ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে করনীয়রক্তে স্বাভাবিকের চেয়ে শর্করা র্ক র মাত্রা বেড়ে গেলে একে মেডিকেলীয় ভাষায় হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলে। এই আর্টিকেলে আমরা
আলোচনা করব “ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে করনীয়” যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের হাইপারগ্লাইসেমিয়াতে ভোগার পেছনে বেশ
কিছু কারণ কাজ করে থাকে, যার মধ্যে আছে আপনি খাবারে কি খাচ্ছেন, আপনি সক্রিয় জীবনযাপন করেন কিনা, অসুস্থতা, নন
ডায়াবেটিক ওষুধপাতি, শর্করা র্ক র মাত্রা কমায় এমন নির্দেশিত ড্রাগ ঠিকভাবে গ্রহণ না করা ইত্যাদি।
হাইপারগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসা করা গুরুত্বপূর্ণ,র্ণকারণ যদি সঠিক চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এই অবস্থাটি গুরুতর হয়ে উঠতে পারে
এবং ধীরে ধীরে ডায়াবেটিক কোমার মতো নানা জটিলতার দিকেও ধাবিত হতে পারে। দীর্ঘমের্ঘ য়াদে, ক্রমাগত হাইপারগ্লাইসেমিয়াতে
ভোগা, গুরুতর না হলেও, আপনার চো খ, কিডনি, স্নায়ুএবং হৃদপিন্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, এমন নানাবিধ জটিলতার সৃষ্টিসৃ করতে পারে।
লক্ষণ ও উপসর্গরক্তে শর্করা র্ক র মান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধিবৃ না হওয়া পর্যন্তর্য এর তেমন কোন লক্ষণ ও উপসর্গ দের্গ খা দেয় না–সাধারণত ১৮০ থেকে ২০০
মিলিগ্রাম প্রতি ডেসিলিটারে বা ১০ থেকে ১১.১ মিলিমোলস প্রতি লিটারে।
হাইপারগ্লাইসেমিয়ায় লক্ষণ ও উপসর্গগুর্গ লো কয়েক দিন বা সপ্তাহে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে। রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রা যত বেশি থাকে,
উপসর্গগুর্গ লো তত বেশি গুরুতর হয়। আবার অনেক সময়, যাদের দীর্ঘসমর্ঘ য় ধরে টাইপ ২ ডায়াবেটিক আছে, তাদের রক্তে শর্করা র্ক র
মাত্রা বেড়ে গেলেও তেমন কোন লক্ষণ ও উপসর্গ দের্গ খা যায় না।
প্রাথমিক লক্ষণ ও উপসর্গেরর্গে মধ্যেআছে
* ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
* তৃষ্ণা বেড়ে যাওয়া
* ঝাপসা দৃষ্টি
* ক্লান্তি
* মাথাব্যথা
যদি হাইপারগ্লাইসেমিয়া দীর্ঘদির্ঘ ন চিকিৎসাবিহীন থাকে, তবে এটি আপনার রক্ত ও প্রস্রাবে বিষাক্ত অম্লীয় পদার্থ কির্থ টোন তৈরী করে। এই
অবস্থার নাম কিটোঅ্যাসিডোসিস। এর লক্ষণ ও উপসর্গেরর্গে মধ্যে আছে:
* ফলের গন্ধযুক্ত শ্বাস
* বমি বমি ভাব হওয়া
* বমি করা
* মুখে শুষ্কতা অনুভব করা
* শরীরে দুর্বলর্বতা অনুভব করা
* বিভ্রান্তি
* পেটে ব্যথা
* কোমা ইত্যাদি
কারা হাইপারগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকিতেআছেন?* পর্যাপ্তর্যা ইনসুলিন বা ওরাল ডায়াবেটিস ওষুধ ব্যবহার না করা
* সঠিকভাবে ইনসুলিনের ইনজেকশন গ্রহণ না করা
* মেয়াদ উত্তীর্ণইনর্ণ সুলিন ব্যবহার করা
* ডায়াবেটিস এর জন্য নির্ধা রির্ধা ত খাদ্যগ্রহণের পরিকল্পনা অনুসরণ না করা
* কোন অসুস্থতা বা সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়া
* স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করা
* আহত হওয়া বা অস্ত্রোপচার হয়েছে
* মানসিক চাপে থাকা (পারিবারিক দ্বন্দ্ব বা কর্মক্ষের্ম ত্রের পরিস্থিতি)
শারীরিক অসুস্থতা বা স্ট্রেস হাইপারগ্লাইসেমিয়াকে ট্রিগার করতে পারে। অসুস্থতা বা মানসিক চাপের সাথে লড়াই করার জন্য যেসব
হরমোন উৎপাদিত হয়, সেগুলো রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রা বৃদ্ধিবৃ করতে পারে। গুরুতর অসুস্থতার সময়ে যাদের ডায়াবেটিস নেই, তাদেরও
ক্ষণস্থায়ী হাইপারগ্লাইসেমিয়া হতে পারে । কিন্তু যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের শারীরিক অসুস্থতা বা মানসিক চাপের সময় রক্তে
শর্করা র্ক র মাত্রা স্বাভাবিকের কাছাকাছি রাখতে অতিরিক্ত ডায়াবেটিস এর ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে করনীয় কী?যখন আপনি ডায়াবেটিস এর সাথে বসবাস করছেন, তখন সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে ধারণা থাকলেও সেগুলো
নিয়মিত মেনে চলা অনেক সময় কঠিন হয়ে যেতে পারে। ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে আপনার করণীয় সম্পর্কে সংক্ষেপে নিচে
আলোকপাত করা হলো:
১. খাদ্যআপনার ডায়াবেটিস থাকুক বা না থাকুক, পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মূল ভিত্তি। কিন্তু যদি আপনার ডায়াবেটিস
থাকে, তাহলে আপনাকে জানতে হবে কোন কোন খাবার আপনার শক্তে শর্করা র্ক র মাত্রাকে প্রভাবিত করছে।
* কার্বো হা র্বো ইড্রেট গণনা এবং খাবারের পো রশন সম্পর্কে জানুন–অনেক ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার একটি চাবিকাঠি হলো
কীভাবে কার্বো হা র্বো ইড্রেট গণনা করতে হয়, তা শেখা। প্রায়শ, কার্বো হা র্বো ইড্রেটই রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রার উপর সবচেয়ে বড় প্রভাব ফেলে।
যারা খাবার গ্রহণের সময় ইনসুলিন গ্রহণ করেন, তাদের জন্য খাবারে কার্বো হা র্বো ইড্রেট এর সংখ্যা জানাটা গুরুত্বপূর্ণ,র্ণযাতে আপনি
সঠিক ইনসুলিন ডোজ পান।
প্রতিটি খাদ্য প্রকরণের জন্য কোন অংশের আকার (পোরশন) উপযুক্ত, তা জানুন। আপনি যে খাবারগুলো প্রায়ই খেয়ে থাকেন, তার
জন্য উপযুক্ত পোরশন বা অংশগুলো লিখে আপনার খাদ্য গ্রহণের পরিকল্পনাকে সহজ করুন। সঠিক অংশের আকারের পাশাপাশি
কার্বো হা র্বো ইড্রেট গণনা নিশ্চিত করতে পরিমাপক কাপ বা স্কেল ব্যবহার করতে পারেন। প্রয়োজনে একজন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট
এর পরামর্শ নিন।
* প্রতিটি খাবার সুষম করুন। যতটা সম্ভব, প্রতিটি খাবারের জন্য স্টার্চ, ফল, সবজি, প্রোটিন এবং চর্বিগুর্বি লির একটি ভালো সংমিশ্রণের
পরিকল্পনা করুন। আপনি যে ধরণের কার্বো হা র্বো ইড্রেট বেছে নিচ্ছেন, সেগুলোর পুষ্টিমান সম্পর্কে ধারণা নিন।
বেশ কিছু কার্বো হা র্বো ইড্রেট যেমন: ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য, অন্যান্য উৎস থেকে ভালো। এই খাবারগুলিতে কার্বো হা র্বো ইড্রেট কম
এবং ফাইবার বেশি মাত্রায় উপস্থিত, যা আপনার রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে।
* আপনার খাবার ও ওষুধ সমন্বয় করুন। আপনার ডায়াবেটিস ওষুধের অনুপাতে খুব কম খাবার, বিশেষ করে ইনসুলিন–
বিপদজনকভাবে রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। এই কন্ডিশনটির নাম হাইপোগ্লাইসেমিয়া। আবার বেশি খাদ্য গ্রহণে রক্তে
শর্করা র্ক র মাত্রা বৃদ্ধিবৃ পেয়ে হাইপারগ্লাইসেমিয়া ঘটাতে পারে।
একজন ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিস্ট এর সাথে কথা বলে আপনার খাবার ও ওষুধের সময়সূচী কীভাবে সর্বোত্তম সমন্বয় করা যায়, সে
ব্যাপারে জেনে নিন।
* চিনি–মিষ্টিজাতী য় পানীয় এড়িয়ে চলুন। চিনিসমৃদ্ধমৃ পানীয়গুলোতে উচ্চমাত্রায় ক্যালরি থাকে এবং সামান্য পুষ্টি
সরবরাহ করে। তাই ডায়াবেটিস রোগী দের এই ধরণের পানীয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
ব্যতিক্রম হলো, যদি আপনি রক্তে কম শর্করার্কর মাত্রা অনুভব করেন। চিনিসমৃদ্ধমৃ পানীয়গুলো যেমন: সোডা, জুসজু এবং স্পোর্টস
ড্রিংকস গুলো খুব দ্রুত রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রা বৃদ্ধিবৃ র জন্য কার্যকর্যরী।
২. ব্যায়ামশারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অং র্ণ শ। আপনি যখন ব্যায়াম করেন, তখন আপনার
পেশিগুলো শক্তির জন্য গ্লুকোজ ব্যবহার করে। নিয়মিত ব্যায়াম করে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকলে আপনার শরীর সঠিকভাবে
ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারবে।
* ব্যায়ামের পরিকল্পনা সম্পর্কে একজন ক্লিনিক্যাল ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক এর সাথে কথা বলুন। তিনি আপনার অবস্থা বুঝে
উপযুক্ত ব্যায়াম নির্ধা রণর্ধা করবেন।
* ব্যায়ামের সময়সূচী রাখুন। আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী দিনের সেরা সময় সম্পর্কে জানতে ফিজিওথেরাপিস্ট এর সাথে কথা
বলুন যাতে আপনার ওয়ার্ক আউট রুটি ন আপনার খাবার ও ওষুধের সময়সূচীর সাথে সমন্বয় হয়।
* আপনার রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রা পরীক্ষা করুন। ব্যায়ামের আগে, চলাকালীন এবং ব্যায়ামের পরে আপনার রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রা পরীক্ষা
করতে হবে, বিশেষ করে যদি আপনি ইনসুলিন বা ওষুধ গ্রহণ করেন।
* প্রচুর পানি পান করুন।
৩. ওষুধযখন ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায় ডায়েট আর ব্যায়াম যথেষ্ট নয়, তখন ইনসুলিন ও অন্যান্য ডায়াবেটিসের ওষুধগুলো আপনার রক্তে
শর্করা র্ক র মাত্রা কমানোর জন্যই ডিজাইন করা হয়েছে। কিন্তু এই ওষুধের কার্যকা র্য রিতা ডোজের সময় ও আকারের উপর নির্ভরর্ভ করে।
ডায়াবেটিস ব্যতীত অন্যান্য অবস্থার জন্য আপনি যে ওষুধ খান, তাও রক্তে শর্করা র্ক র মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে।
* ইনসুলিন সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন।
* আপনার শারীরিক সমস্যার যথাযথ রি পোর্ট ডাক্তারের কাছে পেশ করুন।
* নতুন ওষুধ গ্রহণের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।
৪.অসুস্থতা* সময়ের আগেই পরিকল্পনা করুন।
* আপনার ডায়াবেটিস এর জন্য নির্ধা রির্ধারিত ওষুধগুলো খাওয়া চালিয়ে যান।
* আপনার ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার জন্য নির্ধা রির্ধা ত খাদ্য পরিকল্পনার মধ্যে থাকুন।
* প্রচুর পানি ও অন্যান্য তরল জাতীয় খা বার খান।
৫. ঋতুস্রাব এবং মেনোপজ
৬. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি।