Author Topic: পিঠে ব্যাথা প্রতিরোধে ৯টি দৈনিক অভ্যাস  (Read 1574 times)

0 Members and 1 Guest are viewing this topic.

Dr. Sushanta Kumar Ghose

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 363
  • Gender: Male
    • View Profile


পিঠ ব্যথা প্রতিরোধে সবচেয়ে জরুরী হলো আপনার পিঠের উপর চাপ কমানো। তাই দৈনন্দিন চলাফেরা এবং কাজকর্মের সময় আপনার দেহভঙ্গীর দিকে খেয়াল রাখুন। কিছু কাজ আছে যেগুলিকে আপনার দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে পিঠে ব্যাথা বা ব্যাকপেইন থেকে সহজেই দূরে থাকা সম্ভব। চলুন এমন নয়টি অভ্যাস সম্পর্কে জেনে নিই।

১. কম ওজন বহন করুন

ভারী ব্রিফকেস, ল্যাপটপ ব্যাগ, স্যুটকেস কিংবা বাজারের ব্যাগ- এগুলি আপনার ঘাড় এবং মেরুদণ্ডে অপ্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগ করতে পারে। তাই শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জিনিসই বহন করুন। এমন ব্যাগ ব্যবহার করুন যা পিঠে, ঘাড়ে, কাঁধে সমানভাবে ভর বিতরণ করে, যেমন ব্যাকপ্যাক, যা দুই কাঁধে নেয়ার মত। ভারী কিছু বহন করতে চাইলে, প্রয়োজনে চাকাওয়ালা ব্যাগ ব্যবহার করুন।

২. ব্যায়াম করুন


আপনার পেট এবং পিঠের চারপাশের পেশীগুলি আপনাকে সোজা থাকতে সাহায্য করে এবং পুরো শরীরের ভার বহন করতে সহায়তা করে। তাই এগুলিকে শক্তিশালী করে আপনার পিঠে ব্যথা বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারেন। সপ্তাহে অন্তত কয়েকবার পেট ও পিঠের ব্যায়াম করুন।

৩. সোজা হোন

সঠিক দেহভঙ্গী আপনার মেরুদন্ডকে সুস্থ রাখে এবং সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। দেহভঙ্গি সঠিক না হলে তা আপনার মেরুদন্ডে  অপ্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগ করে। যারা দীর্ঘক্ষণ অফিসে কিংবা কম্পিউটারের সামনে কাজ করেন তাদের ব্যাকপেইন হবার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি থাকে। তাই চেয়ারে বসার সময় হয়ে বসতে হবে। দাড়ানোর সময়ও সোজা হয়ে দাড়াতে হবে। ফোন ব্যবহারের সময় চেষ্টা করতে হবে যেন তা মাথা সোজা রেখে ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটারের মনিটর প্রয়োজনে উচু করে নিতে হবে যেন মাথা ও শিরদাড়া সোজা রেখে কাজ করা যায়। ।

৪. টেবিলের উপর ঝুঁকে পড়বেন না

অফিসের চেয়ারে বসার সময় কিংবা দাঁড়ানোর সময় ঝুঁকে যাবেন না। বিশেষ করে যদি আপনি প্রতিদিন কয়েক ঘন্টার বেশি বসে থাকেন বা ‘ডেস্ক জব’ করেন তাহলে ঠিকভাবে বসা এবং আপনার পিঠকে পেছন থেকে সঠিকভাবে চাপ দিয়ে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ, ।

বসার চেয়ারটা ভাল হওয়া খুব জরুরী। এমন চেয়ার বেছে নিন যা আপনার পিঠের নীচের দিককে সঠিক ভাবে চাপ দিয়ে রাখতে পারবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনি বসলে আপনার হাঁটু আপনার নিতম্বের থেকে একটু উঁচুতে থাকে।

৫. প্রায়ই নড়ে চড়ে বসুন, উঠুন

দীর্ঘ সময় ধরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা, বসা বা শুয়ে থাকা আপনার পিঠের জন্য স্বাস্থ্যকর নয়। আপনি যখনই পারেন বসা থেকে উঠে, হাঁটাহাঁটি করে এবং কিছু সাধারণ হাল্কা স্ট্রেচ করে পেশী এবং হাড় এবং মেরদন্ডকে চাপ থেকে মুক্তি দিন। এটি আপনার পিঠে রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং সুস্থ রাখে।

৬. জুতা বদলান

হাই-হিলের জুতা আপনার পিঠের ক্ষতির কারণ হতে পারে, বিশেষ করে তা যদি নিয়মিত পরেন। তাই অল্প উচ্চতার সমান তলিওয়ালা জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করুন। 

৭. আপনার ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গ্রহণের পরিমাণ বাড়ান

পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গ্রহণ করে আপনার মেরুদন্ডের  হাড় মজবুত রাখুন। ক্যালসিয়াম অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে, যা বিশেষ করে নারীদের পিঠে ব্যথার একটি বড় কারণ। দুধ, দই, শাকে আপনি পাবেন ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি পাবেন চর্বিযুক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, গরুর যকৃত বা কলিজা কিংবা পনিরে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের ক্যালসিয়াম বড়ি পাওয়া যায় যা কার্যকত।  তবে ভিটামিনের বড়ি খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিতে হবে।

৮. সিগারেটটা বাদ দিন


ধূমপান গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং এটি ব্যাকপেইনও বাড়িয়ে তুলতে পারে। নিকোটিন মেরুদন্ডের ডিস্কগুলিতে রক্ত ​​প্রবাহকে সীমিত করে দেয়, যার ফলে তারা শুকিয়ে যায় বা ফেটে যেতে পারে। ধূমপান রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণও হ্রাস করে এবং এর ফলে পেশীতে কম পুষ্টি পৌঁছায়। এই দুর্বল, অসুস্থ পিঠ দুর্ঘটনাজনিত স্ট্রেন এবং পিঠে ব্যথা সৃষ্টিকারী টানগুলির জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

৯. হাঁটুর নিচে বালিশ দিয়ে ঘুমান

উপুড় হয়ে বা চিৎ হয়ে ঘুমালে আপনার মেরুদণ্ডে চাপ পড়ে। ঘুমের সময় আপনার পা সামান্য উঁচু করে রাখলে পিঠের এই চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই হাঁটুর নিচে বালিশ দিয়ে আপনি আপনার পিঠের উপর চাপ অর্ধেক কমে ফেলতে পারেন।



Author: Sushanta Kumar Ghosh, Physiotherapy Specialist, DIU Medical Center