Author Topic: ত্বক চুল ও নোখের যত্নে বায়োটিন কেন দরকার - বায়োটিন ট্যাবলেট এর উপকারিতা  (Read 2151 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Lamia Tahsin Kamal Purnata

  • Newbie
  • *
  • Posts: 21
  • Gender: Female
    • View Profile
শীতকাল এসে গিয়েছে মানেই চুলে খুসকি, চুল পড়ার মতো সমস্যার বাড়বাড়ন্ত। এ ছাড়া সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চুলের রং পাল্টে যাওয়া, নখ ভঙ্গুর হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণও সকলের জীবনেই দেখা দেয় কোনও না কোনও সময়ে। এক কথায় এর সমাধান বলতে গেলে, শরীরে প্রোটিন-ভিটামিনের নিয়মিত জোগানের কথাই বলতে হয়। তবে শুধু ডায়েটই কি যথেষ্ট? না কি ত্বক-চুল ভাল রাখতে আলাদা সাপ্লিমেন্টের প্রয়োজন রয়েছে? ত্বক বা চুলের সমস্যায় আলাদা করে কোন ধরনের প্রোটিন বা ভিটামিন কার্যকর? এখানেই বিশেষ ভাবে এসে পড়ে বায়োটিনের কথা।






ভিটামিন বি পরিবারের সদস্য

বায়োটিন অর্থাৎ ভিটামিন বি সেভেন। ভিটামিন এইচ বলেও পরিচিত বি কমপ্লেক্স গ্রুপের এই ভিটামিন। দেহের বিপাকে সাহায্য করে বায়োটিন। মূলত প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাটি অ্যাসিড ও অন্যান্য উপাদান দেহে শোষণ করতে সাহায্য করে বায়োটিন। খাবার পরিপাকের সময়ে তা বিশ্লেষণ করে শক্তিতে রূপান্তরিত করতেও সাহায্য করে এই ভিটামিন। ওমেগা থ্রি-র মতো এসেনশিয়াল ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করলেও যদি শরীরে বায়োটিনের অভাব থাকে, তা শোষিত হবে না। আবার শুধু বায়োটিন সাপ্লিমেন্টও কোনও কাজে লাগে না, যতক্ষণ না তা অন্যান্য ভিটামিন ও প্রোটিনের সহযোগিতা পায়।








বায়োটিনের অভাব ও ফলাফল

বংশগত কিংবা অন্যান্য শারীরিক কারণ ছাড়া যদি চুলে অকালপক্বতা, চুল পড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়, হতে পারে তা বায়োটিনেজ় এনজ়াইম ডেফিশিয়েন্সির কারণে দেখা দিচ্ছে, জানালেন ডা. ধর। প্রোটিন থেকে বায়োটিন বিশ্লেষণ এবং রিসাইকল বাধাপ্রাপ্ত হয় এ ক্ষেত্রে।


চুল-নখ-ত্বকের বন্ধু

চুলের বৃদ্ধি, চুল মজবুত রাখায় কেরাটিনের উপযোগিতা অনেকেরই জানা। বায়োটিন এই কেরাটিনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে চুলের উপরে বায়োটিনের প্রভাব নিয়ে গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শুধু বায়োটিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণে চুলের আলাদা করে তেমন উপকার হয় না। দরকার অন্যান্য প্রোটিন-ভিটামিন-ক্যালশিয়ামের জোগানও। শুধু চুল বা ত্বক ভাল রাখতেই নয়, আমাদের স্নায়ুতন্ত্র, লিভার, কিডনির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ভিটামিন বি সেভেন, অর্থাৎ বায়োটিনের। তাই ব্যালান্সড ডায়েটের মাধ্যমে শরীরে এর জোগান জারি রাখার পরামর্শ দিলেন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট হিনা নাফিস। ‘‘ত্বক বা চুলে সমস্যা দেখা দিলেই সাধারণত আমরা এ ব্যাপারে সচেতন হতে শুরু করি। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে, কোনও ভিটামিন বা প্রোটিন ট্রিটমেন্টই একা কিছু করতে পারে না, যতক্ষণ না তাতে ভারসাম্য আসে। সিদ্ধ ডিম, দুধ, মাটন লিভারের মতো খাবারে ভিটামিন বি সেভেনের মাত্রা বেশি। ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো মরসুমি আনাজেও পাওয়া যায় তা। অয়েস্টার বা মাশরুম আমাদের রোজকার খাদ্যতালিকায় খুব বেশি থাকে না, তবে এগুলি বায়োটিনের উৎকৃষ্ট উৎস,’’ বললেন হিনা।




বেশি পরিমাণে মিষ্টি, ভাজাভুজি ও মশলাদার খাবার খেলে তার সরাসরি প্রভাব ত্বক ও চুলে পড়ে— এ কথা অনেকেরই জানা। হিনা জানালেন, এর নেপথ্য কারণ হল, বায়োটিন ও অন্যান্য কমপ্লেক্স ভিটামিন কাজ করতে পারে না এর ফলে। প্রোটিনের বিশ্লেষণও বাধা পায়। বায়োটিনের জোগান অক্ষুণ্ণ রাখতে আমন্ড, কলা, চেরির মতো ফল খাদ্যতালিকায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন হিনা।

ভিটামিন বি সেভেন বা বায়োটিন জলে দ্রাব্য। ভিটামিন সি-র মতো এটিরও কার্যক্ষমতা কমে যায় উচ্চ তাপমাত্রায়। কাঁচাও নয়, ‘ওভারকুকড’ও নয়, রান্না করতে হবে এমন উপায়ে, যাতে এর খাদ্যগুণ যথাযথ ভাবে বিশ্লেষিত হয় ও শরীর তা গ্রহণ করতে পারে।


বায়োটিনেজ় উৎসেচকের অভাবে ত্বক ও চুলের সমস্যা গুরুতর হতে শুরু করে। তখন চিকিৎসকরা সাপ্লিমেন্টের আকারে বায়োটিন গ্রহণ করতে বলেন অনেক সময়ে, মাল্টিভিটামিন ও নির্দিষ্ট ডায়েটের সঙ্গে। সাপ্লিমেন্ট সাধারণত ট্যাবলেট, ক্যাপসুল ইত্যাদি আকারে পাওয়া যায় ওষুধের দোকানে। তবে যে কোনও সাপ্লিমেন্ট একটানা না খাওয়াই ভাল। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন।

ত্বক-চুল-নখের মতো শুধু বহিরাবরণের যত্নে নয়, বায়োটিন শরীরের বন্ধু। এর উৎস ও জোগান সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকলে চেনা সমস্যারও সমাধান খুঁজে পাবেন অচিরেই।





Source: anandabazar.com