দাঁত স্কেলিং এর উপকারিতা আমাদের শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে দাঁত। বর্তমান মানুষের দাঁত নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। দাঁত সুন্দর থাকলে সেই দাঁতের জন্য সুন্দর হাসি দিয়ে মানুষের মন জয় করা খুবই সহজ হয়ে উঠতে পারে কিন্তু দাঁত না থাকলে জীবন টা বেসাদ হয়ে পড়বে। আমাদের কিছু অযত্ন ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে নিজের হাসি দিয়ে মানুষকে খুশি করার ইচ্ছাটা পূরণ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। হাসি দিলেও সে হাসি সুন্দর বা মধুর হয়ে থাকে না।
বিশেষ করে দাঁত স্কেলিং করা নিয়ে অনেকেই সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানেন না তাই অবশ্যই স্কেলিং এর প্রত্যেকটা জেনে তারপর সঠিক সময়ে সঠিক উপায়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দাঁতের চিকিৎসা করতে হবে। ঠিক মতো যত্ন না নিলে দাঁত এর গায়ে এক ধরনের ময়লা বা জীবাণু জন্মায় তার নাম ডেন্টাল প্লাক। এই ময়লা দূর করার জন্য ব্রাশ ব্যবহার করে লাভ নেই কারণ ব্রাশ করে এটি তোলা সম্ভব নয়। এই জন্যই দাঁতের স্কেলিং করা খুব জরুরী।
আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছে যে যারা স্কেলিং সম্পর্কে ভুল ধারণা তারা মনে করেন করলে দাঁতের ক্ষতি হয়ে থাকে এবং অনেকেই ভাবে স্পেলিং করলে দাঁত পাতলা হয়ে যায়। আসলে দাঁতের স্কেলিং করলে কোন ক্ষতি হয় না বা দাঁত পাতলা হয়ে যায় না। স্কেলিং করলে দাঁত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হয় এবং মুখ থেকে দুর্গন্ধ দূর হয়। বর্তমান সময়ে দাঁতের স্কেলিং করার ক্ষেত্রে আল্ট্রাসনিক স্কেলিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
এটি একটি সহজ পদ্ধতি এবং নিরাপদ। এই পদ্ধতিতে দাঁতের গায়ে লেগে থাকা দুর্গন্ধ যুক্তডেন্টাল প্লাক, দাঁতের পাথর ও মুখের গন্ধ দূর হয়। আরেকটি বিষয় হচ্ছে দাঁত স্কেলিং এর উপকারিতা ও অপকারিতা এটির উপকারিতা আছে কিন্তু দাঁত স্কেলিং এর কোন অপকারিতা নাই।
স্কেলিং এর অপকারিতা বর্তমান মানুষের মধ্যে একটি ভুল ধারণা ঢুকে গেছে যে স্কেলিং করলে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। কিন্তু দাঁতের স্কেলিং এর জন্য কোন ক্ষতি হয় না। এ সমস্ত কারণ নিচে দেওয়া হলঃ
বিভিন্ন ধরনের মানুষের মনে ধারণা হয় স্কেলিং করলে দাঁতের ক্ষতি হয়, চোখের ক্ষতি হয় ও দাঁত শিরশীর করে। হ্যাঁ দাঁতের সাথে চোখের সম্পর্ক আছে তবে দাঁত স্কেলিং করার মাধ্যমে চোখের কোন রকম ক্ষতি হয়। দাঁত শিরশির করে তবে সাময়িক সময়ের জন্য আবার অনেকেই কোন কিছু বুঝতে পারে না। যেগুলো লক্ষ্য দেখা দেয় সবগুলোই ক্ষণ স্থায়ী ও দাঁতকে মজবুত রাখতে এটা অবশ্যই জরুরী। আমাদের দাঁতের গায়ে আয়রন ও গন্ধযুক্ত কিছু দাগ দেখা যায় যার নাম ডেন্টাল ফ্ল্যাক।
ডেন্টাল ফ্ল্যাক নামক জীবাণু বা ময়লা তোলার জন্য আমরা ব্রাশ ব্যবহার করে থাকি তবে মনে রাখা দরকার এই জীবাণুটি ব্রাশ দিয়ে কখনোই তোলা সম্ভব না। তাই এ গুলো পরিষ্কার করার জন্যই স্কেলিং করতে হয়। কিন্তু অনেকেরই ধারণা যে স্কেলিং অনেক ক্ষতি হয়ে থাকে আমি তাদেরকে বলি যে আপনাদের ভুল ধারণা। স্কেলিং করলে কোন ক্ষতি হয় না। আসলে দাঁত স্কেলিং করলে দাঁত আরো মজবুত হয়, পরিষ্কার হয় এবং মুখে কোনো রকম দুর্গন্ধ থাকতে পারে না।
এ জন্য দাঁতের ভালো যদি চেয়ে থাকেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করে নেয়া ভালো। এই স্কেলিং সম্পর্কে অনেকে অনেক ধরনের বাজে মন্তব্য প্রচলিত করেছে। ডেন্টিস্ট এর মতে সেগুলোর প্রায় ই সবই অপপ্রচার।
দাঁতের স্কেলিং কিভাবে করা হয় বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি আমাদের চলতি পথে অনেক সাহায্য করে থাকে। তেমনি একটি সাহায্য আমাদের দাঁত স্কেলিং করার জন্য ব্যবহার করা হয়। দাঁত স্কেলিং এক এক ধরনের উন্নত মানের পরিষ্কার পদ্ধতি যা আপনার দাঁতের গোড়াতে জমে থাকা প্লাক ক্যালকুলাস বা দাঁতে জমে থাকা পাথর এক ধরনের উন্নত মানের যন্ত্রের মাধ্যমে দূর করা হয়। দীর্ঘদিন একই পরিস্থিতিতে থাকা দাঁতে জমে থাকা পাথর যদি দূর করা না যায় তবে তা দাঁতে সংক্রমণ এর সৃষ্টি করে।
ফলে মাড়ি নরম হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি হয়ে যায় যার কারণে জিন-জিভাইটিস পেরিও ডনটাইটিস রোগ দেখা দিতে পারে এমনকি দাঁত পড়েও যাওয়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে। এই জন্যই দাঁত স্কেলিং এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত এবং সঠিকটা জানতে হবে। আল্ট্রাসনিক বা লেসারের সাহায্যে স্কেলিং করা খুবই সহজ হয়। এই পদ্ধতিটি বাস্তবে রূপান্তর করার সময় কোনোরকম বেদনা বা কষ্ট হয় না। যদি খুব বেশি দাঁত শির শির করে।
সে ক্ষেত্রে বিশেষ টুথপেস্ট ও মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করার মাধ্যমে কয়েক দিন এর মধ্যেই অনুভূতি গুলো আবার আগের মত স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তাই দাঁত ও মাড়ির সুস্থতা বজায় রাখতে ছয় মাসে অন্তত এক বার স্কেলিং করানো খুব প্রয়োজন। স্কেলিং পদ্ধতি খুবই সহজ। দাঁত স্কেলিং করার সময় কয়েকটি ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করা হয়। যার সাহায্যে সহজেই আপনার দাঁত পরিষ্কার ও ঝকঝকে করে তোলে।
দাঁত স্কেলিং করার সময় সাময়িক সামান্য সময়ের জন্য একটু ব্যথা অনুভব হয়। তবে দাঁত কে সুস্থ রাখার জন্য আমরা ক্ষণস্থায়ী ব্যথা সহ্য করার চেষ্টা করব।
কতদিন পর পর দাঁত স্কেলিং করতে হয় আমাদের দাঁত কে স্বাস্থ্যকর রাখার জন্য দাঁতের স্কেলিং করা খুবই জরুরী। তবে স্কেলিং কতদিন পর পর করতে হয় সেটা জানাবো। ডেন্টিস্ট ও বিশেষজ্ঞদের মতে কিছু প্রধান বিষয় এর উপর নির্ভর করে। যাদের দাঁত আঁকাবাঁকা হয়ে থাকে তাদের ক্যালকুলাস বা ফ্ল্যাক জমাটের খুব বেশি আশঙ্কা থেকে থাকে। সে ক্ষেত্রে ছয় মাস অথবা এক বছর পর পর স্কেলিং করা উত্তম। যারা ডায়াবেটিস রোগে তাদের সংক্রমনের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের আগে চেক করতে হবে যে তার ডায়াবেটিস নরমাল আছে কিনা নরমাল থাকলে সেই স্কেলিং করাতে পারবে।
নইলে স্কেলিং করার সময় ডায়াবেটিস রোগীর স্কেলিং করা যাবে না। এছাড়াও সাধারণত দুই বছর, তিন বছর পর পর করাটা খারাপ হবে না। তবে নিজের জন্য তো নিজেকে নিতে হবে। সে জন্য চারিদিকে কান্না দিয়ে নিজের যত্নের কথা নিজেকে ভেবে ডাক্তারের বা ডেন্টিস্ট এর পরামর্শ নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
দাঁত স্কেলিং করার পর করনীয় দাঁত স্কেলিং করলে দাঁতের ক্ষতি হয়, চোখের ক্ষতি হয় ও দাঁত শিরশীর করে। হ্যাঁ দাঁতের সাথে চোখের সম্পর্ক আছে তবে দাঁত স্কেলিং করার মাধ্যমে চোখের কোন রকম ক্ষতি হয়। দাঁত শিরশির করে তবে সাময়িক সময়ের জন্য আবার অনেকেই কোন কিছু বুঝতে পারে না। যেগুলো লক্ষ্য দেখা দেয় সবগুলোই ক্ষণ স্থায়ী ও দাঁতকে মজবুত রাখতে এটা অবশ্যই জরুরী এবং দাঁত স্কেলিং এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আনতে হবে। আর একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে যার তার মুখ থেকে উল্টো পাল্টা কথা শুনে বিশ্বাস করা যাবে না।
সঠিক বিষয়ে জানতে হবে এবং অন্য কেউ জানার সুযোগ করে দিতে হবে। তাতে স্কেলিং করার সময় একটু শিরশিরানি ভাব থাকে তবে সেটি ক্ষণস্থায়ী। দাঁত স্কেলিং শেষ করে দুই থেকে তিন দিন পর্যন্ত ঠান্ডা পানি বা কোন ধরনের শক্ত খাবার না খেলে আপনার দাঁতের জন্য ভালো। সাময়িক সময়ের জন্য রাত থেকে রক্তপাত হতে পারে বা স্বাভাবিক সময়ের জন্য সংবেদনশীলতা অনুভব হইতে পারে। ডেন্টিস্ট বা চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলতে হবে। আর এই পরামর্শ গুলোই মেনে চললে খুব কম সময়ের মধ্যে আপনার দাঁতের যে হালকা ক্ষণস্থায়ী ব্যথা গুলো থাকে সেটা দূর হয়ে যাবে। এবং এর সাথে সাথে কিছু জিনিস পরিহার করতে হবে তার মধ্যে মেইন হচ্ছে ধূমপান, পান ও জর্দা পরিহার করলে এ ধরনের সমস্যা নাও হতে পারে।