মেথি শাক। মেথি গাছের পাতাই মেথি শাক হিসেবে খাওয়া যায় যা অত্যন্ত উপকারী।

লোকজ, ইউনানী ও কবিরাজি চিকিৎসায় এই মেথি পাতা বা মেথি শাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২. মশলা হিসেবে মেথি
ডাল রান্নার সময় পাঁচফোড়নের ব্যবহার না করলে সে রান্নার স্বাদ যেনো অপূর্ণই থেকে যায়। আর এই পাঁচফোড়নেরই একটি উপাদান হলো মেথি।

সুস্বাদু রান্নার কথা মাথায় আসলে মেথিকে পাশে সরিয়ে রাখা অসম্ভব। অত্যাধিক পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই মেথি বীজ আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহৃত মশলা জাতীয় পণ্যের মধ্যে থাকা যেনো আবশ্যক।

৩. খাদ্য রসনায় মেথি
শুধু কি মশলা কিংবা পাঁচফোড়নেই শেষ? মোটেই নয়। মেথি বীজ আমরা সরাসরি খাদ্য হিসেবেও নিয়মিত ব্যবহার করতে পারি।

মেথি পরোটা, মেথি ভাজি, মেথি পনির, মেথির থেপলা, আলু মেথি প্রভৃতি খাদ্য অনেকেরই প্রিয়। রুটি, পরোটা, ইডলি, দোসা, প্রভৃতি খাবারে মেথি পাতা ব্যবহার করলে তা স্বাদ এবং পুষ্টিমান উভয় ক্ষেত্রেই কার্যকরী।

রাতে ভেজানো মেথি সকালে চিবিয়ে খেলে এবং মেথি ভেজানো পানি পান করার মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরকে সুরক্ষিত করা সম্ভব।
তবে এক্ষেত্রে খাওয়ার নিয়ম যথাযথভাবে মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ যা পরবর্তীতে আলোচিত রয়েছে।

৪. পথ্যের গুণাগুণ মেথিতে
পথ্য হিসেবে মেথির গুণাগুণ অপরিসীম। বেশ কিছু রোগের মুশকিল আসান কিন্তু এই মেথি।

কোন কোন রোগের মহৌষধ এই মেথি তা জানার পূর্বে এটা জেনে নেয়া প্রয়োজন যে মেথি কেনো শরীরের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ।















মেথির উপকারিতা




১. ক্যান্সার প্রতিরোধে মেথির অবদান
বর্তমান যুগে চারদিকে দূষণ, ভেজালসমৃদ্ধ খাদ্য এবং বিভিন্ন বদভ্যাসের কারণে ক্যান্সার নামক ভয়ংকর ব্যধি আমাদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে চরমভাবে।

একজন ব্যক্তি ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে সে ব্যক্তি এবং তার পরিবারের উপর দিয়ে কী ভয়াবহ পরিস্থিতি চলে সেটা শুধু তারাই জানে। তাই প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের পন্থাটাই বেশি উপযোগী। আর এই কাজে আপনার সাহায্য হতে পারে মেথি।

দেহের ভেতরের বিভিন্ন আণবিক পথগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে মেথি। বিভিন্ন সেলুলার পথগুলো যেমন জ্যাক-স্ট্যাট সিগন্যালিং, এমএপকে সিগন্যালিং প্রভৃতি পথগুলোকে ক্যান্সারের আণবিক প্রান্তগুলো বৃদ্ধি কিংবা ধ্বংস করে।আর এই পথগুলোর সঠিক নিয়ন্ত্রণ করে থাকে মেথি।

বিশেষত কোলন ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে মেথি অত্যন্ত উপযোগী। স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য মেথি ক্যান্সার প্রতিরোধী হতে পারে যদিও তাদের জিন ALK পরিবর্তনের কারণে জিনগত ক্যান্সারের ঝুঁকি রয়েছে।

কিন্তু জিন PLHH পরিবর্তনের কারণে জিনগত ক্যান্সারের ঝুঁকি থাকলে মেথি এড়িয়ে চলা আবশ্যক।

এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণের মাধ্যমে আপনি সঠিক নির্দেশনা পেতে পারেন। মেথিতে উপস্থিত ট্রাইগ্লিসারাইড এস্ট্রোজেন গ্রহণকারী মডিউলেটর হিসেবে কাজ করে। ফলে ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে ভূমিকা রাখে।
তবে ক্যান্সারের সব ক্ষেত্রে মেথির ব্যবহার কাম্য নয়। এপিরিউবসিন চিকিৎসায় প্রাথমিক সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম লিম্ফোমা ক্যান্সার যাদের তাদের জন্য মেথি অত্যন্ত উপকারী।

কিন্তু পাইনাব্লাস্টোমার কারণে কার্বোপ্ল্যাটিনের চিকিৎসা যদি করা হয় তবে মেথি ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।

মূলত ক্যান্সারের প্রকৃতি, চলমান চিকিৎসা, বয়স, লিঙ্গ, ক্যান্সারের অবস্থা সবকিছু মিলিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে মেথি গ্রহণযোগ্য কি না।

২. হজমে সাহায্যকারী মেথি
মেথি খাবার হজম করতে সাহায্য করে। এর অভ্যন্তরীণ পুষ্টিগুণ খাদ্যের বিষাক্ত পদার্থকে শরীরের উপর প্রভাব পড়া থেকে বিরত রাখে।

ফলে এটি একইসাথে খাবার হজম এবং দ্রুত শোষণে সহায়তা করে। মেথি গ্রহণে তাই শারীরিক অস্থিরতা জনিত সমস্যাও দূরীভূত হয়।

৩. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মেথি
আমরা সকলেই জানি যে ফাইবার বা আঁশ জাতীয় খাদ্য গ্রহণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীভূত হয়।

মেথিতে ফাইবার থাকায় এটি হজমে সহায়তা করে যার ফলস্বরূপ কোষ্ঠকাঠিন্য এবং পাইলস জাতীয় পীড়াদায়ক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মেথি
“আয়ু” নামক একটি জার্নালে ২০১৭ সালে মেথি এবং ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক একটি পরীক্ষামূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখানো হয় যে ৫ মাস ধরে ৬০ জন ব্যক্তিকে দুটো গ্রুপে ভাগ করে তার অর্ধেককে দেয়া হয় শুধু ডায়াবেটিস এর ঔষধ এবং বাকি অর্ধেককে ওষুধ এর পাশাপাশি মেথি বীজ খাওয়ানো হয়।

৫ মাস পর এর ফলাফলে দেখা যায় মেথি সেবনকারী ব্যক্তিদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গিয়েছে।









কিন্তু এ পরিবর্তন কীভাবে সম্ভব তার আগে জেনে নেয়া প্রয়োজন যে মেথি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কীরূপ ভূমিকা রাখে।

⇒ মেথিতে অ্যামিনো এসিডের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য।  এই অ্যামিনো এসিড রক্তে উপস্থিত গ্লুকোজ বা চিনিকে রাসায়নিকভাবে ভাঙতে সাহায্য করে এবং তা শোষিত হতে সহায়তা করে। এতে টাইপ ২ ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমে। 

⇒ মেথির অ্যামিনো এসিড ৪- হাইড্রোক্সি আইসোলিউসিন অগ্ন্যাশয় থেকে নিঃসরিত  ইনসুলিনের উৎপাদন মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং একইসাথে প্রস্রাবে গ্লুকোজের পরিমাণ কমায়।

⇒ এছাড়াও মেথির খাবার হজম এবং শোষণের গুণ থাকায় ডায়াবেটিস সহজেই নিয়ন্ত্রিত থাকে।
৫. ওজন কিংবা স্থুলতা হ্রাসে মেথি
নিয়মিত মেথি খেলে শরীরের ওজন হ্রাস করা সম্ভব। খালি পেটে মেথি খেলে তা শরীরের মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। মেথি গ্রহণ করার ফলে পরিমাণমত খাদ্য গ্রহণে পরিতৃপ্তি অনুভূত হয়।

ফলে অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের ইচ্ছে থাকে না। এতে দেহে বাড়তি খাবারের মেদ জমতে পারে না এবং ওজন হ্রাস পায়।

৬. কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
আমরা জানি কোলস্টেরল তিন ধরণের হয়ে থাকে

১. উচ্চ ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন(এইচডিএল)

২. নিম্ন ঘনত্বের লিপোপ্রোটিন(এলডিএল)

৩. ট্রাইগ্লিসারাইড

রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা অত্যাধিক হলে শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। তাই এই তিন প্রকার কোলেস্টেরল এর মাত্রা স্বাভাবিক রাখা প্রয়োজন এবং এক্ষেত্রে মেথি অত্যন্ত কার্যকরী।



⇒ এলডিএল কোলেস্টেরল আমাদের শরীরের জন্য উপকারী মনে করা হয়। মেথি লিভারে এলডিএল রিসেপ্টর গুলো বাড়িয়ে দেয়, ফলে এলডিএল শোষণের মাত্রা বেড়ে যায় তবে নিয়ন্ত্রিভাবে।

⇒ তবে অন্যান্য কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড কমাতে মেথি সাহায্য করে। মেথির বীজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে।

⇒ এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। ফলে খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। একটি পরীক্ষায় প্রমাণিত যে মেথি ১০-১৬ শতাংশ পর্যন্ত কোলেস্টেরল কমায়।

⇒ অর্থাৎ ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ানো এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে মেথি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে দেহকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

⇒ এছাড়াও মেথিতে যে ফাইবার আছে তা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়ার জন্ম দেয়। এসকল ব্যাকটেরিয়া কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
৭. হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দীর্ঘজীবনের আশা সঞ্চার করে
আমরা জানি মেথি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। হৃদরোগের অন্যতম কারণ হিসেবে কোলেস্টেরলকে দায়ী করা হয়। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে মেথির গুরুত্ব অপরিসীম।

এছাড়াও মেথিতে গ্যালাক্টোমানান এবং পটাশিয়াম রয়েছে যা রক্ত সঞ্চালনে সহযোগিতা করে। মেথিতে ভিটামিন এবং মিনারেল বেশি থাকায় তা হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।


৮. বাতের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে
মেথিতে উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণে লিনোলেনিক এবং লিনোলিক এসিড থাকে যা দেহের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। আর্থ্রাইটিস রোগের ক্ষেত্রেও এটি একটি উল্লেখযোগ্য সমাধান।

গবেষকরা ইস্ট্রোজেন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির ক্ষেত্রেও মেথির ব্যবহার উল্লেখযোগ্য বলে মনে করেন।

এভাবে বাতের যন্ত্রণাদায়ক ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।


৯. শরীরের ফোলা ভাব নিয়ন্ত্রণে
বিভিন্ন কারণে অনেক সময় আমাদের শরীর ফুলে যায় কিংবা মাংশপেশিতে ব্যথা হয়৷

সেসকল ক্ষেত্রে মেথি দানা অর্থাৎ মেথি বীজ কাপড়ে বেঁধে প্রদাহের স্থানে স্পর্শ করিয়ে রাখলে অত্যন্ত উপকারী হয়।

১০. মাসিকের ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়
ঋতুস্রাবের সময়গুলোতে একটা মেয়ে কী পরিমাণ মানসিক এবং শারীরিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যায় তা শুধু সে-ই জানে। তবে এই অসহনীয় ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব খুব সাধারণ একটি উপাদান থেকে। আর তা হলো মেথি।


ইউটেরাস বা জরায়ুতে মৃত কোষগুলো যখন বাড়তে শুরু করে তখনই এই নিদারুণ ব্যথার সৃষ্টি হয়। পিরিয়ডের সময়ে মেথি খেলে এই ব্যথা দূরীভূত হয় এবং আরাম অনুভূত হয়।

১১. মাতৃদুগ্ধ বাড়াতে সাহায্য করে মেথি
একটি শিশুর বিকাশ সম্পূর্ণ হয় যখন সে পরিপূর্ণভাবে তার মায়ের দুধ পায়। কিন্তু আজকাল বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেক মা যথেষ্ট পরিমাণ দুগ্ধ উৎপাদনে সক্ষম নন। সেই মায়েদের জন্য একটি উৎকৃষ্ট পথ্য হলো মেথি।

বেশ কিছু প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে মায়েরা খাদ্য হিসেবে কিংবা পরিপূরক হিসেবে মেথি গ্রহণ করে তারা তাদের সন্তাদের জন্য পরিপূর্ণ দুগ্ধ উৎপাদনে সক্ষম।

তবে এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া আবশ্যক।


১২. টেস্টোস্টেরন লেভেল বৃদ্ধি করে
পুরুষের যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে টেস্টোস্টেরন হরমোন নিঃসরণ প্রয়োজন। নিয়মিত মেথি খাওয়ার ফলে মস্তিষ্ক থেকে এই টেস্টোস্টেরন হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়।

১৩. রোগ প্রতিকারক মেথি
বেরিবেরি, যক্ষ্মা, হাঁচি-কাশি, মুখে ঘা, ব্রংকাইটিস, যেকোনো ধরণের ইনফেকশন, জ্বর, হার্নিয়া, পারকিনসন ডিজিজ, টাক পড়া প্রভৃতি রোগের সহজ সমাধান হলো মেথি।

এসকল রোগের ক্ষেত্রে একমাত্র ঔষধ মেথি নয়। কিন্তু অন্যান্য ওষুধের কার্যকারিতা আরও অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয় মেথি।


১৪. এসিডিটি থেকে মুক্তিদান
গ্যাস্ট্রিক বা এসিডিটি এই বিষয়টার সাথে কম বেশি আমরা সবাই পরিচিত। একটু ঝাল মশলাযুক্ত খাবার খেলেই যেনো বিপদ। আর এই বিপদের সহজ সমাধান হতে পারে।

মেথির পুষ্টিগুণের কারণে খাবার হজম প্রক্রিয়া খুব সহজেই সমাধান হয়। খাদ্য অন্ত্রে শোষিত হয়। ফলস্বরূপ এসিডিটির জ্বালাপোড়া ভাবটা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

১৫. ওভারি বা ডিম্বাশয়ের সিস্ট এর আকৃতি হ্রাস করে
মেথির এই উপকারিতাটি নিয়ে অনেকের মনেই সংশয় রয়েছে।

এ ব্যাপারে আরও গবেষণা চলছে তবে বর্তমানে গবেষকগণ এই সিদ্ধান্তটুকু পর্যন্ত উপনীত হতে পেরেছেন যে ডিম্বাশয়ের সিস্ট চিকিৎসায় অনেকাংশেই কার্যকরী এই মেথি।

সিস্ট হলো এক প্রকার টিউমার কোষের প্রথম পর্যায় যা ক্রমাগত ক্যান্সারে রূপ নেয়।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে মেথি সিস্টের আকার ক্রমাগত কমিয়ে আনে এবং ঋতুস্রাব প্রক্রিয়া সঠিক ভাবে চলতে সাহায্য করে।

১৬. আমাশয় প্রতিরোধী
আমাশয় জ্বর ঠান্ডা কাশির মতই একটি সাধারণ রোগ। অনেক সময়ই এটা নিয়ে যথেষ্ট ভোগান্তি হয় আমাদের। তাই মেথির ব্যবহারের মাধ্যমে এই বিব্রতকর এবং কষ্টদায়ক পরিস্থিতি থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি।



মেথি গুঁড়ো ঘোলের সাথে মিশিয়ে খেলে এক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়। আবার দইয়ের সাথে মেথি মিশিয়ে খেলে রক্ত আমাশয়ের প্রতিকার হয়।

১৭. সন্তান জন্মদান সহজকরণ
সন্তান জন্মদানের সময় গর্ভবতী মায়ের জরায়ুর সংকোচন-প্রসারণ সহজ করার মাধ্যমে সন্তান জন্মদান সহজতর করে৷ তবে অতিরিক্ত গ্রহণে গর্ভপাত বা অপরিণত শিশুর জন্মদানের মত সমস্যা হতে পারে।

তাই এক্ষেত্রে প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া আবশ্যক।

মেথিতে উপস্থিত  সাইটো ইস্ট্রোজেন প্রোলাকটিন নামক এক প্রকারের হরমোনের মাত্রার বৃদ্ধি ঘটায়।


১৮. কৃমি রোধ
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে মেথি চিবিয়ে খেলে বা মেথি সারারাত ভিজিয়ে রেখে সেই পানি খেলে দেহের ভেতরের বিভিন্ন রোগজীবাণু এবং কৃমি ধ্বংস হয়ে যায়।

এতক্ষণ আমরা বিভিন্ন রোগ কিংবা শরীরের অভ্যন্তরীণ অংশে মেথির উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম।











চুলের যত্নে মেথি



⇒ চুল পড়া রোধ
চুল পড়া সমস্যার সহজ উপায় হিসেবে মেথির নাম অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। মেথিতে বিদ্যমান ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি চুলের থাকা লেসিথিন নামক পদার্থকে রক্ষা করে চুল পড়া সমস্যার সমাধান করে দেয়।






⇒ চুলের বৃদ্ধি
মেথি নিয়মিত মাথায় ব্যবহার মাধ্যমে চুল পড়া সমস্যার প্রতিকার হয়।

আয়রন, প্রোটিন,পটাশিয়াম ও ভিটামিনসহ আরও পুষ্টিকর উপাদান থাকায় মেথির হেয়ার প্যাক ব্যবহারে একদিকে যেমন চুলের বৃদ্ধি হবে অন্যদিকে চুল পড়া রোধ হয় দারুণভাবে।

খুশকি সমস্যারটি আমাদের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর এবং চুলের জন্য হানিকারকও বটে। খুশকির জন্য চুল পড়া আরও ত্বরান্বিত হয়।


⇒ খুশকি প্রতিরোধ
মেথি পেস্ট গোড়া থেকে চুলকে শক্ত করে এই খুশকি প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।










⇒ চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি
রুক্ষ শুষ্ক চুল আমাদের কারই কাম্য নয়। আমাদের চুলের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধির জন্য জেলাটিন নামক একটি পদার্থের প্রয়োজন হয়। মেথির ভেতরে প্রাকৃতিক ভাবে এই পদার্থ থাকে। ফলে চুলের চাকচিক্য বৃদ্ধি পায়।


⇒ চুলের অকালপক্বতা রোধ
অল্প বয়সেই চুল পেকে বিড়ম্বনার সম্মুখীন হচ্ছেন? বিড়ম্বনা থেকে বাঁচতে বিভিন্ন কালারিং এজেন্ট এর শরণাপন্ন হতে হচ্ছে?


কিন্তু রাসায়নিক বস্তু আমাদের চুলের জন্য যে ক্ষতিকর তা তো আমরা সবাই জানি। তাই উপায় হিসেবে কালার নয়, বেছে নিন মেথি। মেথি দানার গুঁড়োতে পাওয়া মেলানিন চুলের অকালপক্বতা রোধ করতে সহায়তা করবে।
















Source: bdbasics.com