মনকে সুস্থ ও সুস্থির রাখার প্রক্রিয়া হিসেবে অন্যতম এক মাধ্যম মেডিটেশন যা মন সুস্থ রাখার সাথে সাথে শারীরিক ফিটনেস বজায় রাখতেও সমানভাবে কার্যকরী। যারা মেডিটেশন করতে চান তাদের বেশিরভাগেরই ধারণা থাকে এতো বেশি সময় ধরে কী করে কোন কিছু না ভেবে একইভাবে বসে থাকা যায়। সেই সাথে কী করে শুরু করবেন, কী উপকার পাওয়া যায় তা নিয়েও রয়েছে অনেক প্রশ্ন।
মেডিটেশনের রকমভেদমেডিটেশনের বিভিন্ন পদ্ধতি, কার্যকারিতার উপর ভিত্তি করে একে বেশ কিছু ভিন্নতায় ভাগ করা যায়। নিজেদের সময়, সক্ষমতা, প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে বেছে নিতে পারেন আপনার জন্য উপযোগী মেডিটেশনের পদ্ধতিটি।
১. কনসেন্ট্রেশন মেডিটেশন (Concentration meditation)এই ধরনের মেডিটেশনের মূল ফোকাস থাকবে একটি নির্দিষ্ট পয়েন্ট এর উপর। এমন হতে পারে আপনি শুধুমাত্র আপনার নিঃশ্বাস এর উপর লক্ষ্য রাখছেন কিংবা একটি নির্দিষ্ট শব্দ কিংবা মন্ত্র একাধারে পাঠ করছেন অথবা কোন নির্দিষ্ট বস্তুর দিকে নিবিষ্টচিত্তে তাকিয়ে আছেন। মনকে নিবিষ্টচিত্তে একদিকে রাখার কঠিন হলেও শুরুতে অল্প কিছুক্ষণ করে পরে ধীরে ধীরে সময় বাড়ালে ভালো উপকার পাওয়া যেতে পারে। এই ধরনের মেডিটেশনের ফলে মন অনেক সুস্থির হয়, মনোযোগশক্তিও বেশ বৃদ্ধি পায়।
২. মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন (Mindfulness meditation)এই ধরনের মেডিটেশন টেকনিক আপনাকে কোন নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে একেবারে ভেতর থেকে ভাবতে শেখায়, বুঝতে সাহায্য করে। মনের দোটানা, মানসিক অশান্তি দূর করতে সাহায্য করে। খারাপ-ভালো সবকিছু নিয়ে ভেতর থেকে বুঝতে, সিদ্ধান্ত নিতে দারুণ ভূমিকা রাখে মেডিটেশনের এই ধরনটি।
৩. অন্যান্য মেডিটেশন টেকনিকএছাড়াও নিজের মতো করে সময় কাটানো, পছন্দের কাজটি করা, কিছু নিয়ে ভাবা, ধর্মীয় প্রার্থনা এসব কিছুও অনেক সময় মেডিটেশনের পর্যায়ে পড়ে।
মেডিটেশনের উপকারিতামেডিটেশন সবসময়ই শরীর ও মনের জন্য সমানভাবে উপকারী। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উপকারিতা গুলো হলো-
• রক্তচাপের সঠিক মাত্রা
• সঠিক হৃদস্পন্দন
• কম ঘাম হওয়া
• সঠিক শ্বাস-প্রশ্বাসের মাত্রা
• উত্তেজনা কমায়
• মনের গভীর থেকে আরাম ও মানসিক প্রশান্তি অনুভব
মেডিটেশন শুরু করার পদ্ধতিচারধাপে সহজেই মেডিটেশন শুরু করতে পারেন যে কেউ। ধাপগুলো এমন-
১. নিজের সুবিধামতো শান্ত কোন স্থানে বসুন। যদি সবসময় মেডিটেশন করার ইচ্ছে থাকে তবে কিনে ফেলতে পারেন মেডিটেশন চেয়ার।
২. চোখ বন্ধ করে মেডিটেশন
৩. জোর করে নিঃশ্বাস আটকে রাখতে চেষ্টা করবেন না। বরং স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালিয়ে যান।
৪. নিজের শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে গাঢ় মনোযোগ দিন এবং খেয়াল করুন প্রত্যেকবার শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে কী করে আপনার শরীর কাজ করছে, পেট ও বুক কী করে উঠা নামা করছে। আপনার বুকের এবং কাঁধের গতিবিধির দিকে নজর দিন। এরপর আবার ধীরে ধীরে ফোকাস করুন শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে। তবে জোর করে নিঃশ্বাস আটকে রাখার কাজটি করবেন না।
প্রথম প্রথম এভাবে তিন-চার মিনিট করে শুরু করে পরে ধীরে ধীরে সময়টা বাড়ান। দেখবেন একসময় মনের ভেতর থেকে এক ধরনের আত্মিক প্রশান্তি অনুভব করছেন।