Author Topic: আপনার কি রাতের একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুম ভেঙে যায়? এমনটা কিন্তু অনেকের বেলাতেই ঘটে।  (Read 2421 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Rasel Ali

  • Administrator
  • Full Member
  • *****
  • Posts: 242
  • Gender: Male
  • Trust Your Strength It Will take U Toward Success
    • View Profile
    • Daffodil Hospital
ঘরটি অন্ধকার। কিন্তু আপনি বুঝতে পারছেন, ঘড়িতে ঠিক একই সময়। এর আগের রাতেও এমনটা হয়েছিল। তার আগের রাতেও। একই রকম দৃশ্য। কী ঘটছে আসলে? হঠাৎ কেন রাতের এই অদ্ভুত সময়ে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে?

আসলে রাতে ঘুমের মাঝখানে জেগে ওঠা এবং আবার ঘুমের জন্য রীতিমতো একটি যুদ্ধ করা কিন্তু স্বাস্থ্যের জন্য তেমন ভালো বিষয় নয়। এতে পরের দিনের কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে অসুবিধা হয়, শরীর হয়ে পড়ে অবসন্ন, অচল। আসলে শরীর ভালো রাখার জন্য যে পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন, এটা তো কারো অজানা নয়।

রাতের একটি নির্দিষ্ট সময় ঘুম থেকে জেগে ওঠার অর্থ হলো, শরীরের ভেতর কিছু ঘটছে। ঘুমের মধ্যে শরীরে অনেক কিছু ঘটতে থাকে। শরীর তখনো তার কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। যখন মস্তিষ্ক তন্দ্রার মধ্যে থাকে, শরীর টিস্যুকে পুনর্গঠন করে, হরমোন নিঃসরণ করে এবং পেশির বৃদ্ধি ঘটে।

শত বছর আগের চীনাদের প্রাচীন ফ্যাং সুই তত্ত্বমতে, প্রতিদিন রাতে ঠিক একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম ভেঙে যাওয়ার অর্থ হলো, আপনার শরীর আপনাকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্গ সম্পর্কে সংকেত দিচ্ছে। এ তত্ত্বটি শরীরের অংশ ও আবেগের সঙ্গে সম্পর্কিত।

অভ্যন্তরীণ ঘড়ি কী?

প্রত্যেকের শরীরেই একটি অভ্যন্তরীণ ঘড়ি থাকে। এ ঘড়ি জেগে ওঠা ও ঘুমের সঙ্গে সম্পর্কিত। আসলে একেকজনের ঘুমানোর অভ্যাস একেক রকম। বয়সের সঙ্গেও এর তারতম্য রয়েছে। প্রবীণ হলে অনেকেরই খুব বেশি ঘুমের প্রয়োজন পড়ে না।

ফ্যাং সুই তত্ত্বমতে, দিনের নির্দিষ্ট কয়েক ঘণ্টা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হয়। তাই প্রতি রাতে ঠিক নির্দিষ্ট একটি সময়ে ঘুম ভেঙে ওঠা শরীরের একটি অঙ্গের বিষয়ে বিশেষ নির্দেশ করে। এর সঙ্গে আবেগেও যুক্ত থাকে।

ঘুম কেন জরুরি?

আমরা দিনের এক-তৃতীয়াংশ সময় ঘুমের জন্য ব্যয় করি। তবে বিষয়টি অপ্রয়োজনীয় নয়। বেঁচে থাকার জন্য ঘুম জরুরি।

ঘুমের সময় আমাদের দেহ টিস্যুগুলো পুনর্গঠন করে, হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং পরবর্তী দিন নিজেকে সক্ষম রাখার জন্য শক্তি তৈরি করে। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি।

তাহলে ঘুম কেন রাতের এই অদ্ভুত সময়ে ভেঙে যায়? এর কারণ অনেকটা এ রকম হতে পারে।

রাতের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি

রাত ৯টা থেকে ১১টা : থাইরয়েড

রাতের এই সময় ঘুম ভাঙার অর্থ হলো, হয়তো আপনার থাইরয়েড সক্রিয় হচ্ছে।

ঘুমের প্রথম দিকে আমাদের এনডোক্রাইন হরমোন পুনরায় ভারসাম্য তৈরি করে। তাই এ সময় জাগা মানে কিছু একটা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

রাতে ঘুমের শুরুর দিকে সমস্যা হলে ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়। অ্যাডরেনাল গ্রন্থি এই লড়াইয়ের জন্য দায়ী। রাতের এই সময়ে ঘুম ভাঙার মানে কিছু বিষয় সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

রাত ১১টা থেকে রাত ১টা : পিত্তথলি

পিত্তথলি বাইল বা পিত্তরস উৎপাদন করে। এটি হজম ও শোষণের জন্য জরুরি। এই সময় ঘুম ভেঙে ওঠা মানে পিত্তথলিতে কোনো সমস্যা হওয়া।

রাত ১টা থেকে রাত ৩টা : লিভার

এই সময়টাতে শরীর রক্ত ও টিস্যু থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে। লিভার থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। এই সময়টি লিভারের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই সময় ঘুম ভাঙা মানে শরীরে কোনো সমস্যা হচ্ছে।

রাত ৩টা থেকে রাত ৫টা : ফুসফুস

এই সময়ে রক্ত ও অক্সিজেন পেশিতে পাম্প হয়। কোষের অক্সিজেন পৌঁছায়। এই সময়টি ফুসফুসের সঙ্গে যুক্ত। চীনা তত্ত্বমতে, ফুসফুস অনুভব ও দুঃখের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ভোর ৫টা থেকে সকাল ৭টা : বৃহদান্ত্র

লিভারের মতো বৃহদান্ত্রও শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। এটি শেষ জায়গা অপ্রয়োজনীয় খাবারগুলো জমা হওয়ার জন্য। মজার হলেও সত্য, সাধারণত এ সময়টায় টয়লেটে যাওয়ার জন্য ঘুম ভাঙে। এর মানে বৃহদান্ত্রে কিছু ঘটছে।

দিনের বেলার অভ্যন্তরীণ ঘড়ি

সকাল ৭টা থেকে সকাল ১১টা : পাকস্থলী ও প্লীহা

রাতের মতো দিনেও অভ্যন্তরীণ ঘড়ি কাজ করতে থাকে। শক্তি কম হওয়া, উদ্বেগ, অস্বস্তিও বিভিন্ন অঙ্গ ও আবেগের সঙ্গে সম্পর্কিত।

উদাহরণস্বরূপ, সকাল ৭টা থেকে সকাল ১১টা পাকস্থলী ও প্লীহার সঙ্গে যুক্ত। এ সময় শরীর নতুন দিন শুরু করতে যায়। তাই সকালের নাশতা এত গুরুত্বপূর্ণ।

সকাল ১১টা দুপুর ৩টা : হৃৎপিণ্ড ও ক্ষুদ্রান্ত্র

চীনা তত্ত্বমতে, সকালের শেষে এবং বিকেলের শুরুতে হৃৎপিণ্ড ও ক্ষুদ্রান্ত্রের ভূমিকা শুরু হয়। এগুলো যোগাযোগ ও সম্পর্ককে ব্যবস্থাপনা করে। এ সময় ক্ষুধামান্দ্য হলে কিছু খেয়ে নিন, যাতে পুনরায় শক্তি পাওয়া যায়।

বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা : কিডনি ও ব্লাডার

বিকেলের শেষে এবং সন্ধ্যার শুরুতে ক্লান্ত বোধ হয়। এই সময়টি কিডনি ও ব্লাডারের সঙ্গে যুক্ত।

অভ্যন্তরীণ ঘড়ির সঙ্গে কীভাবে শরীরকে সমন্বয় করবেন?

মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে দিনের বেলা ক্লান্তিবোধ হয়, বিভিন্ন অপ্রীতিকর শারীরিক সমস্যা তৈরি হয়।

এগুলোর সঙ্গে খাদ্যাভ্যাস, দৈনন্দিন অভ্যাস, সম্পর্ক ও মানসিক চাপ ইত্যাদি জড়িত। তাই মূল সমস্যাটি কোথায়, সেটি বের করে এর সমাধান করুন। এতে হয়তো ঘুম ভালো হবে।

এমনকি খারাপ ম্যাট্রেসের কারণেও ঘুম নষ্ট হয়। অবশ্য অন্যান্য সমস্যার কারণেও ঘুমের ক্ষতি হয়। তাই মাঝরাতে প্রায়ই ঘুম ভেঙে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

Source: Health Tips
BR
Rasel Ali