Author Topic: পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও প্রতিকার  (Read 1523 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 363
  • Gender: Male
    • View Profile


আমাদের শরীরের সমস্ত ভার গোড়ালির মাধ্যমে মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে যার ফলে আমরা স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা করতে পারি। আমাদের মধ্যে অনেকেই পায়ের গোড়ালি ব্যথায় ভুগছে এরমধ্যে বেশিরভাগ মানুষেরই প্লান্টার ফ্যাসাইটিস অথবা ক্যালকেনিয়াম স্পার (গোড়ালির নিচের হাড়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি) কারণে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে সাধারণত সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা ফেললে গোড়ালিতে তীব্র  ব্যথা অনুভূত হয়। হাঁটার সময় পায়ের নিচে সুচ অথবা পিন ফঁড়ে আছে বা খোঁচা দেয়ার মতো ব্যথা অনুভব হয়। আস্তে আস্তে কিছুক্ষণ হাঁটলে ব্যথা কিছুটা কমে যায়।

যেসব কারণে হতে পারে গোড়ালি ব্যথা:
পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ জেনে নেওয়ার আগেই প্রথমে এর গঠন সম্পর্কে কিছুটা ধারনা থাকা দরকার। আমাদের পায়ের সামনের অংশ কিছু ছোট ছোট হাড় এবং পিছনের গোড়ালি একটি বড় ক্যালকানিয়াস নামক হাড় দিয়ে গঠিত। এই হাড় গুলোর মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে থাকে কিছু লিগামেন্টস। এ ছাড়াও আমাদের পায়ের গোড়ালি থেকে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত একটি শক্ত ব্যান্ড থাকে যাকে প্লান্টার ফাসা বলে।প্লান্টার ফাসার প্রধান কাজ হল শরীরে সমস্ত ওজন যেন সরাসরি হাড়ের উপর চাপ প্রয়োগ করতে না পারে এবং পায়ের আকৃতির ঠিক থাকে। এক কথায় এই ব্যান্ডটি আমাদের শরীরের শক এবজরবারে এর মত কাজ করে।

১. প্লান্টার ফাসাইটিস:

পায়ের গোড়ালি ব্যথার অন্যতম প্রধান কারণ প্লান্টার ফাসাইটিস। শরীরের এই অংশে দীর্ঘমেয়াদী চাপের ফলে ফাসা বা ব্যান্ডে ইনজুরি হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় ব্যথা কম থাকলেও পরবর্তীতে হাঁটাচলা অব্যাহত থাকে এই ইনজুরি গভীর হয়ে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ ও ব্যথা অনুভূত হয় যাকে প্ল্যানটার ফাসাইটিস বলে। এক্ষেত্রে অনেকক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর বা সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ব্যথাটা বেশি টের পাওয়া যায়৷

২. ক্যালকেনিয়াম স্পার (গোড়ালির নিচের হাড়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি):

সাধারণত গোড়ালির হাঁড়ে (ক্যালকানিয়াস) ক্যালসিয়াম জমে তীক্ষ্ণ সূচালো দাঁতের মতো বাড়তি অংশ তৈরি হয় এই বাড়তি অংশ গোড়ালি নিচের মাংসপেশি, ফাসা, লিগামেন্ট ও টিস্যুতে হাঁটাচলা করার সময় খোঁচা দেয় যার ফলে গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়।

৩. গাটে বাত:

রক্তে ইউরিক এসিডের পরিমাণে বেড়ে গেলে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের গোড়ায়, গোড়ালি এবং তার আশেপাশের জয়েন্ট গুলোতে প্রদাহ তৈরি হয় যার ফলে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে।

৪. সেভার্স ডিজিস:

সাধারণত কিশোর-কিশোরী অথবা প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে গোড়ালির গ্রোথ প্লেটে মাইক্রোট্রমার ফলে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে । বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৭-১৫ বছরের বাচ্চাদের এই কারণে গোড়ালিতে ব্যথা হয়৷

৫. অ্যাকিলিস টেন্ডিনাইটিস:

আমাদের কাফ মাসেল অ্যাকিলিস ট্যান্ডনের মাধ্যমে গোড়ালির সাথে সংযুক্ত থাকে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এই টেনশনে প্রদাহ তৈরি হয় এতে করে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে ।

৬. টারসাল টানেল সিনড্রোম:

গোড়ালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নার্ভের মধ্যে ট্রমা অথবা দীর্ঘমেয়াদী চাপ থাকলেও গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে ।

৭. পায়ের লিগামেন্ট ইঞ্জুরি (পা মচকানো)

পায়ের লিগামেন্ট এর ইনজুরি হলে ব্যথা হতে পারে ও সে ব্যথা পুরো পা জুরে হতে পারে, সে ব্যথা পায়ের তলাতে ও হতে পারে।

৮. হাড় ভাঙ্গা (ফ্র্যাকচার): খুব বেশি ব্যায়াম, খেলাধুলো এবং হাঁটাচলা করে কাজ করলে গোড়ালির হাড়ে খুব চাপ পড়ে। যা থেকে হাড়ে চিড় ধরে৷ যাঁরা বেশি দৌড়াদৌড়ি করেন, তাঁদের এই কারণে গোড়ালিতে ব্যথা হয়৷

৯. হাড়ের ক্ষয় (অস্টিওস্পোরোসিস): জনিত কারণে গোড়ালি ব্যথা হয়ে থাকে।


যারা গোড়ালি ব্যথার ঝুঁকিতে থাকেন:
অনেক সময় কোনরকম কারণ ছাড়াই গোড়ালি ব্যথা হতে পারে তবে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কারণ আছে যার ফলে গোড়ালি ব্যথা বেশি হয়ে থাকে:-

১. বয়স ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সি মানুষের মধ্যে এই গোড়ালি ব্যথার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।

২. যাদের পায়ের পাতা জন্মগতভাবে ফ্লাট ফুট সমস্যা বা আর্চ কম থাকে । অথবা যাদের আর্চ স্বাভাবিক চেয়ে অনেক বেশী উচু থাকে তাদের গোড়ালিতে স্বাভাবিকের তুলনায় অধিক চাপ অনুভূত হয় যার ফলে গোড়ালি ব্যথার ঝুঁকি বহু অংশে বৃদ্ধি পায়।

৩. দীর্ঘদিন ধরে খুব শক্ত সলের জুতা পরা অথবা হাই হিল ব্যবহারে গোড়ালিতে অধিকমাত্রায় চাপ পরে এতে গোড়ালির পিছনে এবং গোড়ালির ভিতর ব্যথা অনুভব হয় এবং আস্তে আস্তে এই ব্যথা বাড়তে থাকে।

৪. কাফ মাসেলের অস্বাভাবিক সংকোচন বা কাফ মাসেল টাইটনেস এর ফলে গোড়ালি ব্যথা বেশি হয়।

৫. যাদের শরীরে অতিরিক্ত ওজন বা স্থূল স্বাস্থ্য জনিত সমস্যায় ভুগছেন তাদের গোড়ালিতে স্বাভাবিকের তুলনায় চাপবেশি পড়ে ফলশ্রুতিতে গোড়ালি ব্যথার প্রবণতা অধিক লক্ষ্য করা যায়।

৬. নারীদের পুরুষদের তুলনায় গোড়ালি ব্যথার প্রবণতা বেশি থাকে বিশেষ করে গর্ভকালীন সময় শরীরের অতিরিক্ত ওজন এবং পায়ের মাংসপেশীর শক্তি কমে যাওয়ার ফলে গোড়ালি ব্যথা বেশি হয়ে থাকে।

৭. কিছু কিছু পেশায় দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে কাজ করতে হয় যেমন-গার্মেন্টস কর্মী, সিকিউরিটি গার্ড, ট্রাফিক পুলিশ এবং বিউটিশিয়ান তাদের গোড়ালি ব্যথার প্রবণতা বেশি থাকে।

৮. তাছাড়াও অন্যান্য রোগ যেমন- আর্থাইটিস, এনকাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস, অস্টিওকন্ড্রসিস এবং ডায়াবেটিকসের প্রভাবে গোড়ালি প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।

৯. যাদের পেলভিস পোস্টেরিয়র টিলট্রেড তাদের মধ্যে গোড়ালি ব্যথার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।

১০. যাদের কোমরের পেশীর ভারসাম্যহীনতা, পেলভিস ডেভিয়েশন, নকনি, পায়ের সুপাইনেশন এবং প্রানেশন, পেশীর ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি কারণে গোড়ালিতে ব্যথার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায়।

গোড়ালি ব্যথা থেকে বাঁচতে যেসব বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখা উচিত:
১.  শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে।

২. পায়ের জুতো নির্বাচনের সময় অবশ্যই সঠিক মাপের জুতো নির্বাচন করতে হবে। শক্ত চপ্পল বা স্লিপার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।সিলিকন হিল দেওয়া জুতো ব্যাবহার করা সবচেয়ে উত্তম।

৩. অধিক সময় ধরে হাঁটা বা দাঁড়িয়ে থাকা যাবে না, অসমতল জায়গায় বেশি হাঁটাচলা করা যাবে না।

৪. খালি পায়ে শক্ত বা উঁচু নিচু জায়গা চলাফেরা করা যাবে না হাই হীল অথবা টাইট ফিট জুতো পরিধান করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫. শরীরে ভিটামিন ডি এবং ই এর অভাব আছে কিনা তার দিকে লক্ষ রাখতে হবে।

৬. প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি-ফলমূল সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

গোড়ালি ব্যথার জন্য কখন ডাক্তার দেখাবেন
১. পায়ের পাতা এবং গোড়ালি ফুলে গেলে।

২. জ্বরের সাথে গোড়ালি ব্যথা হলে অথবা গোড়ালি ব্যথার জন্য জ্বর আসলে।

৩. পায়ের গোড়ালি অবশ হয়ে গেলে।

৪. হাঁটাচলা করার সময় পা ভাঁজ করতে অসুবিধা হলে।

৫. পায়ের পাতায় ভর দিয়ে দাঁড়াতে সমস্যা হলে।

৬. সাত দিনের বেশি গোড়ালিতে ব্যথা হলে এবং হাঁটা চলাফেরা ছাড়াও সব সময় গোড়ালিতে ব্যথা করলে।

৭. কাফ মাসেল প্রচন্ড ব্যথা হলে এবং ফুলে গেলে।

এই সকল লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

গোড়ালি ব্যথায় চিকিৎসা পদ্ধতি:
গোড়ালি ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে তারমধ্যে টিগার পয়েন্ট ইঞ্জেকশন, ইনফিল্ট্রেশন, পিআরপি এবং ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অন্যতম। বর্তমান সময়ে গোড়ালি ব্যথা কমাতে ফিজিওথেরাপি একটি জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি। একজন অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক বিভিন্ন ধরনের শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষা, এক্সরে ও রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করেন এবং চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।নিয়মিত সপ্তাহ খানিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে গোড়ালি ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

প্রাথমিক চিকিৎসা:

১. পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া।

২. বরফ সেঁক: ১০ মিনিট করে দিনে দুই থেকে তিনবার বরফ সেঁক নেওয়া।

৩. কম্প্রেশন ব্যান্ডেজ: কম্প্রেশন ব্যান্ডেজ ইনজুরির স্থান পুনর্গঠনে সাহায্য করে এবং নতুন করে ইনজুরি হওয়ার প্রবণতা কমায় ।

৪. পা স্বাভাবিক অবস্থান থেকে একটু উপরে রাখা যাতে করে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং পায়ের ফোলা ভাব কমে যায়।

৫. ননস্টেরয়েডাল এন্টি-ইনফ্লামেটরি ড্রাগস, যেমন: প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ পাঁচ থেকে সাত দিন খেলে ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।

৬. গোড়ালির উপর চাপ পরে না, যার ভেতরে ইনসোল বা হিলপ্যাড আছে এই রকম জুতা ব্যবহার করতে হবে হবে।

দীর্ঘ মেয়াদী ব্যথার চিকিৎসা:

গোড়ালি ব্যথা প্রাথমিক চিকিৎসা ও সতর্কতার মাধ্যমে যদি ব্যথা না কমে তাহলে একজন অভিজ্ঞ ফিজিশিয়ান অথবা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের (ফিজিওথেরাপিস্ট) পরামর্শ মতে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি।

ফিজিওথেরাপি: গোঁড়ালি ব্যথায় ফিজিওথেরাপী খুবই কার্যকরী চিকিৎসা। আলট্রাসাউন্ড থেরাপী, প্যারাফিন ওয়াক্স বাথ, ডিপ ট্রান্সভার্স ফ্রিকশন ম্যাসেজ, স্ট্রেচিং প্রোগ্রাম, স্ট্রেঙ্থেনিং প্রোগ্রাম, টেপিং গোড়ালি ব্যথায় খুবই কার্যকরী।

গোড়ালির ব্যথা কমাতে স্ট্রেচিং প্রোগ্রাম: শুধুমাত্র ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শ, ঔষধ, জুতো এবং খাদ্য বাস নিয়ন্ত্রণ রাখলেই চলবে না তার সাথে নিয়মিত কিছু ব্যায়ামও প্রয়োজন। আসুন জেনে নেই যেভাবে আমরা বাসায় ব্যায়ামগুলো করতে পারি:-

১. ফ্লোরে বা চেয়ারে বসে হাঁটু লক করে যে কোনো এক পা সোজা রাখুন। এবার একটি বড় ফিতা অথবা তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতার সামনের অংশে আটকে দিয়ে দুই প্রান্ত দুই হাত দিয়ে হালকা চাপে রাখুন বা টানুন ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন। এটি ১০ বার করে দিনে ৩-৪ বার করুন।

২. একটি আধা লিটার পানির বোতল পুরোপুরি বরফ জমাট করে পায়ের নিচে রেখে রোল করতে হবে ৩০ সেকেন্ড। এটি দিনে ৩- ৪ বার করুন।

৩. একটি টেনিস বল পায়ের গোড়ালি থেকে পাতা পর্যন্ত ১৫-২০ বার রোলিং করুন। এটি দিনে ৩- ৪ বার করুন।

৪. হাত দিয়ে পায়ের পাতায় ম্যসেজ করে দিতে হবে। কেন্দ্র থেকে বাহিরের দিকে। এটি দিনে ৩- ৪ বার করুন।

৫. সিঁড়িতে পায়ের পাতার সামনের দিকের অংশ রেখে বাকি অংশ বাইরে রেখে যে কোনো এক পায়ের উপর ভারসাম্য রেখে দাঁড়াতে হবে ৩০ সেকেন্ড অথবা কোনো দেয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে গোঁড়ালি তুলে পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলের উপর ভর করে দাঁড়ান এবং ৩০ সেকেন্ড ধরে রাখবেন। এটি ১০ বার করে দিনে ৩-৪ বার করুন।

৬. দুই হাত দুই পাশে মাটিতে স্পর্শ করে এক হাঁটু মুড়ে বসে যে পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা অনুভূত হয় সে পায়ের পাতা মাটিতে রেখে গোড়ালি কিছুটা উঁচু করে বসতে হবে, যাতে করে পিছনের অংশের চাপে পায়ের উপর পরে ৩০ সেকেন্ড এভাবে থেকে আস্তে আস্তে পিছনের অংশ দিয়ে পায়ের উপর চাপ কমাতে হবে। এইভাবে তিনবার করতে হবে যদি হাটুতে অথবা কোমরে ব্যথা লাগে সে ক্ষেত্রে জোর করে এই ব্যায়াম করা উচিত না।


ট্রিগার পয়েন্ট ইনজেকশন: গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা হলে এবং ব্যথার ফলে স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হলে সে ক্ষেত্রে ট্রিগার পয়েন্ট ইনজেকশনের মাধ্যমে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করে সাময়িকভাবে ব্যথা কমানো যায়। তবে স্টেরয়েড প্রয়োগের পূর্বে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দিকে নজর রাখতে হবে।

পিআরপি: পিআরপি মানে হচ্ছে প্লাটিলেট রিচ ইন প্লাসমা। পিআরপি বর্তমান সময়ে খুবই আধুনিক একটি চিকিৎসা পদ্ধতি এতে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত মেশিনে দিয়ে রক্তকণিকা আলাদা করে এই পিআরপি তৈরি করা হয়। যাতে প্রচুর পরিমাণে গ্রোথ ফ্যাক্টর থাকে যা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয় পূরণের সহায়তা করে। দীর্ঘ মেয়াদী ও জটিল প্লান্টার ফ্যাসাইটিস জনিত গোড়ালি ব্যথায় পিআরপি থেরাপি খুব ভালো কাজ করে। এটি একটি স্থায়ী এবং ব্যয়বহুল চিকিৎসা পদ্ধতি।

আমাদের শারীরিক ও মানসিক অশান্তির অন্যতম কারণ হচ্ছে ব্যথা ।ব্যথা আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করে। তাই ব্যথা মুক্ত জীবন যাপন করতে হলে আমাদের আগেই সতর্ক হতে হবে।একটু সতর্ক হলেই আমরা ব্যথামুক্ত সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করতে পারি।




লেখক: সুশান্ত কুমার ঘোষ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিআইইউ মেডিকেল সেন্টার