সিজারের ঠিক কত দিন পর থেকে ব্যায়াম করা যায়। এটি শরীরের গঠন এবং গর্ভকালীন জটিলতার ওপর নির্ভর করে। সাধারণভাবে সিজার হিলিং বা পুরো জোড়া লাগতে ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগে। অনেক সময় ওপরের চামড়া হিলিং হয়ে গেলেও ভেতরের স্তরগুলো পুরোপুরি নাও হতে পারে। যেকোনো ব্যায়াম শুরুর আগে বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়া প্রয়োজন।
সাধারণত সিজারের দু-এক দিন পর থেকে দুটো ব্যায়াম করা জরুরি। একটি হলো ব্রিদিং এক্সারসাইজ এবং অন্যটি কিগাল এক্সারসাইজ।
ব্রিদিং এক্সারসাইজ : প্রথম দিকে এই ব্যায়ামটি শুয়ে করা ভালো। চিত হয়ে শুয়ে ধীরে ধীরে নাক দিয়ে শ্বাস নিন। তিন সেকেন্ড ধরে রেখে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। পাঁচবার রিপিট করুন এবং দিনে তিনবেলা করুন। ছয় সপ্তাহ পার হয়ে গেলে ব্রিদিং এক্সারসাইজ দ্বিতীয় ধাপে করবেন।
এবার শুয়ে পেটে এক হাত রাখুন। নাক দিয়ে শ্বাস নিন, খেয়াল করুন পেট ফুলে উঠেছে, দশ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন। এবার মুখ দিয়ে শিস দেওয়ার মতো করে শ্বাস ছেড়ে দিন। আট থেকে দশবার রিপিট করুন। দিনে দুবেলা।
কিগাল এক্সারসাইজ : গর্ভকালীন সময়ের শুরু থেকে এই ব্যায়াম করা উচিত। প্রথম দিকে ক্যাথেটার খুলে ফেলার পর থেকে কিগাল করতে পারেন। চিত হয়ে শুয়ে পেলভিক ফ্লোর মাংসপেশিকে শক্ত করুন, পাঁচ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এবার শিথিল করুন। পাঁচ থেকে আটবার রিপিট করুন। সহজভাবে বললে, অনেক সময় আমরা প্রস্রাব আটকে রাখতে যেমন তলপেটের নিম্নভাগের মাংসপেশিকে শক্ত করে ফেলি, অনেকটা সে রকম।
হাঁটা : প্রথম চার থেকে ছয় সপ্তাহ বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। পরে বেশি ব্যায়াম করার জন্য এই বিশ্রাম দরকার। এতে কাটা অংশ পুরোপুরি হিলিং হওয়ার সুযোগ পায়। এ সময় খুব ধীর গতিতে পাঁচ থেকে দশ মিনিট হাঁটতে পারেন। পরবর্তী ছয় সপ্তাহ পর থেকে গতি বাড়িয়ে দশ থেকে পনেরো মিনিট হাঁটা দরকার। এরপর ছয় মাস পর থেকে রেগুলার নিয়মমাফিক ব্যায়ামে যেতে পারবে।
লেখক: সুশান্ত কুমার ঘোষ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিআইইউ মেডিকেল সেন্টার