Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Dr. Sushanta Kumar Ghose

Pages: [1] 2 3 ... 25
1
লাল, হলুদ, গোলাপী ও সবুজ— এমনকি, আপনার প্রস্রাব রংধনু মতোও হতে পারে। শুধু তাই নয়, আপনি অবাক হবেন যে এর রং বেগুনি, কমলা কিংবা নীলও হতে পারে। আবার, এগুলোর পাশাপাশি কারও কারও প্রস্রাবের রং এমন কিছুও হতে পারে, যা ঠিক স্বাভাবিক বা পরিচিত কোনও রং না।



প্রস্রাবের মাধ্যমে আমাদের শরীর তার বর্জ্য পদার্থ বাইরে বের করে দেয়। অন্যভাবে বললে, এই প্রক্রিয়ায় শরীর থেকে ময়লা-আবর্জনা বের করা হয়।

শরীরের প্রোটিন, লোহিত কণিকা, মাংসপেশী ভেঙ্গে নাইট্রোজেনাস বর্জ্য তৈরি হয়। ইউরিয়া ও ক্রিয়েটিনিন এই বর্জ্যর অন্যতম উপাদান।

এ ছাড়া আরও অনেক কিছু আছে যা প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। যেমন — আমরা যেসব ভিটামিন ও ওষুধ খেয়ে থাকি।


লাল
কারো যদি প্রস্রাবের রং লাল হয়, তাহলে সাধারণত এর মানে হল, এতে রক্ত আছে।

মূত্রনালীর সাথে সম্পর্কিত যে কোনও সমস্যার কারণে এটি হতে পারে।

কিডনি, মূত্রাশয় ও প্রোস্টেট এবং মূত্রনালীর সাথে সংযোগকারী কোনও টিউব থেকে রক্তপাত হলে প্রস্রাব লাল হয়ে যেতে পারে।

প্রস্রাবের সাথে মিশে থাকা রক্তের পরিমাণ ও সতেজতার উপর নির্ভর করে যে ওই রক্তের রং কী রকম হবে। এক্ষেত্রে প্রস্রাবের রং একেক সময় একেক রকম হতে পারে।

রক্তপাত যদি প্রবল মাত্রায় হয়, তাহলে প্রস্রাবের রং এত গাঢ় হতে পারে যে এটিকে রেড ওয়াইনের মতো দেখতে লাগতে পারে।

এই ধরনের রক্তপাতের পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন— কিডনিতে পাথর, ক্যান্সার, ট্রমা কিংবা মূত্রনালীতে কোনও সংক্রমণ।

আবার, হয়ত সাধারণভাবে অতিরিক্ত বিটরুট খেলেও প্রস্রাবের রং লাল হয়ে যেতে পারে।

কমলা ও হলুদ
আমি সবাই-ই জানি যে সাধারণ অবস্থায় আমাদের প্রস্রাবের রং অনেকটা হলুদ থাকে। এখন এই হলুদের মাত্রা কতটুকু হবে, তা নির্ভর করবে যে আপনি দৈনিক কতটুকু পরিমাণ পানি পান করছেন।

শরীরে পানির অভাব থাকলে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হয়ে যাবে। আবার কখনও কখনও এটি কমলা রঙ-এরও হতে পারে।

আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করেন, তবে প্রস্রাবের রং হবে পাতলা এবং ফ্যাকাশে হলুদ।

যে উপাদানটি প্রস্রাবকে হলুদ করে, তাকে বলে ইউরোবিলিন।

শরীরে উপস্থিত পুরানো লোহিত রক্তকণিকাকে ভাঙ্গার মাধ্যমে ইউরোবিলিনের গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

ওই রক্তকণিকাগুলো যথাযথা আকারে না থাকায় শরীর প্রস্রাবের মাধ্যমে সেগুলোকে সরিয়ে ফেলে।

এই প্রক্রিয়ায় শরীরে একটি যৌগ তৈরি হয়, যাকে বলা হয় বিলিরুবিন। এটি কিছু পরিমাণে প্রস্রাবের মাধ্যমে ও কিছুটা অন্ত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

আমাদের লিভার বা যকৃত ওই বিলিরুবিন ব্যবহার করে পিত্তরস তৈরি করে।

পিত্তরস হজম এবং শরীরের চর্বি ভেঙ্গে ফেলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

পিত্তরস অন্ত্রে থাকে এবং মলের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। এই পিত্তরসের কারণেই মলের রং বাদামী হয়ে থাকে।

কিন্তু অনেকসময় পিত্তথলির পাথর কিংবা ক্যান্সারের কারণে পিত্তনালী বন্ধ হয়ে যায় এবং তখন পিত্তরস অন্ত্রে পৌঁছাতে পারে না।

ওইসময় বিলিরুবিন রক্তনালীতে ফিরে যায় এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে নির্গত হয়।

এই কারণে প্রস্রাবের রং গাঢ় হতে শুরু করে - কমলা বা বাদামী। প্রস্রাবে বিলিরুবিনের পরিমাণ বেড়ে গেলে ত্বকের রংও হলুদ হতে শুরু করে।

এই অবস্থাকে বলা হয় 'অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস', যা এক ধরনের জন্ডিস।

তবে কিছু ওষুধ আছে, যেগুলোর কারণে প্রস্রাব কমলা রঙা হয়ে যেতে পারে।

সবুজ ও নীল
সবুজ এবং নীল রংয়ের প্রস্রাব হওয়ার ঘটনা খুব বিরল। প্রস্রাব করার পর আপনি যদি দেখেন যে তার রং সবুজ বা নীল, আপনি নিশ্চিতভাবেই অবাক হয়ে যাবেন।

টয়লেটে কোনও কিছুর উপস্থিতি যদি প্রস্রাবের রং পরিবর্তন না করে, তাহলে শরীর অন্য কোনও কারণে সবুজ বা নীল রংয়ের প্রস্রাব তৈরি করতে পারে।

যদি কোনও খাদ্যদ্রব্যে নীল বা সবুজ রং ব্যবহার করা হয়, তাহলে প্রস্রাবের রং সবুজ বা নীল হতে পারে।

তবে এটি তখনই ঘটবে, যখন ওই খাবার অনেক বেশি পরিমাণে খাওয়া হয়।

চেতনানাশক, ভিটামিন, অ্যান্টিহিস্টামিনের মতো কিছু ওষুধ খাওয়ার কারণেও প্রস্রাবের রঙ সবুজ বা নীল হয়ে যেতে পারে।

একটি মজার তথ্য হল যে, কিছু ব্যাকটেরিয়া আছে, যেগুলো এমন যৌগ তৈরি করে যে তা সবুজ বর্ণের হয়।

সিউডোমোনাস অ্যারুগিনোসা নামক ব্যাকটেরিয়া নীল ও সবুজ রঙের পাইওসায়ানিন যৌগ তৈরি করে।

এটি মূত্রনালীর সংক্রমণের একটি বিরল কারণ। এটি হলে একজন ব্যক্তিকে প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া এবং ব্যথার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।

বেগুনি
প্রস্রাব বেগুনি মানে ইন্ডিগো বা পার্পল বা ভায়োলেট রং ধারণ করার ঘটনাও খুব বিরল। এর একটি সম্ভাব্য কারণ হল পোরফাইরিয়া।

এটি এক ধরণের জেনেটিক রোগ, যা ত্বক এবং স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে।

এটি আরেকটি কারণেও হতে পারে। ‘পার্পল ইউরিন ব্যাগ সিনড্রোম’ নামক একটি বিরল রোগ আছে, যা ইউরিনারি ইনফেকশন বা সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের প্রস্রাব নির্গমনের জন্য ক্যাথিটার থাকলে এক্ষেত্রে তাতে পার্পল রংয়ের দাগ দেখা যায়।

বেগুনি বা গোলাপী
এখানে আরও একবার রক্ত ও বিটরুটের সম্পর্ক প্রসঙ্গে বলতে হবে।

অল্প পরিমাণে বিটরুট খেলে প্রস্রাবের রং গাঢ় লালের বদলে গোলাপি হতে পারে।

যখন এটি ঘটে, তখন ডাক্তাররা এটিকে রোজ ওয়াইনের সাথে তুলনা করেন।

অন্যান্য রং
তবে প্রস্রাবের আরও কিছু রং হতে পারে, যা রংধনুর সাত রঙে নেই।

কখনও কখনও প্রস্রাব অতিরিক্ত গাঢ়, মানে বাদামী বা কালো রঙের হতে পারে। ডাক্তাররা এটিকে কোকা-কোলার সাথে তুলনা করতে পারেন।

গুরুতর রোগ র‍্যাবডোমাইলাইসিসের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটতে পারে। এটি অত্যধিক পরিশ্রম বা কিছু ওষুধ ব্যবহারের কারণেও হতে পারে।

আবার, এটি বিলিরুবিন থেকেও আসতে পারে। বিলিরুবিন প্রস্রাবকে এতটাই গাঢ় করে তোলে যে এটি কমলার পরিবর্তে বাদামী দেখায়। কিন্তু প্রস্রাবে থাকা রক্তের কারণেও এমনটা হতে পারে।

কিডনির প্রদাহও রক্তপাতের কারণ হতে পারে। কিডনির এই সমস্যার কারণে প্রস্রাব মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে লাল থেকে বাদামী হয়ে যায়।

এখানেই শেষ নয়। বর্ণহীন প্রস্রাবও আছে।

তবে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হওয়া উচিৎ নয়। আর অনেক বেশি পাতলা প্রস্রাবও কিছু রোগের ইঙ্গিত দিতে পারে, সেটি ডায়াবেটিস হতে পারে বা অতিরিক্ত মদ্যপান হতে পারে।

এই প্রতিবেদনটি থেকে আমরা জানতে পারছি যে আমাদের প্রস্রাব কতগুলো বর্ণের হতে পারে এবং কোন রং কোন সমস্যাকে নির্দেশ করে। তবে চিকিৎসকদের মতে এটি কখনও সম্পূর্ণ তালিকা না।

আপনার প্রস্রাবের রং যদি অস্বাভাবিক হয় এবং আপনি যদি তার কারণ বুঝতে চান, তাহলে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।

এবং, সেইসাথে প্রয়োজন মত পানিও পান করুন।

2
General Discussion / মাংকিপক্স কী?
« on: August 28, 2024, 01:29:49 PM »
বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যে জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। কারণ এখনও পর্যন্ত প্রায় ১১৬টি দেশে মাংকি পক্সের (এম-পক্স) প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল দুদিন আগে জানিয়েছে–২০২২ সালের শুরু থেকে গত জুলাই (২০২৪) মাসের শেষ পর্যন্ত  সারা বিশ্বের ১১৬টি দেশে মাংকি পক্সের ৯৯ হাজার ১৭৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং মারা গেছেন ২০৮ জন। অপরদিকে ২০২৪ সালে আফ্রিকান সিডিসি জানিয়েছে, ১৪ হাজার ৭১৯ জন সন্দেহভাজন এবং ২ হাজার ৮২২ জনের দেহে এমপক্স শনাক্ত হয়েছে, এদের মধ্যে ৫১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।  মাংকি পক্স নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এখনও জানেন না অনেকেই। তাই এই রোগ নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

মাংকি পক্স কী?
মাংকি পক্স একটি ভাইরাসজনিত প্রাণিবাহিত (জুনোটিক) রোগ। ১৯৫৮ সালে ডেনমার্কের একটি ল্যাবে বানরের দেহে সর্বপ্রথম এ রোগ শনাক্ত হয়—যার কারণে এর নামকরণ করা হয় মাংকি পক্স। তবে এই রোগের জন্য একমাত্র বানর দায়ী নয় বলে মনে করেন গবেষকরা। তাদের মনে করেন, এই রোগটির প্রাদুর্ভাব ১৯৭০ সাল থেকে প্রধানত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার ১১টি দেশে দেখা যায়। ইতোপূর্বে ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, সিঙ্গাপুরসহ অন্যান্য দেশেও এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তবে সেসব ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আফ্রিকার দেশগুলোতে ভ্রমণের ইতিহাস, অথবা ওইসব দেশ থেকে আমদানি করা প্রাণীর সংস্পর্শে আসার ইতিহাস ছিল।

এমপক্স কেন হয়?

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার দেওয়া তথ্যমতে, এমপক্সে আক্রান্ত বানর থেকে ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, খরগোশ বর্গের পোষা প্রাণীর মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে। তবে সাধারণত গৃহপালিত প্রাণী  (যেমন- গরু, ছাগল, ভেড়া, হাঁস, মুরগি, মহিষ) থেকে এ রোগ ছড়ায় না। তবে সম্প্রতি মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ানোর প্রবণতা দেখা গেছে।

বিজ্ঞানীদের মতে, এমপক্স ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে। এই পক্সে সংক্রমিত ব্যক্তিকে স্পর্শ করা, চুমু দেওয়া, যৌন সম্পর্ক থেকে এটি ছড়াতে পারে। সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের খুব কাছাকাছি থাকলেও সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়ে যায়।

এছাড়া এমপক্স আক্রান্ত বন্যপ্রাণী শিকার করা, চামড়া তোলা, মাংস কাটা, এমনকি রান্নার সময়, কম তাপে রান্না করা খাবার খেলে, সেখান থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। এমপক্স আক্রান্ত প্রাণীর কাছাকাছি গেলেও সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি আছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন, এমপক্স সংক্রমিত রোগীর ব্যবহার করা পোশাক, তোয়ালে, বিছানার চাদর, যেকোনও ব্যবহার্য জিনিসপত্র থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে। সংক্রমিত রোগীর ব্যবহার করা ইনজেকশনের সুঁই অন্য কারও শরীরে প্রবেশ করালেও এমপক্স হতে পারে।

এছাড়া অন্তঃসত্ত্বা নারী এমপক্স আক্রান্ত হলে অনাগত সন্তানও এমপক্স ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। এমপক্স শুকিয়ে যাওয়ার পর ফোসকার আবরণ যদি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, সেখান থেকেও ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে।

এমপক্সের লক্ষণ কী

চিকিৎসকদের মতে, মাংকিপক্স রোগের সাধারণ উপসর্গগুলো হচ্ছে—জ্বর (৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বা ১০০ ফারেনহাইটের বেশি তাপমাত্রা), প্রচণ্ড মাথাব্যথা, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া ও ব্যথা (লিম্ফ্যাডিনোপ্যাথি), মাংসপেশিতে ব্যথা, অবসাদগ্রস্ততা, সাধারণত জ্বরের ৩ দিনের মধ্যে ফুসকুড়ি হওয়া—যা মুখ থেকে শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে হাতের তালু, পায়ের তালুসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। উপসর্গগুলো সাধারণত ২ থেকে ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

মাংকিপক্স রোগীর দেহে লক্ষণ দেখা না দিলে রোগী থেকে অন্য কারও মধ্যে ভাইরাসটি ছড়ায় না। শরীরে ফুসকুড়ি (ভেসিকল, পাস্তিউল) দেখা দেওয়া থেকে শুরু করে ফুসকুড়ির খোসা (ক্রাস্ট) পড়ে যাওয়া পর্যন্ত আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে রোগ ছড়াতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলো আপনা-আপনি সেরে যায়।

এম পক্সের ঝুঁকিতে কারা

স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে, নবজাতক শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী, দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি (যেমন- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, কিডনি রোগী, ক্যানসারের রোগী, এইডসের রোগী) এই রোগের ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি থাকেন।

লক্ষণ দেখা দিলে যা করতে হবে

আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে অথবা আক্রান্ত দেশ থেকে ফিরে আসার ২১ দিনের মধ্যে জ্বর এলে এবং ফুসকুড়ি দেখা দিলে—এমপক্স ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে অতিদ্রুত স্বাস্থ্য অধিদফতরের হটলাইন ১০৬৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

এমপক্সের চিকিৎসা কী?

চিকিৎসকরা বলছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গগুলো আপনা-আপনি উপশম হয়ে যায় বলে নির্দিষ্ট চিকিৎসা প্রয়োজন হয় না। তবে উপসর্গ নিরাময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হয়। যেমন- জ্বর হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ, ফুসকুড়ি শুকনো রাখা, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ, পরিমিত বিশ্রাম, পর্যাপ্ত পানি ও তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ ইত্যাদি। এছাড়া শারীরিক জটিলতা দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মাংকি পক্সের লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে আসা থেকে বিরত থাকতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি এবং সেবা প্রদানকারী উভয়কেই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত দ্রব্যাদি সাবান/ জীবাণুনাশক/ ডিটারজেন্ট দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। আক্রান্ত জীবিত কিংবা মৃত বন্যপ্রাণী থেকে দূরে থাকতে হবে।’

এ রোগে কী কী জটিলতা হতে পারে?

প্রায় সব ক্ষেত্রেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে যায়। তবে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের (যেমন- অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, কিডনি রোগী, ক্যানসারের রোগী, এইডসের রোগী, নবজাতক শিশু, অন্তঃসত্ত্বা নারী) ক্ষেত্রে এটি শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। শারীরিক জটিলতাগুলোর মধ্যে রয়েছে—ত্বকে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, মানসিক বিভ্রান্তি, চোখে প্রদাহ এবং দৃষ্টিশক্তি লোপ পেতে পারে।

রোগীকে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দিতে হবে। এমপক্স নিয়ে আমাদের উদ্বেগের কারণ নির্ভর করবে—আমাদের আশপাশের দেশগুলোতে সংক্রমণ কেমন তার ওপর। এজন্য আমাদের এখন থেকেই দেশের প্রবেশপথগুলোতে স্ক্রিনিং জোরদার করতে হবে। লক্ষণ দেখা দেওয়া ব্যক্তিদের পরীক্ষা করাতে হবে। এমপক্স আক্রান্ত দেশ থেকে আসা যাত্রীদের বিশেষ নজর দিতে হবে।’

3

আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন আজকে আমরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে কথা বলবো সেটি হচ্ছে কেগেল বা ক্যাগেল ব্যায়াম (Kegel Exercise)। অনেকেই এই বিষয় সম্পর্কে জানেন না বা জানলেও ভূল জানেন। এই পোস্টটি পুরোপুরি পড়লে এই সম্পর্কে আপনার আইডিয়া পরিস্কার হবে । তো কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক ।


কেগেল ব্যায়াম বা Kegel Exercise আপনার পেলভিক ফ্লোরের পেশী শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। পেলভিক ফ্লোর পেশী হল সেই পেশীগুলি যা আপনি প্রস্রাবের প্রবাহ বন্ধ করতে ব্যবহার করেন। অর্থাৎ প্রসাবের প্রবাহ বন্ধ করতে যেই পেশী ব্যবহার করা হয় তাকে পেলভিক ফ্লোর পেশী বলা হয় । এই পেশীগুলিকে শক্তিশালী করলে আপনি প্রস্রাব বের হওয়া বা দুর্ঘটনাক্রমে গ্যাস বা মলত্যাগ রোধ করতে পারবেন ।

কেগেল এক্সারসাইজ কি ?
কেগেল ব্যায়াম হল পেলভিক ফ্লোর পেশীগুলির সংকোচন-প্রসারণ ব্যায়াম যা এই পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে প্রস্রাব, মলত্যাগ এবং যৌনতার মতো শারীরিক ক্রিয়াকলাপে সহায়তা করে ।


কেগেল ব্যায়ামের উপকারিতা
আমাদের জীবনে ব্যায়াম করার উপকারিতা অনেক, ব্যায়াম আমাদের শরীর ও মনকে সজীব রাখে আমাদের জীবনকে আনন্দময় করে তুলতে সাহায্য করে তাই আমাদের সকলেরই নিয়মিত ব্যায়াম করা দরকার । কেগেল ব্যায়ামের উপকারিতা অনেক নিচে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো – 

কেগেল আপনার দাম্পত্য জীবনকে সুন্দর করে  তুলতে পারে
মেয়েদের ক্ষেত্রে কেগেল ব্যায়াম যোনিকে শক্ত করে তোলে এবং প্রচণ্ড উত্তেজনার তীব্রতা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে। মনে করা হয় অর্গাজমের ক্ষেত্রে পেলভিক ফ্লোরের পেশীগুলি অত্যাবশ্যক।

 আর পুরুষদের ক্ষেত্রে কেগেল ব্যায়াম পেনিসে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং দ্রুত বীর্যপাত কমাতে সাহায্য করে । এটি প্রমানিত যে কেগেল ব্যায়াম ছেলেদের দ্রুত বীর্যপাত কমাতে সাহায্য করে ।

 

কেগেল সামগ্রিক ফিটনেস ধরে রাখতে সাহায্য করে
আমরা যারা চাকরি করি তাদের দীর্ঘক্ষণ অফিসে বসে থাকতে হয় । এই দীর্ঘক্ষণ  বসে থাকার জীবনযাত্রা এবং মেয়েদের গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন উপায়ে আপনার শরীরকে ধ্বংস করতে পারে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে অ্যারোবিক ফিটনেস এবং শক্তি উভয় কমে যেতে শুরু করে । তাই শরীরের সামগ্রিক ফিটনেস ধরে রাখতে পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম একটি অনন্য উপায় । প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট এই ব্যায়াম আমাদের শরীরের ফিটনেস ধরে রাখতে অনেকটাই সাহায্য করে ।

পুরুষদের জন্য কেগেল ব্যায়াম
কেগেল ব্যায়াম নিয়মিত অনুশীলন করলে পেলভিক ফ্লোর পেশী শক্তিশালী হয় ।
কেগেল ব্যায়াম পুরুষের পেনিসে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এটি পুরুষদের দীর্ঘ সময়ের জন্য উত্তেজিত রাখতে পারে ।
পুরুষরা যদি প্রতিদিন কেগেল ব্যায়াম করেন, তাহলে এটি দ্রুত বীর্যপাত সমস্যার সমাধান করতে পারেন ।
যেসব পুরুষের প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণে অক্ষম, তারা অবশ্যই কেগেল ব্যায়াম করবেন।
অনেক সময় পুরুষদের তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়, যার কারণে তার পার্টনার অর্গ্যাজম পায় না। এক্ষেত্রে কেগেল ব্যায়াম করা উপকারী হতে পারে।
 

মহিলাদের জন্য কেগেল ব্যায়াম
কেগেল ব্যায়ামের নিয়মিত অনুশীলন পেলভিক ফ্লোর পেশীকে শক্তিশালী করে।
এছাড়াও প্রস্রাবের ফুটো রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কেগেল ব্যায়াম করলে আপনার শরীর স্বাভাবিক প্রসবের জন্য প্রস্তুত হয়।
প্রতিদিন কেগেল ব্যায়াম করলে পিঠের ব্যথা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
এই ব্যায়াম করলে মহিলাদের মধ্যে যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় ।
এই ব্যায়াম করলে মহিলাদের শরীর মেনোপজের জন্য প্রস্তুত হয়।
কেগেল ব্যায়াম প্রসব ব্যথা কমাতে সাহায্য করে ।
 

কেগেল ব্যায়ামের অসুবিধা
কেগেল ব্যায়াম পেলভিক পেশী শক্তিশালী করে। তবে আপনাকে এই ব্যায়ামটি খুব সাবধানে করতে হবে। কিছু পরিস্থিতিতে, এই ব্যায়াম করা থেকে দূরে থাকা উচিত তাছাড়া এই ব্যায়াম আপনার ক্ষতি করতে পারে । যেমন-

কেগেল ব্যায়াম করার আগে সর্বদা আপনার মূত্রথলি খালি রাখতে হবে ।
আপনার যদি সম্প্রতি অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে তবে কেগেল ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন ।
যদি যোনি অঞ্চলে ব্যথা, জ্বালা বা কোন সংক্রমণ থাকে তবে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে কেগেল ব্যায়াম করা উচিত।
 

কাদের জন্য কেগেল ব্যায়াম জরুরি ?
আপনার পেলভিক ফ্লোরের পেশীগুলির উপর চাপ সৃষ্টি করে এমন যে কোন কিছু পেশীগুলোকে দুর্বল করতে পারে । যাদের এই পেশীগুলো দুর্বল তারা এই ব্যায়াম করতে পারেন ।

গর্ভাবস্থায়
একটি সি-সেকশন সহ প্রসব।
স্থূলতা (বডি মাস ইনডেক্স, বা BMI 25 – এর বেশি) থাকা।
আপনার পেলভিক এলাকায় সার্জারি করা হলে ।
আপনার পেলভিক ফ্লোরের পেশী, সেইসাথে আপনার মলদ্বার এবং মলদ্বারের পেশীগুলি স্বাভাবিকভাবেই বয়সের সাথে দুর্বল হয়ে যায়। তাই বার্ধক্যে এই ব্যায়াম করা যেতে পারে ।
মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত স্ট্রেনিং (কোষ্ঠকাঠিন্য) বা দীর্ঘস্থায়ী কাশি থাকলে ।
 

আমি কিভাবে আমার পেলভিক ফ্লোর পেশী খুঁজে পাব?
আপনার পেলভিক ফ্লোরের পেশীগুলি খুঁজে পেতে, আপনি যখন টয়লেটে বসে থাকবেন তখন আপনার প্রস্রাবের প্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করুন। শুধুমাত্র এটি করুন যতক্ষণ না আপনি বুঝতে পারছেন কোন পেশীটি আপনার প্রস্রাব বন্ধ করার জন্য দায়ী, সেটিই আপনার পেলভিক ফ্লোর পেশি।

মেয়েদের ক্ষেত্রে আরও একটি উপায় হচ্ছে, আপনি আপনার যোনিতে একটি আঙুল ঢোকাতে পারেন এবং এটির চারপাশে আপনার যোনির পেশীগুলিকে চেপে দিতে পারেন।  যখন আপনি আপনার আঙুলের চারপাশে চাপ অনুভব করবেন সেই পেশিগুলোই হলো আপনার পেলভিক ফ্লোর পেশি । 

কেগেল ব্যায়াম করার পদ্ধতি
এই ব্যায়াম করতে আমরা জিমে যেতে চাই কিন্তু কেগেল ব্যায়াম করতে আপনার জিমে যাওয়ার দরকার নেই। আপনি সহজেই বাড়িতে এই ব্যায়াম অনুশীলন করতে পারেন। কেগেল ব্যায়াম কিভাবে করবেন তা নিচে দেওয়া হলো –

প্রথমে সমান স্থানে সোজা হয়ে পিঠের উপর শুয়ে পড়ুন।
এখন কেগেল পেশী চিহ্নিত করুন। কেগেল পেশীগুলি প্রস্রাবের প্রবাহ বন্ধ করতে ব্যবহৃত হয়।
যদি আপনি কেগেল পেশী সম্পর্কে জেনে থাকেন তবে এখনই ব্যায়াম শুরু করা যেতে পারে।
স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিন, কেগেল পেশীগুলিকে 5-6 সেকেন্ডের জন্য সংকুচিত করুন।
তারপর পেশীগুলিকে কিছুটা বিশ্রাম দিন। এর পরে এই প্রক্রিয়াটি আবার পুনরাবৃত্তি করুন।
মনে রাখবেন এই ব্যায়াম করার সময় কোমর, পেট ও উরুর পেশী ঢিলে রাখুন।
আপনি এই ব্যায়ামটি দিনে ৩ বার করতে পারেন।

কেগেলস কীভাবে শুরু করবেন তার একটি নমুনা সময়সূচী নিচে দেওয়া হলো:
প্রথমে, আপনার পেলভিক ফ্লোরের পেশীগুলি সনাক্ত করুন (উপরের পদক্ষেপগুলি ব্যবহার করে)।
তিন সেকেন্ডের জন্য আপনার পেলভিক ফ্লোর পেশী শক্ত করে শুরু করুন, তারপর তিন সেকেন্ডের জন্য শিথিল করুন। এই এক সেট Kegel ।
এটি ১০ বার পুনরাবৃত্তি করার চেষ্টা করুন। যদি ১০ খুব কঠিন মনে হয় তাহলে কিছু কমিয়ে দিন। একে সেট বলে।
সকালে এক সেট এবং রাতে এক সেট করুন।
আস্তে আস্তে ব্যায়ামের সেটের সংখ্যাগুলি বাড়ানোর চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার কেগেলগুলিকে তিন সেকেন্ডের জন্য ধরে (সংকোচিত) রাখার এবং তিন সেকেন্ডের জন্য শিথিল করার পরিবর্তে, প্রতিটি পাঁচ সেকেন্ডের জন্য ধরে রাখুন এবং শিথিল করুন।
আপনি সঠিকভাবে কেগেল করছেন কিনা তা আপনি কিভাবে বুঝবেন ?
কেগেলস করার পরে যদি আপনার পেট, পিঠের নীচে বা মাথায় ব্যথা হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনি সম্ভবত আপনার শ্বাস আটকে রেখেছেন বা ভুল পেশী ক্লেঞ্চ করছেন।

আপনি যদি সঠিকভাবে কেগেল করেন তাহলে আপনি লক্ষ্য করবেন যে আপনার কিছু লক্ষণ কয়েক সপ্তাহ ধরে ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি দেখতে পারবেন যে আপনি প্রায়শই প্রস্রাব করেন না।


কেগেল ব্যায়াম করার ছবি :

কেগেল ব্যায়াম করার ছবি ১



কেগেল ব্যায়াম করার ছবি ২

4



ফ্রোজেন শোল্ডার কাঁধের এমন একটা রোগ, যাতে ব্যথার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং এক সময় তা অসহনীয় হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে কাঁধের নড়াচড়াই অসম্ভব হয়ে পড়ে।

কারণ : ফ্রোজেন শোল্ডারের তেমন কোনো কারণ জানা যায়নি। ডায়াবেটিস, হাইপারলিপিডেমিয়া বা শরীরে অতিরিক্ত মেদ, হাইপার থাইরয়েড, হৃদরোগ ও প্যারালাইসিস রোগীদের মধ্যে ফ্রোজেন শোল্ডারের প্রকোপ বেশি দেখা গেছে। কাঁধের অস্থিসন্ধিতে যে পর্দা থাকে, তার দুটি আবরণ থাকে। একটি ভেতরের দিকে, আরেকটি বাইরের দিকে। এ দুই আবরণের মাঝখানে কিছুটা ফাঁকা জায়গা থাকে, যেখানে এক ধরনের তরল পিচ্ছিল পদার্থ থাকে, যা কাঁধের নড়াচড়ার জন্য জরুরি। এ রোগে ওই দুই পর্দার মাঝখানের জায়গা ও পিচ্ছিল পদার্থ কমে যায়, ফলে কাঁধের নড়াচড়া মসৃণভাবে হয় না এবং প্রচুর ব্যথার সৃষ্টি করে। ব্যথা দিন দিন বাড়তে থাকে এবং এক সময় তা অসহ্য হয়ে পড়ে। সাধারণত মধ্যবয়সেই এ রোগ বেশি দেখা যায়।

উপসর্গ : ফ্রোজেন শোল্ডার রোগীর কাঁধের নড়াচড়া, বিশেষ করে হাত ওপরের দিকে উঠানো এবং হাত ঘুরিয়ে পিঠ চুলকানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কাঁধের এক্স-রে করলে তা প্রায় স্বাভাবিক পাওয়া যায়। কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে সেখানে আগে আঘাত ছিল বলে জানা যায়। কদাচিৎ কাঁধ কিছুটা শুকিয়ে যাওয়ার মতো মনে হতে পারে। এটা হয় ব্যথার কারণে, দীর্ঘদিন আক্রান্ত কাঁধ ব্যবহার না করলে। আবার কিছু রোগীর ক্ষেত্রে হাত ঝিঁঝি করা, শক্তি কম পাওয়া, এমনকি পাশাপাশি হাত একেবারেই উঠাতে না পারার মতো লক্ষণ দেখা যায়। তাদের খুব সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করা উচিত, রোগটি ফ্রোজেন শোল্ডার, নাকি স্নায়ুরোগজনিত কোনো সমস্যা, নাকি অতীতের আঘাতের ফলে রোটেটর কাফের ছিঁড়ে যাওয়া জনিত কোনো সমস্যা। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসার ধরনও ভিন্ন হয়।

চিকিৎসা : কোনো ধরনের অপারেশন ছাড়াই এ রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। প্রথমে রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে, এটি খুব সাধারণ একটি সমস্যা। পাশাপাশি হালকা কিছু ব্যথানাশক দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে সঠিক ও বিশেষ কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনা থেকে ফ্রোজেন শোল্ডার ভালো হয়ে যায়, যদিও কিছুটা সময় লাগে। ব্যায়াম বা ব্যথানাশকে কাজ না হলে, অর্থোপেডিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে কাঁধের অস্থিসন্ধিতে স্টেরয়েড ইনজেকশন প্রয়োগও করতে হতে পারে। এটার অবশ্য ফল বেশ ভালো এবং রোগীরাও অনেক সময় এটি নেয়ার জন্য উদগ্রীব থাকেন। তবে স্টেরয়েড ইনজেকশন দিলেও ফ্রোজেন শোল্ডার হলে ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই, যা সব সময় চালিয়ে যেতে হবে। তাই ফ্রোজেন শোল্ডার নামক অর্ধপঙ্গুত্ব নিয়ে আর বসবাস নয়।


5
চুলকানির রোগগুলোর মধ্যে স্ক্যাবিস একটি বিরক্তিকর ও বিব্রতকর সমস্যা। সহজ বাংলায় একে বলা হয় খুজলি বা খোসপাঁচড়া। এটিকে বৈজ্ঞানিকভাবে স্ক্যাবিস বলা হয়ে থাকে।

স্ক্যাবিসে বেশি চুলকানি থাকে এবং এটি একটি ছোঁয়াচে রোগ। কতগুলো লক্ষণ দেখে আমরা বুঝতে পারি এটি খোসপাঁচড়া কিনা। এটিতে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। এর কারণ তাদের চামড়া বেশ সংবেদনশীল থাকে।

কতগুলো কারণে শিশুদের  খোসপাঁচড়া হয়ে থাকে। যেমন-তারা হাত-পা ভালো করে ধুতে জানে না। হাইজেনিক ব্যবহার তারা জানে না।

এটি প্রথমে ফুসকুড়ির মতো দেখা যাবে, লাল লাল দানা দেখা দেবে। হাতের আঙ্গুলের ফাঁকে হয় সাধারণত, এরপর কনুইতে, এলবোতে এবং বগলে হয়ে থাকে। পরে সেটি নাভির কাছে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে।

বাচ্চাদের খোসপাঁচড়া দেখা দেওয়ার পর সঠিক চিকিৎসা দিতে না পারলে তারা চুলকিয়ে ইনফেকশন করে ফেলে। একটা পর্যায়ে সেখানে পুঁজ দেখা দেয়।
শিশুদের ক্ষেত্রে ইনফেকশন হলে সেটি কমানোর ওষুধ আমরা আগে দিই। এরপর গায়ে লাগানোর ওষুধ দিয়ে থাকি। এক্ষেত্রে গোটা ফ্যামিলিকে চিকিৎসা নিতে হয়।

বড়দের ক্ষেত্রে যখন স্ক্যাবিস হয় তখন চেনার লক্ষণ প্রায় একই। অনেক বেশি চুলকাবে বিশেষ করে রাতে বেশি চুলকানি হয়। পরিবারের একজন আক্রান্ত হলে প্রায় সবাই আক্রান্ত হয়ে পড়ে।

এক বিছানায় একত্রে অনেকেই গাদাগাদি করে ঘুমালে, এক তোয়ালে বা বালিশ–চাদর ব্যবহার করলে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায় এ রোগ। এ ছাড়া অনেক শিশু বিদ্যালয় থেকেও স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হয়।

সাধারণ কিছু হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এ ধরনের বিরক্তিকর রোগ এড়ানো সম্ভব। পরিবারের সদস্যদের তোয়ালে, জামাকাপড় আলাদা থাকা উচিত। এ ছাড়া একজনের গামছা-তোয়ালে ও বালিশ অন্যের ব্যবহার করা উচিত নয়। জামাকাপড় ও নিয়মিত ব্যবহার্য জিনিস নিয়মিত সাবান দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে অন্তত চার ঘণ্টা শুকাতে হবে।

স্ক্যাবিসের চিকিৎসায় পারমিথ্রিন ক্রিম সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া অ্যান্টিহিস্টামিন খেতে হবে। ওষুধের ব্যবহার করতে হবে নিয়ম মেনে। পরিপূর্ণ চিকিৎসা না দিলে পূণরায় স্ক্যাবিস হতে পারে।

পরিস্থিতি বেশি খারাপ হলে বা ঘা হয়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে অ্যান্টিবায়োটিক লাগতে পারে।

ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে আসেন এমন সবারই একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে। চিকিৎসা নেওয়ার পর সব কাপড়চোপড়, চাদর, তোয়ালে, বালিশ, গরম সাবান–পানি দিয়ে ধুয়ে কড়া রোদে শুকাতে হবে। কড়া রোদ না পেলে কাপড় শুকানোর পর ইস্তিরি করে নিতে হবে।

খোসপাঁচড়া সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে কিডনিকেও প্রদাহে আক্রান্ত করতে পারে। এই ইনফেকশন কিডনি রোগের সৃষ্টি করতে পারে।

6


গর্ভধারণের সময়টি প্রত্যেকটি মায়ের জন্য অনেক আনন্দের একটা সময়। পাশাপাশি মূল্যবান একটা সময়। প্রত্যেকটি মা-ই চেষ্টা করেন তার সন্তানের জন্য নিজেকে ভালো রাখতে এবং তার জন্যই আজকে আমরা একটু আলোচনা করব যে, গর্ভধারণের সময় একজন মায়ের আসলে ঠিক কীভাবে জীবনটা পার করা উচিত বা কী কী কাজ তার করা উচিত।

পুষ্টিতে নজর

এ সময়টাতে অবশ্যই একজন মাকে তার পুষ্টির দিকে লক্ষ রাখতে হবে; তার শরীরের যত্ন নিতে হবে এবং কী খাওয়া উচিত বা কী খাবে না। এ ক্ষেত্রে আমি যদি বলি যে, আমরা সবসময় জেনে এসেছি, একজন মা যখন প্রেগন্যান্ট (গর্ভবতী) হন, সাথে সাথে তার খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে ফেলতে হবে; তাকে অনেক বেশি খেতে হবে। কারণ তার সাথে এখন আরেকজন মানুষও আছে যে খাচ্ছে।

এটা অবশ্যই ঠিক কথা, কিন্তু আমরা যদি প্রেগন্যান্সির টাইমটাকে তিন মাস, তিন মাস করে তিনটা ভাগে ভাগ করি, ফার্স্ট ট্রাইমেস্টার, সেকেন্ডে ট্রাইমেস্টার, থার্ড ট্রাইমেস্টার, এভাবে আমরা লক্ষ করলে দেখব যে, প্রথম ট্রাইমেস্টার বা প্রথম তিন মাসে মায়ের ওজন যদি অতিরিক্ত পরিমাণে নাও বাড়ে, কোনো সমস্যা নেই। কারণ এই সময়টিতে অনেকেরই দেখা যায় বমি বমি ভাব আসে বা শরীরে যে হরমোনাল চেঞ্জ আসে, এটার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সময় লেগে যায়।

কাজেই এই সময়টিতে আমরা খুব বেশি হতাশ হয়ে যাব না যে, আমার তো ওজন তেমন বাড়ল না। কাজেই তখন যদি আমরা একজনের খাবারই খাই, কিন্তু পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করি, মোর দ্যান এনাফ (যথেষ্টর চেয়ে বেশি)।

ওজন কতটুকু বাড়াব

আমরা যদি আমাদের প্রেগন্যান্সির পিরিয়ডের জার্নিটাকে দুই ভাগে ভাগ করি, একটা সময় হচ্ছে আমাদের শরীরে শক্তি সঞ্চয় হচ্ছে; মায়ের শরীরে। আরেকটা সময় মায়ের শরীরের শক্তিটা ভেঙে যাচ্ছে।

প্রথম ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত মায়ের শরীরের শক্তিটা সঞ্চয় হতে থাকে। এর পরের সপ্তাহ, এর পরের সময়টিতে বা যদি আমরা বলি লাস্ট ট্রাইমেস্টারে যেটা হয়, মায়ের শরীরের শক্তি তখন ভাঙতে থাকে এবং তা শিশুর শরীরে গিয়ে জমা হতে থাকে। এভাবে আমরা যদি বলি যে, আমরা তাহলে সর্বমোট ওজন কতটুকু বাড়ানোর চেষ্টা করব?

যাদের আমাদের ওজনটা স্বাভাবিক থাকে, তাদের ওজন বাড়াতে হবে সাড়ে ১১ থেকে ১৬ কেজি পর্যন্ত। যারা আমরা ওভারওয়েট থাকি, তাদের ক্ষেত্রে আমাদেরকে এটা বাড়াতে হবে সাত থেকে সাড়ে ১১ পর্যন্ত। যারা ওবিস (স্থূল) থাকি আগে থেকেই, তাদের ক্ষেত্রে ওজনটা বাড়াতে হবে পাঁচ থেকে ৯ কেজি পর্যন্ত।

আমি যদি আরেকটু ভেঙে বলি যে, তাহলে প্রতি সপ্তাহে একজন মায়ের কতটুকু করে ওজন বাড়ানো উচিত সেকেন্ড এবং থার্ড ট্রাইমেস্টার থেকে? কারণ প্রথম ট্রাইমেস্টারে আমাদের ওই রকম ওজন বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। সেকেন্ড এবং থার্ড ট্রাইমেস্টার থেকে আমি যদি আবারও বলি, যারা আন্ডারওয়েট (যথেষ্ট ওজনের কম) থাকে, তাদেরকে ওজনটা বাড়াতে হবে প্রতি সপ্তাহে দশমিক ৫ কেজি (আধা কেজি) করে। তার পরবর্তীতে যাদের সাধারণ ওজন থাকে, তাদের বাড়াতে হবে দশমিক ৪২ কেজি করে (আধা কেজির কম)। যারা সাধারণত ওবিস, তাদের ক্ষেত্রে ওজনটি বাড়াতে হবে প্রতি সপ্তাহে দশমিক ২২ কেজি করে।

কী খেতে হবে

আমরা জানলাম যে, কখন আমাদের ওজনটা বাড়াতে হবে, কখন আমাদের বাড়তি খাবার খেতে হবে। এখন আমরা আসি আসলে আমাদেরকে কী খেতে হবে।

যদি প্রথমেই বলি যে, আমাদের অনেকেরই ধারণা থাকে যে, ভাতের পরিমাণটা একটু বেশি খেতে হবে। কারণ আমার শরীরে এখন আরেকজন নতুন ছোট্ট মানুষ আছে; তারও খাবারের প্রয়োজন, কিন্তু এই ক্ষেত্রে আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে হাই গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার খাই বা আমরা যদি খুব বেশি কার্বোহাইড্রেট (শর্করা) নিয়ে থাকি, এর ফলে যেটা হবে, আমাদের শিশুর ওজন বয়সের তুলনায় অতিরিক্ত বেশি আসবে, যেটা পরবর্তীতে আমার শিশুর জন্য চাইল্ডহুড অনসেট মেটাবলিক সিনড্রোম বা ডায়াবেটিস বা অন্য রকমের পরবর্তী জীবনে আমার সন্তানকে এটা একটা সাফার করতে হবে। এ কারণে অবশ্যই আমরা কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খাব, কিন্তু চেষ্টা করব লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার খেতে। আমরা একটু শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করব, আঁশজাতীয় শাকসবজি খাব আমরা।

আমরা আলু খেতে পারি। কোনো সমস্যা নেই। আলু কিন্তু বেশ ভালো একটা খাবার। অনেকে ভেবে থাকি যে, আলু হয়তো ওজন বাড়িয়ে দেবে, আমার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এটা আসলে ঠিক না। আমরা পরিমিত পরিমাণে আলু খেতে পারব বা অন্যান্য শাকসবজিও খেতে পারব; ফল খেতে পারব। আমরা ভাত এবং রুটিও কিন্তু খেতে পারব অল্প পরিমাণে। লাল চালের ভাত অথবা লাল আটার রুটি এ ক্ষেত্রে অনেক উপকারী।

প্রোটিনের ভূমিকা


প্রোটিন খুবই প্রয়োজনীয় উপাদান এই প্রেগন্যান্সি পিরিয়ডে। কী কারণে আমাকে প্রোটিনটি রাখতে হবে? কারণ প্রোটিন আমার সন্তানের শরীর গঠনের জন্য অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা রাখবে এবং এই ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে, ফার্স্ট ট্রাইমেস্টারে একজন মা এক গ্রাম পার ডে (প্রতিদিন) প্রোটিন নেবেন। সেকেন্ড ট্রাইমেস্টারে তিন গ্রাম পার ডে প্রোটিন নেবেন এবং থার্ড ট্রাইমেস্টারে নাইন গ্রাম পার ডে প্রোটিন উনাকে নিতে হবে।

ওভারঅল এ প্রোটিনটা কীভাবে পেতে পারি আমাদের খাবারে? আমরা ডিম খেতে পারি, আমরা দুধ খেতে পারি, আমরা মাছ খেতে পারি। মাছ খুবই উপকারী একটা খাবার যেটা কিনা আমার সন্তানের বুদ্ধি বাড়াতে বা মেধার বিকাশে অসাধারণ সাহায্য করবে। এ ছাড়াও আমরা দুধ বা দুধজাতীয় খাবারগুলো নিতে পারি বা আমরা আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় মাংস খেতে পারি।

আমরা একটু চেষ্টা করব যে, চর্বিজাতীয় মাংসগুলো বাদ দিতে। যেটা আমাদের জন্য উপকারী থাকবে, আমরা ওই খাবারগুলোর ভেতরে খাওয়ার চেষ্টা করব।

দুধ এর মধ্যে খুবই ভালো একটা উপাদান, যেটা কিনা আমাদের প্রোটিনের সাপ্লিমেন্ট দেবে। পাশাপাশি আমাদের অন্য মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টের (অনুপুষ্টি) সাপ্লিমেন্টও দেবে। আমাদের এটাও লক্ষ রাখতে হবে যে, আমাদেরকে উপকারী ফ্যাট আমাদের শরীরে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে আমরা পাই। সেই ক্ষেত্রে আমরা বাদাম খেতে পারি এবং এটাও করত পারি, সেকেন্ড ট্রাইমেস্টার কিংবা থার্ড ট্রাইমেস্টার থেকে আমরা একটা ফিশ অয়েল হয়তো খেতে পারি। এখানে একটা জিনিস আছে। ফিশ অয়েল আসলে আমরা কোনটা খাব?

আমরা চেষ্টা করব ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড খেতে। কারণ অনেক সময় এগুলোতে কিছু পার্থক্য থাকে। আমরা খেয়াল করি না, মোটাদাগে আমরা নিয়ে আসি অন্য একটা জিনিস, যেটা আমাদের প্রয়োজন নেই। তাই আমরা চেষ্টা করব ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের সাপ্লিমেন্টটা যেন আমরা পেতে পারি, যেটা কিনা আবারও আমার বাচ্চার জন্য উপকারী হবে, আমার জন্যও উপকারী হবে।

অনুপুষ্টিতে মনোযোগ

আরেকটা ব্যাপার আমাদের অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে যে, এই সময় অবশ্যই আমরা এই ম্যাক্রো নিউট্রিয়েন্টগুলো প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেটের পাশাপাশি মাইক্রোনিউট্রয়েন্ট, এখন যেটা বলব, সেগুলোর দিকে আমাদেরকে মনোযোগী হতে হবে।

মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট আমাদের শরীরে আসলে খুব অল্প পরিমাণে দরকার হয়, ‍কিন্তু এই অল্প পরিমাণই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কারণ এগুলোর একটির কমতি আমাদের সন্তানের জন্য অনেক বড় রকমের ঝুঁকি ডেকে নিয়ে আসবে।

আয়রন ও আয়োডিনযুক্ত খাবার

এ সময়ে আমাদের লক্ষ রাখতে হবে যে, আমাদের আয়রনযুক্ত খাবার খেতে হবে। আয়োডিনযুক্ত খাবার খেতে হবে। আমাদেরকে অবশ্যই ক্যালসিয়াম এবং ফলিকযুক্ত খাবার খেতে হবে। আয়োডিনযুক্ত খাবার যদি না খাই, অবশ্যই আমার শরীরে রক্তশূন্যতার পাশাপাশি আমার সন্তানের বুদ্ধির বিকাশ বা তারও রক্তশূন্যতা দেখা যেতে পারে। কিছু সমস্যা অবশ্যই চলে আসবে।

আমরা হয়তো একটু গরুর কলিজা খেতে পারি বা আমরা কচুজাতীয় খাবার খেতে পারি। আমরা বাদাম খেতে পারি বা আমরা অন্যান্য যে খাবারগুলোর মাধ্যমে আয়রন পেতে পারি, সে খাবারগুলো আমাদের খাদ্যতালিকায় রাখব।

আয়োডিনযুক্ত খাবারের ভেতরে আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়ার চেষ্টা করব। বর্তমানে অনেকে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন থাকি। এ কারণে আমরা পিংক সল্ট খাচ্ছি বা অন্য রকম কোনো সল্ট খাওয়ার চেষ্টা করছি, কিন্তু এই প্রেগন্যান্সির সময়টাতে আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত আয়োডিনের সোর্সটা যেন আমার কাছে ভালোমতো থাকে। এ কারণে সহজলভ্য আয়োডিনযুক্ত লবণ যেটা, সেটা খাওয়ার চেষ্টা করব।

ক্যালসিয়াম

আমরা আরও চেষ্টা করব ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়ার জন্য। ক্যালসিয়ামটা আমাদের শরীরে খুবই প্রয়োজন। কারণ আমার শরীরের ক্যালসিয়াম থেকেই কিন্তু আমার সন্তান ক্যালসিয়াম নিচ্ছে। সো আমার শরীরে যদি ক্যালসিয়ামের ঘাটতি থাকে, একটা পর্যায়ে আমার শরীর থেকে ক্যালসিয়ামটা ভেঙে ঠিকেই আমার সন্তানের শরীরে চলে যাবে। পরবর্তীতে আমার কোমর ব্যথা, আমার হাড়ক্ষয়, বিভিন্ন ধরনের রোগ একজন মাকে ভোগ করতে হয়। এ কারণে আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খুব বেশি পরিমাণে রাখতে।

আমরা ডিম খেতে পারি, আমরা দুধ খেতে পারি। বাট একান্তই যদি দেখা যায় যে, আমাদের বমি হচ্ছে, আমরা এগুলোর কোনোটাই খেতে পারছি না, আমরা সাপ্লিমেন্ট নিতে পারি আমাদের ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে। পাশাপাশি আমাদেরকে অবশ্যই ফলিকযুক্ত খাবার খেতে হবে।

আমাদের প্রেগন্যান্সির শুরু থেকে সাধারণত রিকমেন্ডেশন করা হয়ে থাকে যে, ফোর হানড্রেড মাইক্রোগ্রাম ফলিক অ্যাসিড নিতে এবং আমাদের এই সময়টাতে সাইট্রাস (কমলা কিংবা লেবুজাতীয়) ফলগুলো যেগুলো থাকে, সাইট্রাস ফলগুলো আমরা একটু নেওয়ার চেষ্টা করব। বিভিন্ন রকমের ফল এবং শাকসবজির ভেতরে আমরা যদি আমাদের খাবারে মোটামুটি দিনে পাঁচবার করে ছোট ছোট অল্প অল্প করে একটু একটু খেতে থাকি, আমাদের কিন্তু ইজিলি এই যে, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টগুলোর ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে।

ভিটামিন

আমাদের যেটা আরও বেশি প্রয়োজন হবে, আমাদের ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন বি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে যে, আমরা স্পেসিফিকলি ভিটামিন ডির ঘাটতিটা যেন আমাদের শরীরে না থাকে। আমরা রোদে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারি।

ইতোমধ্যেই আমি যে খাবারগুলো বলে দিয়েছি যে, আমরা অবশ্যই একটু রঙিন শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করব, ফল খাওয়ার চেষ্টা করব। ডিম বা দুধজাতীয় খাবার বা আমরা মাংস বা মাছ বা বাদাম বা আমরা হয়তো ফিশ অয়েল খাওয়ার চেষ্টা করছি, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যেটা। ওভারঅল এই খাবারগুলোর ভেতরে আমরা যদি খাওয়ার চেষ্টা করি, আমরা নিজেরাই অনুভব করব যে, আমাকে বাড়তি হয়তো ওষুধ দেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না, কিন্তু এই খাবারের কারণে আমার পুষ্টি চাহিদা পূরণ হয়ে যাচ্ছে এবং আমার শরীর সুস্থ থাকছে।

আরেকটা বিষয় আমাদেরকে যেটা লক্ষ রাখতে হবে, এই সময়টিতে আমরা যেন ফ্রোজেন ফুডগুলো, সেগুলো একটু অ্যাভয়েড করার চেষ্টা করি। অনেকেই দেখা যায় যে, সিজনের খাবারের বাহিরেও অন্য খাবার, যেটা ফ্রিজে দিনের পর দিন সংরক্ষণ করে রাখা, ওই রকম খাবার, হঠাৎ করে ক্রেভিং আসে, খেতে চায়। ওই একটা প্রবণতা আমাদের আছে। গর্ভবতী মা যা খেতে চায়, তাকে ওই সময় সাথে সাথে দিতে হবে। প্রয়োজন নেই।

আমাদেরকে যতটা সম্ভব বাসার খাবার খেতে এবং সুস্থ খাবার খেতে হবে; পরিষ্কার খাবার খেতে হবে, যেটার ফলে আমার শরীর ভালো থাকবে; আমার সন্তানও ভালো থাকবে।

7
General Discussion / ভাতের কত গুণ
« on: January 08, 2024, 08:59:39 AM »


আমরা সাধারণত সাদা চালের ভাত খাই। এ চালগুলোর উপরের অংশ মেশিনের সাহায্যে ফেলে দেয়া হয়। এটাকে পলিশিং করা বলে।

পলিশিংয়ে চাল কিছুটা পুষ্টিগুণ হারায়। অন্যদিকে বাইরের আবরণ বাদ দেয়ায় সেটা হজম করা সহজ হয়ে যায়।

যারা পেটের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য আদর্শ খাবার ভাত। ভাতের ফাইবার পেট ভরিয়ে রাখায় অনেক সমস্যাই ঠিক হয়ে যায়।

ভাতের কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে পাকস্থলির অনেক বেশি সময় লাগে। তাতে শরীরের বাড়তি ক্যালরি খরচ হয়। তাই যারা ওজন বাড়ার ভয়ে ভাত থেকে দূরে থাকছেন, তাদের নতুন করে ভাবা দরকার।

ভাতে যে বাড়তি পানি থাকে, তা শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভাত যেহেতু কার্বোহাইড্রেটের উৎস, তাই একে শরীরের শক্তিঘরও বলা হয়। ভাত খেলে শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি আসে।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ভাত রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে; হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। ভাতে দ্রবণীয় ফাইবারের একটি বিশাল ডোজ পাওয়া যায় বাটায়ারেট নামক প্রতিরোধী স্টার্চে।

বাটায়ারেট অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখে। এ জন্য ডায়রিয়া হলে বেশিরভাগ সময় সিদ্ধ চালের ভাত খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

8

কিশোর বয়সে অত্যধিক চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার
সাধারণত একজন মানুষের দৈনিক ১০০টির মতো চুল পড়তে পারে।

আজকাল কিশোর-কিশোরীদের একটি অতি সাধারণ সমস্যা হচ্ছে অতিরিক্ত চুল পড়া। এটা কিশোরদের কাছে তো বটেই, কিশোরীদের কাছে বেশ উদ্বেগের কারণ হতে পারে।


সাধারণত একজন মানুষের দৈনিক ১০০টির মতো চুল পড়তে পারে। সেগুলো আবার গজিয়েও যায়। কিন্তু, চুল পড়ার সংখ্যা যদি এরচেয়েও বেশি হয়, তাহলে তার কারণ জানা জরুরি।

সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।
বিভিন্ন কারণেই অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। এর একটি কারণ হতে পারে পর্যাপ্ত পুষ্টির ঘাটতি। তরুণ বয়সী ছেলেমেয়েরা অনেক সময় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অল্প খাবার খায়। এতে করে সুষম খাদ্যের ঘাটতি হতে পারে। চুলের জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন, ভিটামিন (এ, বি, বিশেষ করে বায়োটিন, সি, ডি ও ই) এবং বেশকিছু খনিজ (আয়রন, জিঙ্ক) নিয়মিত গ্রহণ করা অপরিহার্য। এসব উপাদান সমৃদ্ধ খাবার হচ্ছে ডিমের কুসুম, কলিজা, বাদাম, বীজ, কলা, মিষ্টি আলু, মাশরুম, ব্রকলি ইত্যাদি।

অতিরিক্ত চুল পড়ার আরেকটি কারণ হতে পারে থাইরয়েডের সমস্যা। এই সমস্যার কারণে চুল তৈরি বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং চুল বেশি পড়তে পারে।

অত্যধিক চুল পড়া পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের (পিসিওএস) একটি বৈশিষ্ট্য হতে পারে। ডিম্বাশয় ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোন উত্পাদন করে। সেইসঙ্গে পুরুষ হরমোন অ্যান্ড্রোজেনের একটি অংশও উৎপাদন হয় ডিম্বাশয় থেকে। পিসিওএস-এ আক্রান্ত হলে ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যান্ড্রোজেন তৈরি করে, যার ফলে অতিরিক্ত চুল পড়ে।

মাথার ত্বকে কিছু ছত্রাকের সংক্রমণের কারণেও চুল পড়তে পারে। দীর্ঘ সময় স্যাঁতসেঁতে চুল ঢেকে রাখার ফলে এই ছত্রাকের সংক্রমণ হতে পারে। মাথায় চুলকানো বা মাখার ত্বক লাল হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে ছত্রাকের সংক্রমণ হয়েছে।

চুলে রং করার মতো কারণেও অনেক সময় চুল পড়তে পারে। রাসায়নিক পদার্থ বারবার করে চুলে রং করা বা ব্লিচ করা, চুল স্ট্রেট করার মতো কারণে চুলের ক্ষতি হতে পারে। এরর ফলে চুল ভেঙে যায় বা পড়ে যায়। আয়রন বা গরম ব্লো-ড্রাইং থেকে অতিরিক্ত তাপ দেওয়ার ফলেও চুলের ক্ষতি হয়।

শ্যাম্পুতে অনেক সময় সালফারযুক্ত রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই রাসায়নিকের কারণে মাথার ত্বক থেকে তেল ধুয়ে যায়। এর ফলে চুল শুকিয়ে যায়, চুলের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন ভেঙে যায়, চুলে বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় এবং চুল ভেঙে যায়। সোডিয়াম ক্লোরাইডও শ্যাম্পুতে ব্যবহার করা হয়, যার কারণে ত্বক শুষ্ক হতে পারে বা চুলকাতে পারে এবং চুল পড়া বৃদ্ধি করতে পারে।

চুলকে খুব বেশি টানটান করে, এমন হেয়ারস্টাইল করা হলে চুলের ফলিকল স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ভেজা অবস্থায় স্টাইল করলেও চুল ভেঙে যেতে পারে।

এ ছাড়া, ট্রাইকোটিলোম্যানিয়ার মতো রোগও চুল পড়ার কারণ। এটি এমন একটি মনস্তাত্ত্বিক রোগ, যার ফলে মানুষ বারবার চুল টেনে ধরে। এমন ক্ষেত্রে প্রায়শই তাদের টাক পড়ে যায়। ট্রাইকোটিলোম্যানিয়ায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে চুল টানা বন্ধ করার জন্য একজন থেরাপিস্ট বা মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের শরণাপন্ন হওয়া প্রয়োজন।

হঠাৎ কোনো মানসিক চাপ, যেমন: অস্ত্রোপচার, কোনো আঘাতজনিত ঘটনার মধ্য দিয়ে যাওয়া, গুরুতর অসুস্থতা বা উচ্চ জ্বরের মতো কারণেও সাময়িকভাবে প্রচুর চুল পড়ে যেতে পারে।

চুল পড়া বন্ধ করতে নিয়মিত সুষম খাবার খাওয়া উচিত। এ ছাড়া, স্বাভাবিকভাবে চুল শুকানো, উচ্চ তাপে ব্লো-ড্রায়ার ব্যবহার কমানো বা ব্যবহার না করা, খুব টাইট হেয়ারস্টাইল এড়িয়ে চলা, নিয়মিত চুল আঁচড়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চুল ধোয়া বা আঁচড়ানোর সময় খুবই যত্নশীল হওয়া উচিত।

চুলে যেকোনো ধরনের রাসায়নিক ব্যবহারে সতর্ক হতে হবে। শ্যাম্পু ও হেয়ার জেল ব্যবহার করলে তা সঠিকভাবে ধুয়ে ফেলার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এগুলো দীর্ঘ সময় মাথায় থাকলে তা ত্বকের ছিদ্রগুলো আটকে দিতে পারে, যা মাথার ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।

9

কারও কারও হঠাৎ নাক দিয়ে রক্ত পড়ে। অনেকেই খুব ভয় পান। ভয় না পেয়ে বরং কিছুক্ষণ নিয়ম মেনে নাক চেপে ধরে
রাখলে সাধারণত রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়। তবে রক্তপাতের কারণ খুঁজে বের করা উচিত। কারণ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ
করলে পরবর্তী সময়ে রক্ত পড়ার আশঙ্কা অনেকাংশে থাকে না। নাকে অনেক রক্তনালি থাকে, যা নাকের ঝিল্লি আবরণে
এমনভাবে থাকে একটু আঘাত লাগলেই রক্তপাত হতে পারে। সাধারণত শুষ্ক আবহাওয়ায় এ সমস্যা বেশি হতে পারে।
নাক দিয়ে নানা কারণে রক্ত পড়তে পারে। নাকের ঝিল্লি আবরণী খুবই পাতলা এবং রক্তনালিগুলোও অগভীর হওয়ায় সামান্য
আঘাতে বা অন্য সমস্যায়ও সহজেই রক্তপাত হয়ে থাকে। তবে কারণ খুঁজে সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ উচিত।

কেন নাক দিয়ে রক্ত পড়ে?
কোনোভাবে নাকে বা নাকের ভেতরে আঘাত পেলে, নাকের বা সাইনাসের সংক্রমণ অথবা নাকের বিভিন্ন টিউমার; ইনফেকশন,
ট্রমা, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, নন-অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মাদক সেবন ও বংশগত কিছু রক্তের সমস্যাও নাক
থেকে রক্ত পড়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি করে। তবে এসব ক্ষেত্রে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার পাশাপাশি অন্যান্য উপসর্গথাকে। নাকের ঝিল্লি
শুকিয়ে গেলে, ফেটে গেলে বা সেখানে শক্ত আবরণ সৃষ্টি হলে স্বাভাবিকভাবেই নাক থেকে রক্তপাত হতে পারে। রক্ত জমাটবাঁধা
দূর করার ওষুধ গ্রহণ করলে নাক থেকে রক্ত নির্গত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। আবার বৃদ্ধ বয়সে রক্তনালির সংকোচন
প্রসারণশীলতা কমে যাওয়ার কারণেও নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।

কী করবেন?
নাক দিয়ে রক্ত পড়লে সোজা হয়ে একটু সামনের দিকে ঝুঁকে চেয়ারে বসে পড়ুন। বৃদ্ধাঙ্গুল ও তর্জনী আঙুল দিয়ে নাকের দুই
ছিদ্র জোরে বন্ধ করুন। মুখ দিয়ে শ্বাস নিন। এভাবে ১০ মিনিট ধরে রাখুন। এ সময় আঙুল ছাড়বেন না, প্রয়োজন হলে আরও
বেশিক্ষণ চাপ দিয়ে ধরে রাখুন। এ সময় সম্ভব হলে কপালে, নাকের চারপাশে বরফ ধরে রাখুন। তাহলে রক্ত পড়া তাড়াতাড়ি
বন্ধ হবে। যদি রক্ত ১৫-২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে পড়তে থাকে, তবে দেরি না করে পাশের হাসপাতালের নাক কান গলা
বিভাগে চলে যান। নাকে আঘাতজনিত রক্ত পড়া বন্ধ হলেও চিকিৎসকের পরামর্শনিন। কারণ নাকের হাড় ভেঙেছে কি না, তা
দেখা জরুরি। বারবার রক্ত পড়লে নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।

সাবধানতা
রক্ত পড়াকালে শোবেন না। এতে রক্ত ফুসফুসে গিয়ে জটিল সমস্যা করতে পারে। রক্ত পড়া বন্ধ হলেও কয়েক ঘণ্টা নাক
পরিষ্কার করবেন না, সামনে ঝুঁকে মাথা হৃৎপিণ্ডের নিচের লেভেলে আনবেন না। এতে আবার রক্ত পড়া শুরু হতে পারে।

মন্তব্য করুন
শিশুদের নখ ছোট রাখতে হবে এবং নাকে হাত দেওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে নাক যাতে অতিরিক্ত শুষ্ক
না হয়, তার জন্য নাকের সামনের দিকে পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করা যেতে পারে।

10

অ্যাপেনডিসাইটিস হল এমন একটি রোগ যা অ্যাপেন্ডিক্সের প্রদাহকে বোঝায়, বড় অন্ত্রের সাথে সংযুক্ত একটি ছোট থলির মতো গঠন। অবস্থাটি উল্লেখযোগ্য ব্যথা এবং অস্বস্তির কারণ হতে পারে এবং যদি চিকিত্সা না করা হয় তবে গুরুতর জটিলতা হতে পারে। অ্যাপেনডিসাইটিস  পেটের অস্ত্রোপচারের সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলির মধ্যে একটি, যা বিশ্বব্যাপী সমস্ত বয়সের মানুষর ক্ষেত্রে প্রজোয্য।

অন্যান্য পেটের অবস্থার সাথে এর উপসর্গের মিল থাকার কারণে অ্যাপেন্ডিসাইটিস নির্ণয় করা কঠিন হতে পারে। যদি চিকিত্সা না করা হয় তবে এটি অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যেতে পারে, যা মারাত্মক সংক্রমণ এবং সম্ভাব্য জীবন-হুমকির জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। অতএব, অ্যাপেন্ডিসাইটিসের উপসর্গ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

আজকের এই ব্লগ পোষ্টটি অ্যাপেন্ডিসাইটিস, এর লক্ষণ, কারণ, রোগ নির্ণয় এবং চিকিত্সার পদ্ধতি কি কি তা জানতে সাহায্য করবে। এটির লক্ষ্য হল পাঠকদের অবিলম্বে চিকিৎসার ও যত্ন নেওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষিত করা এবং এই অবস্থার আশেপাশে থাকা যেকোনো ভুল ধারণা দূর করা।

অ্যাপেনডিসাইটিসের লক্ষণগুলো কী কী?
অ্যাপেনডিসাইটিসের লক্ষণগুলি ভিন্ন হতে পারে, তবে সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল পেটের নীচের ডানদিকে ব্যথা। ব্যথা একটি নিস্তেজ ব্যথা হিসাবে শুরু হতে পারে এবং ধীরে ধীরে একটি তীক্ষ্ণ, ছুরিকাঘাতের ব্যথার মত তীব্র হতে পারে। অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে বমি বমি ভাব, বমি, ক্ষুধা হ্রাস, জ্বর, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া এবং গ্যাস পাস করতে অসুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, ব্যথা শরীরের অন্যান্য অংশে, যেমন পিঠ বা কুঁচকিতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে অ্যাপেন্ডিসাইটিসে আক্রান্ত প্রত্যেকে এই সমস্ত লক্ষণগুলি অনুভব করবে না এবং কিছু লোকের কোনও লক্ষণই নাও থাকতে পারে। যাইহোক, যদি আপনি এই উপসর্গগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন তবে অবিলম্বে চিকিত্সার পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, কারণ চিকিত্সা না করা অ্যাপেন্ডিসাইটিস গুরুতর জটিলতার কারণ হতে পারে।

অ্যাপেনডিসাইটিস থেকে মুক্তির উপায়
অ্যাপেনডিসাইটিস হল একটি গুরুত্বপূর্ণ  রোগযার জন্য দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন, সাধারণত অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্স অপসারণ করা হয়। একবার নির্ণয় করা হলে, সর্বোত্তম পদক্ষেপ হল  অ্যাপেনডেক্টমি করা, যা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অ্যাপেনডিক্স অপসারণ করা। চিকিৎসায় বিলম্ব করলে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যেতে পারে এবং পুরো পেটে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা জীবন-হুমকি হতে পারে।

তাড়াতাড়ি ধরা পড়লে, অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়ার আগে, সংক্রমণের চিকিৎসা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যেতে পারে। যাইহোক, অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সাধারণত অ্যাপেন্ডিসাইটিসের চিকিত্সার জন্য যথেষ্ট নয় এবং সাধারণত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়।

অস্ত্রোপচার এবং অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াও, অ্যাপেনডিসাইটিসের উপসর্গগুলি অনুভবকারীদের জন্য ব্যথা ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যথা নিরাময়কারী, যেমন অ্যাসিটামিনোফেন বা আইবুপ্রোফেন, ব্যথা নিয়ন্ত্রন করার জন্য সুপারিশ করা যেতে পারে। এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ক্ষেত্রে ব্যথা উপশমের জন্য অ্যাসপিরিন ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ এটি রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে।

11

স্তন ক্যান্সার বিশ্বব্যাপী মহিলাদের  সবচেয়ে আলোচিত ক্যান্সারের একটি ধরন । এটি ঘটে যখন স্তনের কোষগুলি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেড়ে যায়, একটি টিউমার তৈরি করে। স্তন ক্যান্সার প্রাথমিক সনাক্তকরণ  এবং চিকিত্সা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এই কারণেই মহিলাদের জন্য স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি জানা গুরুত্বপূর্ণ।

স্তন ক্যান্সারের লক্ষণগুলি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে এবং সবসময় লক্ষণীয় নাও হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, স্তন ক্যান্সারের কোনো উপসর্গ নাও হতে পারে, যা নিয়মিত ম্যামোগ্রাম এবং অন্যান্য স্ক্রীনিং পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। যাইহোক, কিছু সাধারণ উপসর্গ রয়েছে যা মহিলাদের সচেতন হওয়া উচিত, যার মধ্যে স্তন বা আন্ডারআর্মের অংশে পিণ্ড বা শক্ত গোটা হয়ে যাওয়া, স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন এবং ত্বকের পরিবর্তন যেমন লাল হওয়া বা ডিম্পিং হওয়া, ব্যথা ও অনুভব হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে।

এই ব্লগ পোষ্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি, মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রাথমিক সনাক্তকরণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে ধারণা পাবেন। স্তন ক্যান্সারের লক্ষণগুলি বোঝার মাধ্যমে এবং অবিলম্বে চিকিত্সার শুরু করার মাধ্যমে, মহিলারা তাদের সফল চিকিত্সা এবং বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

স্তন ক্যান্সারের (মহিলা) লক্ষণগুলি কী কী?
স্তন ক্যান্সার হল এক ধরনের ক্যান্সার যা স্তনের টিস্যুকে প্রভাবিত করে। এটি মহিলা এবং পুরুষ উভয়ের মধ্যেই ঘটতে পারে তবে এটি মহিলাদের মধ্যে অনেক বেশি হয়। কার্যকর চিকিত্সা এবং উন্নত ফলাফলের জন্য স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক সনাক্তকরণ গুরুত্বপূর্ণ।

এখানে মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে:

- স্তন বা আন্ডারআর্মের অংশে পিণ্ড বা শক্ত গোটা হয়ে যাওয়া
- স্তনের আকার বা আকৃতির পরিবর্তন
- বুকের দুধ ছাড়া অন্য স্তনের স্রাব
- স্তনের বোঁটা বা স্তনের ত্বকের রঙ বা টেক্সচারের পরিবর্তন
- স্তনের ত্বকে ডিম্পলিং বা ফুসকুড়ি
- স্তন বা আন্ডারআর্ম এলাকায় ফোলা বা লালভাব
- স্তনে ব্যথা বা কোমলতা যা যায় না

এটি লক্ষ্য করা গুরুত্বপূর্ণ যে স্তনের সমস্ত পিণ্ড বা পরিবর্তনগুলি ক্যান্সারযুক্ত নয়, তবে যে কোন পরিবর্তন দেখা গেলে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর স্বরনাপন্ন হওয়া উচিত।

 

নোট: নিয়মিত স্তনের স্ব-পরীক্ষা এবং ম্যামোগ্রাম স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক সনাক্তকরণে সাহায্য করতে পারে। আপনি যদি উপরের উপসর্গ বা পরিবর্তনগুলি লক্ষ্য করেন, তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে কথা বলা গুরুত্বপূর্ণ।

স্তন ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় (মহিলা)
স্তন ক্যান্সার একটি জটিল রোগ, এবং চিকিত্সার বিকল্পগুলি ক্যান্সারের স্তর এবং প্রকারের পাশাপাশি বয়স এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের মতো অন্যান্য কারণের উপর নির্ভর করবে। যদিও স্তন ক্যান্সারের “পরিত্রাণ” করার কোন নিশ্চিত উপায় নেই, সেখানে বেশ কয়েকটি চিকিত্সা রয়েছে যা এই রোগটি পরিচালনা এবং সম্ভাব্যভাবে নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

মহিলাদের স্তন ক্যান্সারের জন্য এখানে কিছু সাধারণ চিকিত্সার ব্যবস্থা আলোচনা করা হল:

সার্জারি: সার্জারি হল স্তন ক্যান্সারের একটি সাধারণ চিকিৎসা এবং এতে টিউমার এবং পার্শ্ববর্তী টিস্যু অপসারণ করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে, একটি mastectomy (সম্পূর্ণ স্তন অপসারণ) প্রয়োজন হতে পারে।

রেডিয়েশন থেরাপি: রেডিয়েশন থেরাপি ক্যান্সার কোষগুলিকে মেরে ফেলার জন্য উচ্চ-শক্তির এক্স-রে ব্যবহার করে এবং প্রায়শই অস্ত্রোপচারের পরে অবশিষ্ট ক্যান্সার কোষগুলিকে ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়।

কেমোথেরাপি: কেমোথেরাপি ক্যান্সার কোষগুলিকে মেরে ফেলার জন্য শক্তিশালী ওষুধ ব্যবহার করে এবং প্রায়শই অন্যান্য চিকিত্সার সাথে সংমিশ্রণে ব্যবহৃত হয়।

হরমোন থেরাপি: হরমোন থেরাপি নির্দিষ্ট ধরণের স্তন ক্যান্সারে ইস্ট্রোজেনের প্রভাবগুলিকে ব্লক করতে ব্যবহৃত হয় এবং অন্যান্য চিকিত্সার সাথে সংমিশ্রণে ব্যবহার করা যেতে পারে।

টার্গেটেড থেরাপি: টার্গেটেড থেরাপি ক্যান্সার কোষকে বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু এবং আক্রমণ করার জন্য ওষুধ ব্যবহার করে যখন সুস্থ কোষের ক্ষতি কম করে।
এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে স্তন ক্যান্সারের চিকিত্সার পরিকল্পনা রোগের ধরনের উপর নির্ভর করবে এবং এই চিকিত্সাগুলির সংমিশ্রণ চিকিৎসা হতে পারে।

 

পরিশেষে, মহিলাদের জন্য নিয়মিত ম্যামোগ্রাম করা এবং তাদের স্তনের টিস্যুর কোন পরিবর্তন সম্পর্কে তাদের অভিজ্ঞ ডাক্তার এর সাথে কথা বলাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং চিকিত্সা ফলাফল উন্নত করতে পারে এবং সফল নিরাময়ের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে।

12

পেট ফাঁপা, যা সাধারণত গ্যাস পাসিং নামে পরিচিত, একটি স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়া যা পাচনতন্ত্রে যখন গ্যাস জমা হয় এবং মলদ্বার দিয়ে নির্গত হয় তখন ঘটে। যদিও এটি হজমের একটি স্বাভাবিক অংশ, অতিরিক্ত পেট ফাঁপা কিছু লোকের জন্য অস্বস্তিকর এবং বিব্রতকর হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, এটি একটি অন্তর্নিহিত হজম সমস্যা বা খাদ্য-সম্পর্কিত সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।

পেট ফাঁপা হওয়ার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন গ্যাস হওয়া, ফুলে যাওয়া বা অস্বস্তি বোধ করা এবং পেটে ব্যথা বা ক্র্যাম্প অনুভব করা। এই লক্ষণগুলি বিভিন্ন কারণের কারণে হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট ধরণের খাবার খাওয়া, হজমের ব্যাধি যেমন ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (IBS), বা খাওয়া বা পান করার সময় বাতাস গিলতে পারে।

সৌভাগ্যবশত, বেশ কিছু প্রতিকার রয়েছে যা পেট ফাঁপা এবং এর সাথে সম্পর্কিত উপসর্গগুলি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এই প্রতিকারগুলির মধ্যে রয়েছে খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন যেমন নির্দিষ্ট খাবার এড়িয়ে চলা, ফাইবার গ্রহণ বাড়ানো এবং হাইড্রেটেড থাকা। ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ এবং প্রোবায়োটিকগুলি পেট ফাঁপা কমাতে সহায়ক হতে পারে। পেট ফাঁপা যদি স্থায়ী হয় বা অন্যান্য উপসর্গের সাথে থাকে তবে একজন স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি একটি অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যের অবস্থা নির্দেশ করতে পারে।

পেট ফাঁপা রোগের লক্ষণগুলো কি কি
পেট ফাঁপা রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:


ঘন ঘন গ্যাস হওয়া: এটি পেট ফাঁপা হওয়ার সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ এবং এটি সারা দিনে বেশ কয়েকবার হতে পারে।
ফুলে যাওয়া বা পূর্ণ বোধ করা: পেট ফাঁপা পেটে পূর্ণতা বা অস্বস্তির অনুভূতি হতে পারে, যার সাথে ফুলে যাওয়াও হতে পারে।
পেটে ব্যথা বা ক্র্যাম্প: কিছু লোক পেট ফাঁপা হওয়ার ফলে পেটে ব্যথা বা ক্র্যাম্প অনুভব করতে পারে, বিশেষ করে যদি তারা ঘন ঘন গ্যাস পাস করে।
বেলচিং: বেলচিং বা ঝাঁকুনি, পেট ফাঁপা হওয়ার আরেকটি সাধারণ লক্ষণ। এটি খাওয়া বা পান করার সময় বাতাস গিলে ফেলার কারণে হতে পারে।
মলত্যাগের পরিবর্তন: পেট ফাঁপা হলে অন্ত্রের গতিবিধির পরিবর্তন হতে পারে, যেমন ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য।
খারাপ গন্ধ: পেট ফাঁপা হওয়ার সময় নির্গত গ্যাসের তীব্র বা অপ্রীতিকর গন্ধ থাকতে পারে, যা কিছু লোকের জন্য বিব্রতকর বা অস্বস্তিকর হতে পারে।
পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

এখানে কিছু প্রতিকার রয়েছে যা পেট ফাঁপা থেকে মুক্তি পেতে সহায়তা করতে পারে:

ডায়েট পরিবর্তন: কিছু খাবার পেট ফাঁপা হতে পারে, তাই তাদের সনাক্ত করা এবং এড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ অপরাধীদের মধ্যে রয়েছে মটরশুটি, বাঁধাকপি, ব্রোকলি, পেঁয়াজ এবং কার্বনেটেড পানীয়।
প্রোবায়োটিকস: প্রোবায়োটিক হল ভাল ব্যাকটেরিয়া যা হজমের উন্নতি করতে পারে এবং পেট ফাঁপা কমাতে পারে। এগুলি দই এবং কেফিরের মতো খাবারে পাওয়া যায় বা সম্পূরক হিসাবে নেওয়া যেতে পারে।
পাচক এনজাইম: হজমকারী এনজাইমগুলি পাকস্থলীতে খাবার ভাঙ্গাতে সাহায্য করে, যা গ্যাস এবং ফোলাভাব কমাতে পারে। এগুলি পরিপূরক হিসাবে নেওয়া যেতে পারে।
ব্যায়াম: ব্যায়াম হজমকে উদ্দীপিত করতে এবং ফোলাভাব এবং গ্যাস কমাতে সাহায্য করতে পারে। এমনকি খাবারের পরে একটি সাধারণ হাঁটাও উপকারী হতে পারে।
পেপারমিন্ট চা: পেপারমিন্ট চা পরিপাকতন্ত্রের পেশীগুলিকে শিথিল করতে সাহায্য করতে পারে, যা গ্যাস এবং ফোলাভাব কমাতে পারে।
চারকোল ট্যাবলেট: চারকোল ট্যাবলেট গ্যাস শোষণ করতে এবং পেট ফাঁপা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এগুলি প্রচুর পরিমাণে জলের সাথে নেওয়া উচিত এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যবহার করা উচিত নয়।

এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে পেট ফাঁপা যদি ক্রমাগত থাকে বা পেটে ব্যথা বা মলত্যাগের পরিবর্তনের মতো অন্যান্য উপসর্গের সাথে থাকে, তাহলে কোনও অন্তর্নিহিত চিকিৎসা পরিস্থিতি বাতিল করার জন্য একজন সাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সাথে পরামর্শ করা ভাল।

13

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, সাধারণত খড় জ্বর নামে পরিচিত, একটি প্রচলিত রোগ যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করে। এটি বায়ুবাহিত পদার্থের প্রতি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া, যেমন পরাগ, ধূলিকণা বা পোষা প্রাণীর খুশকি, যা অনুনাসিক প্যাসেজে প্রদাহ এবং জ্বালা সৃষ্টি করে। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বিভিন্ন ধরনের অস্বস্তিকর উপসর্গের কারণ হতে পারে, যেমন হাঁচি, সর্দি, চোখ চুলকানো এবং ভিড়, যা দৈনন্দিন কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং জীবনের সামগ্রিক মানকে প্রভাবিত করতে পারে।

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে শহুরে এলাকায়, এবং বিশ্ব জনসংখ্যার 30% পর্যন্ত প্রভাবিত করে বলে অনুমান করা হয়। এটি শিশু এবং অল্প বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায় তবে সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস ট্রিগারগুলির উপর নির্ভর করে মৌসুমী বা বহুবর্ষজীবী হতে পারে এবং অন্যান্য অ্যালার্জির অবস্থার সাথে সহাবস্থান করতে পারে, যেমন হাঁপানি এবং একজিমা।

এই ব্লগ পোস্টে আমি আলোচনা করবি অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর কারণ, লক্ষণ, রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার বিকল্পগুলি সম্পর্কে। এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনা কৌশল প্রচার করতে, আমরা ব্যক্তি এবং সমাজের উপর অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর বোঝা কমাতে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি বদ্ধ থাকি। আসুন গভীরে প্রবেশ করা যাক।

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর উপসর্গ কি কি?
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, যা খড় জ্বর নামেও পরিচিত, এটি পরাগ, ধূলিকণা বা প্রাণীর খুশকির মতো বায়ুবাহিত পদার্থের অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া।

 অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণগুলি ব্যক্তি এবং ট্রিগারগুলির উপর নির্ভর করে তীব্রতা, সময়কাল এবং ফ্রিকোয়েন্সিতে পরিবর্তিত হতে পারে। এখানে কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে:

হাঁচি: ঘন ঘন হাঁচি অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে একটি, বিশেষ করে অ্যালার্জেনের সংস্পর্শে আসার প্রতিক্রিয়ায়।
সর্দি নাক: নাক থেকে একটি পরিষ্কার, জলযুক্ত স্রাব অ্যালার্জিক রাইনাইটিস এর একটি বৈশিষ্ট্য।
নাক বন্ধ: অনুনাসিক প্যাসেজ ফুলে যাওয়া এবং প্রদাহের ফলে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয় বা বাধার অনুভূতি হতে পারে।
নাক এবং গলা চুলকায়: নাক এবং গলা চুলকানি এবং জ্বালা অনুভব করতে পারে, যার ফলে ঘন ঘন ঘষা এবং ঘামাচি হতে পারে।
জলযুক্ত, চুলকানি চোখ: অ্যালার্জিক রাইনাইটিস চোখ লাল, চুলকানি এবং জলের কারণ হতে পারে, যার সাথে চোখের নিচে কালো দাগ এবং ফোলাভাব হতে পারে।
পোস্টনাসাল ড্রিপ: নাক থেকে শ্লেষ্মা গলার পিছনের দিকে নেমে যেতে পারে, যার ফলে গলা ব্যথা, কাশি বা কর্কশতা দেখা দেয়।
ক্লান্তি: অ্যালার্জিক রাইনাইটিস ক্লান্তি এবং সাধারণ অস্বস্তির অনুভূতির কারণ হতে পারে, যা অ্যালার্জেনের প্রতি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে হতে পারে।
এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণগুলি অ্যালার্জির তীব্রতা এবং ধরণের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে।

নোট: আপনি যদি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন, বিশেষত একটি নির্দিষ্ট ঋতুতে বা নির্দিষ্ট ট্রিগারগুলির প্রতিক্রিয়া হিসাবে, আপনার অ্যালার্জিজনিত রাইনাইটিস হতে পারে এবং সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থেকে মুক্তির উপায়
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, খড় জ্বর নামেও পরিচিত, একটি বিরক্তিকর অবস্থা হতে পারে যা আপনার জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করে।

 যাইহোক, উপসর্গগুলি নিয়ন্ত্রন করার এবং অ্যালার্জেনের সংস্পর্শ কমানোর বিভিন্ন উপায় রয়েছে। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এখানে কিছু উপায় রয়েছে যেমন:

অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলুন: অ্যালার্জিক রাইনাইটিস পরিচালনা করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল আপনার লক্ষণগুলিকে ট্রিগার করে এমন অ্যালার্জেনগুলি সনাক্ত করা এবং এড়ানো। আপনি পরাগ, ধূলিকণা, পোষা প্রাণীর খুশকি এবং অন্যান্য অ্যালার্জেনের সংস্পর্শ কমিয়ে এটি করতে পারেন।

ওষুধ: ওভার-দ্য-কাউন্টার অ্যান্টিহিস্টামাইনস, ডিকনজেস্ট্যান্ট এবং নাকের কর্টিকোস্টেরয়েড অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণগুলি থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে। প্রেসক্রিপশন ওষুধ, যেমন ইমিউনোথেরাপি, গুরুতর  লক্ষণগুলির জন্যও সুপারিশ করা যেতে পারে।

নাক এ লবন পানি দিয়ে পরিস্কার: স্যালাইন দ্রবণ নাকে দিয়ে অনুনাসিক প্যাসেজ থেকে অ্যালার্জেন এবং বিরক্তিকর পদার্থ বের করে দিতে এবং নাক বন্ধ দূর করতে সাহায্য করতে পারে।

বায়ু পরিস্রাবণ: বায়ু ফিল্টার ব্যবহার করে, যেমন উচ্চ-দক্ষতা কণা বায়ু (HEPA) ফিল্টার, আপনার বাড়ি থেকে বায়ুবাহিত অ্যালার্জেন অপসারণ করতে এবং অভ্যন্তরীণ বায়ুর গুণমান উন্নত করতে সহায়তা করতে পারে।

আকুপাংচার: আকুপাংচার, একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা চিকিৎসা, কিছু গবেষণায় অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণগুলি কমাতে দেখানো হয়েছে।

খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে ভিটামিন সি এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার প্রদাহ কমাতে এবং অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণগুলিকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

সবশেষে আপনার নির্দিষ্ট লক্ষণ এবং ট্রিগারগুলির জন্য সর্বোত্তম চিকিৎসা পরিকল্পনা নির্ধারণ করতে আপনার অভিজ্ঞ ডাক্তার এর সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। কেবল সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং স্ব-যত্ন সহ, আপনি কার্যকরভাবে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন এবং আপনার জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে

14
ধুলাবালি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সবার ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক সমস্যা না করলেও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা করতে পারে। সাধারণত যেসব ধুলা খালি চোখে দেখা যায় না, সেগুলো সাধারণত বেশি ক্ষতিকর।

কীভাবে ক্ষতি করে?

ধুলার ধরন, আকার-আয়তন, ঘনত্বের মাত্রা ও কত দিন ডাস্টে বসবাসের ওপর নির্ভর করে ক্ষতির মাত্রা। সামান্য পরিমাণ ধুলাও তাৎক্ষণিক সমস্যা করতে পারে। যেমন চোখ জ্বালাপোড়া, কাশি, হাঁচি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, হাঁপানি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। আবার যাঁদের আগে থেকেই ফুসফুসের সমস্যা আছে, তাঁদের অল্পতেই সমস্যা জটিল করে তুলতে পারে।

কারা বেশি ঝুঁকির মধ্যে?

সাধারণত শিশু, বৃদ্ধ ও যাঁদের ডাস্ট অ্যালার্জি আছে, তাঁরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন।

প্রতিরোধের উপায় কী?

প্রাকৃতিক ধুলা নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন। তবে মানবসৃষ্ট ডাস্ট অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

*বাসাবাড়ির ধুলা সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বিভিন্ন ব্যবহার্য জিনিস থেকে ধুলা তৈরি হতে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা। বাসার মেঝে, আঙিনা, বারান্দা, জানালা নিয়মিত পরিষ্কার রাখা। বাড়িতে কোনো পোষ্য প্রাণী থাকলে তাদেরও নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন।

*বিশেষ করে বাসার আশপাশে পানি ছিটিয়ে ধুলাবালি উড়তে না দেওয়া। আর শীতকালে বেশির ভাগ সময়ই বাড়ির জানালা-দরজা বন্ধ করে রাখা হয়। এত হাওয়া চলাচল হয় না। ফলে আপাতদৃষ্টিতে ঘরবাড়ি পরিষ্কার মনে হলেও এ সময় ধুলা একটু বেশিই জমে। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে একটু বাড়তি নজর দিতে হবে।

*খোলা জায়গায় সমিল, পাথর ভাঙা, ইট ভাঙা ইত্যাদি না করা।

*কলকারখানা ও পোশাক কারখানায় কাজ করার সময় মুখে অবশ্যই মাস্ক পরা।

*বিভিন্ন আবাসন নির্মাণ প্রকল্পের আশপাশে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়মিত পানি ছিটানো। নির্দিষ্ট মাপের জিনিস ব্যবহার করা, যাতে কাটাকাটি কম করতে হয়। ফলে ধুলা কম তৈরি হবে।

*রাস্তাঘাট এমনভাবে নির্মাণ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে যেন অতিরিক্ত ধুলাবালি তৈরি না হয়।

*মাস্ক পরার অভ্যাস থাকলে সহজেই এই ধুলার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।


চোখ জ্বালাপোড়া, কাশি, হাঁচি, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস, হাঁপানি ইত্যাদি সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

15
ম্যানুয়াল ফিজিওথেরাপির একটি প্রকার হলো "মোবিলাইজেশন" বা "মোবিলাইজেশন থেরাপি"। এটি একটিসুক্ষ্ন চিকিৎসা পদ্ধতি যার মাধ্যমে টিস্যু এবং জয়েন্টগুলোর চলাচলকে বাড়িয়ে  তুলতে সাহায্য করে। যার মাধ্যমে  টিস্যু এবং জয়েন্টগুলোর শক্তি ও কার্য ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

মোবিলাইজেশন থেরাপির উদাহরণ হতে পারে:

জয়েন্ট মোবিলাইজেশন: এটি হলো  টিস্যু এবং জয়েন্টগুলোর নিদিস্ট নড়াচরা করানোর পদ্ধতি । এতে  টিস্যু এবং জয়েন্টগুলোর সীথিলতা , ভেতরের জায়গা ও হাড়গুলোর চলাচলের ধরন উন্নত হয়।  ম্যানুয়াল থেরাপিতে  এটি অত্যন্ত কার্যকরী চিকিৎসা  উদাহরণস্বরূপ, একজন থেরাপিস্ট একটি কনডাইল জয়েন্টে অতিক্রম করতে সহায়ক হতে পারে, যা শ্রেণিবিন্যাস, সংযোগ, এবং চলার মধ্যে চলে যেতে সাহায্য করতে পারে।

স্পাইনাল মোবিলাইজেশন: এটি ম্যানুয়াল থেরাপিতে স্পাইনাল জয়েন্টগুলোর উপর প্রয়োগ করা হয়। স্পাইনাল জয়েন্টগুলোর সীথিলতা , ভেতরের জায়গা ও হাড়গুলোর চলাচলের ধরন উন্নত করতে সহায়তা করে।

মাসেল মোবিলাইজেশন: এটি ম্যানুয়াল থেরাপিতে মাংসপেশীর স্থানে কাজ করার জন্য একটি প্রকার থেরাপি। এটি মাংসপেশীকে চলাচল সক্ষম করতে সহায়তা করে।

মোবিলাইজেশন থেরাপি করার জন্য  একজন লাইসেন্সড প্রফেশনাল বা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক প্রয়োজন। মোবিলাইজেশন থেরাপি একটি আধুনি চিকিৎসা যা ব্যথা নিরাময়ে অতন্ত্য কার্যকরী।

Pages: [1] 2 3 ... 25