ঘাড় ব্যথার কারণ ও প্রতিকার সমূহঃ জীবনে একবারও ঘাড় ব্যথায় কষ্ট পান নি এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। এই সমস্যা অধিকাংশ সময়ে হঠাৎ করেই শুরু হয়। ঘাড় ব্যথা দূর করতে এর কারণ ও প্রতিকার জানা একান্ত জরুরী।
ঘাড় ব্যাথা কেন হয় এই বিষয়টি আমরা অনেকেই হয়তোবা জানিনা। তাই আসুন এই সমস্যার সম্ভাব্য কারণ সমূহ জেনে নেই।
- আমরা অনেক সময় মনের ভুলেই দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজের (যেমনঃ কম্পিউটারের কাজ, টিভি দেখা, পড়াশুনা করা, বাড়ির অন্যান্য কাজ) সময় ঘাড় অস্বাভাবিক ভাবে বাঁকা করে রাখি। ভুল ভঙ্গির কারণে ঘাড়ের উপর চাপ পড়ে এবং ঘাড়ে ব্যথা হয়।
- ঘাড়ের মাংসপেশি কোনো কারণে শক্ত হয়ে গেলে ঘাড় একদিকে কাত হয়ে যায়। এই কারণে ঘাড়ে ব্যথা অনুভূত হয়।
- ঘাড়ে কোনো কারণে অতিরিক্ত চাপ পড়ে তাহলে মাংসপেশি আংশিক ছিঁড়ে যায়। এর ফলে ঘাড়ে ব্যথা হয়।
- ঘাড়ে যদি অতিরিক্ত হাড় থাকে তাহলে ঘাড়ের রক্তনালী ও স্নায়ুতে চাপ পড়ে এবং ব্যথা হয়।
- বয়স্ক পুরুষ বা নারী ও মেনোপজের পরে মহিলাদের হাড় ক্ষয় হতে থাকে। এসময় ক্যালসিয়ামের পরিমাণও কমে যায়। এজন্য শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড়ে ব্যথা অনুভূত হয়।
- উচ্চ রক্তচাপ ঘাড় ব্যথার একটি অন্যতম কারণ। চোখের বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও ঘাড় ব্যথা হয়।
- ভারী কোনো কিছু উঁচু করলে ঘাড়ে টান পড়ে। এতে করে এই সমস্যা দেখা দেয়।
- ঘাড় ব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ হল শরীরের অতিরিক্ত ওজন। মানসিক চাপের কারণেও হতে পারে ঘাড় ব্যথা।
ঘাড় ব্যথা প্রতিকারে কিছু বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা যেতে পারে:- শক্ত সমান বিছানায় ঘুমাতে হবে।
- ঘুমানোর সময় ঘাড়ের নিচে বালিশ দিতে হবে।
- দরকার হলে বালিশ নিচে টেনে নামিয়ে ঘাড়ের নিচে নিতে হবে।
- কাজের জায়গায় চেয়ার টেবিল এমন ভাবে রাখবেন যাতে ঘাড় সামনে না ঝুকিয়ে কাজ করতে না হয়।
- ব্যথা বেশি হলে ঘাড়ে হালকা গরম সেক দিতে পারেন।
- এসময় ঘাড়ের ব্যয়াম বেশ আরাম দেবে।
- ব্যথা এক সপ্তাহের বেশি থাকলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ঘাড় ব্যথা প্রতিরোধে নিম্নলিখিত পদ্ধতি সমূহ অনুসরন করা যেতে পারে:- সামনের দিকে ঝুঁকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করবেন না। কাজের মাঝে কিছু সময় বিশ্রাম নিন।
- যারা কম্পিউটারে কাজ করেন তাদের কম্পিউটারের মনিটর চোখের লেভেল অনুযায়ী রাখুন।
- শোয়ার সময় এক সাইজের বালিশ ব্যবহার করুন, যার অর্ধেকটুকু মাথা ও বাকি অর্ধেকটুকু ঘাড়ের দিকে থাকবে।
- ঘাড়ের মাংসপেশির স্বাভাবিকতা ঠিক রাখার জন্য ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করুন।
- দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে এবং প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
ঘাড় ব্যথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তি কোনো কাজই ঠিকভাবে করতে পারেন না। তাই ঘাড় ব্যথা প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়।