Author Topic: কখন হাসপাতালে যেতেই হবে ?  (Read 1725 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

abeerhr

  • Guest
কখন হাসপাতালে যেতেই হবে ?
« on: September 10, 2020, 02:23:40 PM »
কখন হাসপাতালে যেতেই হবে ?

রোজি করনা ভাইরাসে সংক্রমিত হচ্ছেন অনেকে, যাদের বেশিরভাগই চিকিৎসা নিচ্ছেন বাড়িতে তবে কিছু উপসর্গ বা শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত নিতে হবে হাসপাতালে।



কি উপসর্গ বা সমস্যা দেখা দিলে হাসপাতালে যেতেই হবে?

  • যদি রোগী কিছুই খেতে না পারেন আর পানিশূন্য হয়ে পড়েন, বারবার বমি হতে থাকে।
  • যদি শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
  • পালস অক্সিমিটার এ অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৩ শতাংশের নিচে নেমে এলে।
  • যদি রোগী অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শুরু করেন বা অর্ধচেতন বা অচেতন হয়ে পড়ে।
  • জীব, নখ প্রভৃতি নীলচে দেখায়।
  • বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়।

এসব ছাড়া যাদের গুরুতর অসুস্থতা আছে যেমন হার্ট ফেইলর, হূদরোগ, কিডনি অকার্যকর, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, ক্যান্সার, ক্রনিক ব্রংকাইটিস বা হাঁপানি, ফুসফুসে অন্যান্য জটিলতা (যেমন ডিপিএলডি বা ব্রংকাইটিস)। যাদের কোন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, কেমোথেরাপি বা বায়োলজি ওষুধ সেবন করেছেন এমন ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো উচিত কারণ এদের হঠাৎ জটিল হওয়ার আশঙ্কা আছে।

কোন রকম জটিলতা ছাড়াই ৮০% কোভিড-১৯ এ সংক্রমিত ব্যক্তি বাড়িতে থেকেই সেরে উঠেছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই মৃদু উপসর্গযুক্ত। কারো আবার তেমন কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। উপসর্গের তীব্রতা বিচার করে কভিড-১৯ আক্রান্ত লোকজনকে কয়েক ভাগে ভাগ করে চিহ্নিত করা যায়।
'এ' দলভুক্ত হচ্ছেন মৃদু ও মাইল্ড উপসর্গযুক্ত রোগীরা যাদের জ্বর, সামান্য গলা ব্যথা, কাশি, স্বাদ-গন্ধ হীনতা, দুর্বলতা, কারো আবার ডায়রিয়া প্রভৃতি থাকে। এদের উচিত বাড়িতে আইসোলেশন এ থাকা। অর্থাৎ পরিবারের অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখা। একটি আলাদা ঘরে থাকার সময় তিনি নিজে নিজে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। একটি থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রার রেকর্ড রাখবেন। পালস অক্সিমিটার দিয়ে শরীরে অক্সিজেনের তাপমাত্রা, অক্সিজেন সাতুরেশন দেখবেন। সম্ভব হলে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন লিখে রাখবেন। কোন সমস্যা হলে টেলিফোনে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল পুষ্টিকর খাবার খাবেন। বিশ্রাম নেবেন। যাদের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস আছে তারা নিজের রক্তচাপ ও শর্করা খেয়াল রাখবেন। ওষুধের বিষয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করবেন।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের রোগীরা দুই সপ্তাহের মধ্যেই সেরে ওঠেন তবে এর মধ্যে কিছু জটিলতা দেখা দিলে তাকে আর মৃদু বলা যাবে না তখন তিনি মাঝারি মাত্রার, গ্রুপ 'বি' বা তীব্র মাত্রার গ্রুপ 'সি' এর অন্তর্ভুক্ত হবেন। এই দুই গ্রুপের হাসপাতলে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন আছে।

অহেতুক দেরি নয়

অনেকেই হাসপাতালে যেতে অনীহা প্রকাশ করেন, অহেতুক দেরি করেন, তাদের জটিলতা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। অনেকে ভাবেন অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমলে বাড়িতে অক্সিজেন নেবেন। কিন্তু রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন পদ্ধতিতে বিভিন্ন মাত্রায় অক্সিজেন দেওয়া হয়। কারও নাসাল ক্যানুলা কারোও ব্রিদিন ব্যাগ, কারোও বাইপ্যাপ হাইফ্লো নাসাল ক্যানুলা লাগে।
কারণ নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) কারো হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিউ) সেবা লাগতে পারে। বাড়িতে বসে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব না। তাছাড়া অক্সিজেন সিলিন্ডার বাড়িতে মজুদ করলে তা থেকে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটার ঝুঁকি আছে। তাই যে রোগীর অক্সিজেন লাগবে তাকে হাসপাতালে যেতেই হবে।
আবার অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাওয়া সত্ত্বেও একজন রোগী তেমন সমস্যা নাও বোধ করতে পারেন। তিনি স্বাভাবিক চলাফেরার কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারেন। কোভিড-১৯-এ একে বলা হয় হ্যাপি হাইপোক্সিয়া, মানে রোগীর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছে কিন্তু রোগী তা বুঝতে পারছেন না। কোন শ্বাসকষ্ট হচ্ছে না। তাই পালস অক্সিমিটার দিয়ে দিনে বেশ কয়েকবার অক্সিজেন মাপার কোনো বিকল্প নেই। অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯৯ থেকে ৯৫ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করলে প্রোন পজিশন করুন। শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন। অনেকের আবার স্যাচুরেশন বেড়ে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু যদি এটি নামতেই থাকে এবং একসময় ৯২% চলে আসে তবে দ্রুত হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। আবার কারো বুকের এক্সরে সিটিস্ক্যান ফুসফুসে নিউমোনিয়া যথেষ্ট থাকার পরও বাড়িতে তেমন কোন উপসর্গ দেখা যায় না। কিন্তু এদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দরকার। ডায়াবেটিসের রোগীর রক্তের শর্করা বেশি উঠানামা করলে হাসপাতালে পর্যবেক্ষণ করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রতিদিন নিজেকে পর্যবেক্ষণ করুন, লিখে রাখুন।
কোন সমস্যা দেখা দিলে বা নতুন কোনো উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন। জরুরী অবস্থা দেখা দিলে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেরি করবেন না। কারণ ২০ শতাংশ মাঝারি বা মোডারেটর রোগীরা কয়েকদিন হাসপাতালে অক্সিজেন ও অন্যান্য সেবা পাওয়ার পর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন। আইসিইউ দরকার হয় মাত্র ৫ শতাংশ রোগীর

source: Prothom Alo