Author Topic: সিজারিয়ান সার্জারির পর পিঠে ও কোমরে ব্যথা :  (Read 1721 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 362
  • Gender: Male
    • View Profile
গর্ভবতী নারী যদি কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসাগত অবস্থায় ভোগেন বা যদি পেটের বাচ্চা এমন কোনো অবস্থানে থাকে, যা প্রাকৃতিক জন্মপদ্ধতির পক্ষে কার্যকর নয়, তাহলে বেশির ভাগ চিকিৎসক শিশুকে প্রসবের জন্য সিজারিয়ান সার্জারির দিকে এগিয়ে যান। বাচ্চাকে সুরক্ষিত রাখলেও অনেক নারীই সি-সেকশনের পরে পিঠের নিচে ব্যথা এবং সেই সঙ্গে সেলাই ও সাধারণ সার্জারির ব্যথায় ভোগেন। যদিও এই ব্যথা প্রসব ও গর্ভাবস্থার শেষে শরীরে মানিয়ে নেওয়ার অংশ হিসেবে আসতে পারে। তবে এর এমন কিছু দিক রয়েছে, যা নির্দিষ্ট চিকিৎসাগত কারণকেও নির্দেশ করে।



পিঠে ব্যথার কারণ : অপারেশনের জন্য ইনজেকশন দেওয়ার পর থেকে ব্যথা শুরু হয় কিন্তু ইনজেকশন ব্যথার জন্য দায়ী নয়, মূলত কোমরের মাংসপেশি, লিগামেন্ট ও লাম্বার লাইনের স্বাভাবিক বক্রতা বেড়ে যাওয়ার ফলে এই ব্যথার সৃষ্টি হয়।
আবার অ্যানেসথেটিক ইনজেকশনের পরবর্তী প্রভাব থেকে আরেকটি কারণ শুরু হয়। ইনজেকশন দেওয়ার পর সেরিব্রোস্পাইনাল তরল অল্প পরিমাণে লিক করতে থাকে। এটি খুব মাথা ব্যথা এবং ঘাড়ে প্রচন্ড ব্যথা সৃষ্টি করে, বিশেষত যদি মা বসে বা দাঁড়িয়ে থাকেন। তিনি শুয়ে পড়লে ব্যথা কমে যায় বলে মনে হয়।

ব্যথা যখন হয় : সিজারিয়ান প্রসবের ক্ষেত্রে পিঠ বা কোমরের ব্যথা শুরু হয় যে মুহূর্তে অ্যানেসথেসিয়ার প্রভাবগুলো বন্ধ হওয়া শুরু করে। প্রায় তিন থেকে ছয় ঘণ্টা পরে ঘটে যখন অ্যানেসথেসিয়ার ইনজেকশন দেওয়া অংশটিতে ব্যথা লাগতে শুরু করে। মাথা ব্যথা এবং ঘাড়ের ব্যথা, যা সেরিব্রোস্পাইনাল তরল ফুটো হওয়ার ফলে ঘটে, সাধারণত প্রসবের ১২ ঘণ্টা পরে বা শিশুর জন্মের তিন থেকে চার দিন পর শুরু হয়।

ব্যথার সময়কাল : মেরুদণ্ডে অ্যানেসথেসিয়ার কারণে হওয়া ব্যথা কয়েক দিন বা এক সপ্তাহের মধ্যে কমে যায়। কারও কারও ক্ষেত্রে, ব্যথা এক মাস পর্যন্ত থাকে। এর প্রাথমিক কারণটি হলো ইনজেকশন প্রবেশের কারণে আঘাত লাগা। অনেক সময় মাথা ব্যথা এবং ঘাড়ে ব্যথা অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে।

করণীয় :
1. সাধারণ ব্যায়াম আপনার শরীরকে আরও শক্তিশালী হতে এবং দুর্বলতাগুলো আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হতে পারে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ব্যায়ামের ফলে আপনার সেলাই ফেটে যেতে পারে এবং আরও জটিলতা দেখা দিতে পারে।

2. সঠিকভাবে ঘুমানো আপনার পিঠকে ব্যথার ও প্রসবের যন্ত্রণা থেকে আরোগ্য করতে সঠিক ধরনের অবস্থান অবলম্বনের প্রয়োজন হতে পারে। এটি যেন সমতল হয় এবং খুব নরম না হয় তা নিশ্চিত করুন।

3.গরম ও ঠান্ডা উষ্ণ চিকিৎসার সঙ্গে শীতল চাপ অদলবদল করে প্রয়োগ করলে পেশিগুলো শিথিল করতে এবং ব্যথার জায়গায় রক্তসঞ্চালন বাড়াতে সহায়তা করে। এটি করার জন্য একটি সাধারণ হিটিং প্যাড এবং  বরফ প্যাক ব্যবহার করুন।

প্রসব-পরবর্তী ফিজিওথেরাপি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে কোমর ও পেটের শিথিল হয়ে যাওয়া মাংসপেশিগুলো শক্তি বৃদ্ধি করার জন্য কিছু থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ বা ব্যায়াম করতে হবে। যেমন পেলভিক-ফ্লোর এক্সারসাইজ, ব্যাক মাসল স্ট্রেন্দেনিং এক্সারসাইজ; অ্যাবডোমিনাল এক্সারসাইজ ইত্যাদি।




লেখক: সুশান্ত কুমার ঘোষ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিআইইউ মেডিকেল সেন্টার