Author Topic: জানেন কি শিশুকে বাড়তি খাবার কখন দেবেন?  (Read 2527 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Mr. Rasel

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 516
  • Gender: Male
    • View Profile
পরিবারে নতুন শিশুর জন্ম হলে তাদের বাড়তি খাবার খাওয়ানোর কথা বলা হয়। অনেক নতুন মা প্রথমে বুঝতে পারেন না তার বাচ্চাকে কি খাওয়ালে ভালো   হবে। বাচ্চার  এই বাড়তি খাবার উইনিং খাবার (Weaning food) বা পরিপূরক খাবার নামে পরিচিত।’wean’ (উইন) শব্দের অর্থ এক সম্পর্ক থেকে ঐ সম্পর্কের ক্ষতি না করে অন্য সম্পর্কে যাওয়ার জন্য একটি রাস্তা । ব্যবহারিক অর্থে, আস্তে আস্তে মায়ের বুকের দুধ ছাড়ানোর জন্য বড়দের খাবারে অভ্যস্ত করানো। বাচ্চার জন্মের ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হয়। ৬ মাস থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দিতে হয়। এসময় ভাত,সবজি,মাছ,ডিম,বিভিন্ন ফল অল্প অল্প করে খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে

বাড়তি খাবার কেন দেওয়া প্রয়োজন?

একটি শিশুর ওজন জন্মের ৬ মাস পর দ্বিগুন হয় এবং ১ বছর পর তিনগুন হয়। শিশুর ৬ মাস বয়সের সময় শরীরে পুষ্টি উপাদানসমূহ যেমন আয়রন,জিংক ও তেলে দ্রবনীয় ভিটামিন (ভিটামিন এ ও ডি) এর পরিমান যেমন কমে তেমন পুষ্টিগত চাহিদাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। শুধুমাত্র মায়ের দুধ শিশুর এই বাড়তি চাহিদাটি পূরন করতে পারে না। এই সময়ের বাড়তি চাহিদা যদি পূরন করা না যায় তাহলে শিশু অপুষ্টিতে ভোগে,সহজে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে ,ওজন বৃদ্ধি সঠিক হয় না। তাই দৈহিক বর্ধন এবং সঠিক মানসিক বিকাশের জন্য ৬ মাস বয়স থেকে বাড়তি খাবার দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

কখন বাড়তি খাবার দেওয়া শুরু করা যাবে?

একটি শিশুর বয়স ৬ মাস হলেই তাকে বাড়তি খাবার দেওয়া যায়। FSAI (The Food Safety Authority of Ireland)থেকে বলা হয়েছে, শিশুর বয়স ৬ মাসের কাছাকাছি হলে বাড়তি খাবার খাওয়ানো শুরু করা যায় তবে ১৭ সপ্তাহের আগে নয়।প্রতিটি শিশুর পুষ্টিগত চাহিদা অনুযায়ী বাড়তি খাবার কখন দিতে হবে তা নির্ভর করে।এর বাইরেও একটি শিশুর কিছু চিহ্ন আছে যা দেখে বোঝা যাবে তারা বাড়তি খাবার খাওয়ার জন্য তৈরি কিনা। যেমন-
১. বুকের দুধ খাওয়ার পরও যদি বাচ্চার ক্ষুধা থাকে
২. তাদের বসালে মাথা সোজা করে যদি শরীরের ভার রাখতে পারে
৩.কেউ তাদের সামনে খেতে থাকলে যদি মুখ হা করে এবং চাবানোর চেষ্টা করে।

কি ধরনের খাবার দেওয়া যায়?
৬ মাস বয়সের পর একটি শিশুকে তার দৈহিক চাহিদা অনুযায়ী যেকোন খাবারই দেওয়া যায়।তবে খাবার অবশ্যই নরম,পাতলা ও হজমযোগ্য হতে হবে।যেসব খাবার শিশুকে দেওয়া যেতে পারে-

   স্টার্চজাতীয় খাবার যেমন ভাত,পাউরুটি, আলু,মিষ্টি আলু,নুডুলস ইত্যাদি নরম করে, মন্ড তৈরি করে খাওয়াতে হবে।
   মাছ,মাংস নরম করে রান্না করতে হবে। মাংসের হাড়, মাছের কাঁটা ফেলে দিতে হবে যাতে বাচ্চার খেতে সুবিধা হয়।
   ডিম সিদ্ধ করে খাওয়ানো যায়,তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে বেশি শক্ত না হয়ে যায়।
   দুধজাতীয় খাবার যেমন দই,মাখন দেওয়া যেতে পারে। ভাতের সাথে দুধ মিশিয়ে পায়েস বানিয়ে খাওয়ানো যায়।
   ভাতের সাথে ডাল,সবজি মিশিয়ে নরম করে খিচুড়ি বানিয়ে খাওয়ানো যায়।
   ফল ছোট ছোট টুকরা করে নরম মন্ড এবং ফলের রস তৈরি করে খাওয়ানো যায়।

নিজে যা খাবেন তা থেকেই বাচ্চাকে খাওয়াবার অভ্যাস করুন তাহলে আপনার সন্তান আপনার মতো করে খেতে অভ্যস্ত হবে। খাওয়ানোর সময় অবশ্যই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নীতি মেনে চলুন। ভালোভাবে হাত ধুয়েছেন কিনা ,তার পাশাপাশি পরিষ্কার পাত্রে খাবার খাওয়াচ্ছেন কিনা তা লক্ষ্য রাখুন।

Source: pushtibarta