Daffodil Hospital & Research Center
Health Care => Health Awareness => Topic started by: Rasel Ali on July 07, 2022, 01:06:40 PM
-
(https://mzamin.com/uploads/news/main/10795_vac.webp)
দেখা যায় ঈদ উৎসবে বাহারি খাবারের আয়োজনের কারণে অনেকে কিছু শারীরিক সমস্যায় পড়েন বা পড়ে থাকেন। এটি একটি স্বাভাবিক সমস্যা। কিছু নিয়ম পালন করলে আপনাকে এ সমস্যায় পড়তে হবে না। দেখা যায় বিশেষ করে ঈদে কারও কারও বিভিন্ন অসুস্থতার কারণে অতিরিক্ত খাবার খেতে মানা থাকলেও তা খেয়ে থাকেন। আর কোরবানির ঈদে তো পাল্লা দিয়ে বেশি বেশি মাংস খাওয়ার চিরচেনা এক অভ্যাস। এই সময়টাতে লক্ষণীয় বিষয় হলো অনেকেই শুধু খায় আর ঘুমায়। এতেই দেখা যায় যতো বিপত্তি। সাধারণত এই সময়ে হঠাৎই কিছু অভ্যাস পরিবর্তনের ফলে কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য ঈদের ছুটিতে নিজের শরীরের দিকেও একটু বাড়তি খেয়াল রাখা বা যত্ন নেয়ার প্রয়োজন। সকলেরই এ সময়ে ফিট থাকার জন্য একটু সময় বের করে হলেও কিছু ব্যায়াম করা দরকার।
বিজ্ঞাপন
ঈদে অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বেড়ে যেতে পারে; তাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যায়াম করা খুবই জরুরি। যারা জিমে যেতে পারেন না, তারা বাসায়ই ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন। তবে কতোক্ষণ করবেন সেটি নির্ভর করবে ব্যক্তির শারীরিক প্রয়োজন ও চাহিদার ওপর। একবারেই সব মেদ কমানোর চেষ্টা করবেন না বরং ১০ শতাংশ কমানোর প্রাথমিক লক্ষ্য স্থির করুন। যাতে আপনি ফিট থাকতে পারবেন এবং অতিরিক্ত মেদ শরীরে জমা হবে না। সাধারণত দেখা যায় যারা নিয়মিত এক্সারসাইজ করেন তাদের মেটাবলিক রেট বেড়ে যাবে। ফলে ওজন কমবে ধীরে ধীরে। আর ঈদে যেহেতু আপনি ব্যায়ামের নির্দিষ্ট সেন্টারে যেতে পারেন না তাই ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজের মধ্যে জাম্পিং, জগিং, স্ট্রেচিং, সিট আপস প্রভৃতি পদ্ধতি করতে পারেন। এ ছাড়া যোগব্যায়ামও করতে পারেন। তবে প্রথমে ওয়ার্মআপ করে নেবেন। বাড়িতে যত সময় অবস্থান করবেন সে সময় শুয়ে-বসে না থেকে হাঁটাচলা করুন। বাড়িতে লিফট থাকলেও দৈনিক কয়েকবার সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করুন। আরও ভালো হয় যদি হালকা জিনিসপত্র বহন করা যায়। এতে মাসল টোনড হবে।
এ সময় বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেচিং ব্যায়াম, যেমন- আর্ম স্ট্রেচিং বা লেগ লিফটিং করতে পারেন। রক্তসঞ্চালন ভালো হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের মেদ কমে যাবে। সাধারণত হার্ট সুস্থ রাখার জন্য জগিং খুব ভালো ব্যায়াম। বাড়ির যেকোনো জায়গায় আপনি স্পট জগিং করতে পারেন। এ সময় উপযুক্ত জুতা পরবেন, যাতে পায়ের ওপর স্ট্রেস না পড়ে। ঈদের ছুটিতে সুস্থ থাকতে যে করণীয়গুলো আপনি পালন করতে পারেন তা হলো- *যেহেতু ঈদের সময় আমরা বেশি ক্যালোরিযুক্ত ও প্রোটিন খাবার খাই। তাই প্রত্যহ সকালে কিংবা ঘুমের আগে মিনিট বিশেকের মতো পার্কে বা বাড়ির ছাদে জগিং কিংবা দৌড়াদৌড়ি করতে পারেন। বাড়ির অন্য সদস্যদের এই অভ্যাসে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করুন। *ঈদের ছুটিতে বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ টেলিভিশন কিংবা ল্যাপটপ-কম্পিউটারের দিকে সময় না কাটানোই ভালো। একটু হাঁটাচলা করে শরীরের রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখার দিকে নজর দিন। *ঈদের সময় দীর্ঘক্ষণ ঘুমানোর অভ্যাস আমাদের মধ্যে বেড়ে যায়। এই অভ্যাস আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ওপর প্রভাব ফেলে। এ সময় স্বাভাবিক ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর অভ্যাস বজায় রাখুন।
দুপুরের দিকে না ঘুমানোই শরীরের জন্য মঙ্গল। *যারা নিয়মিত যোগব্যায়াম করেন আলস্যের কারণে এ সময় ব্যায়াম বাদ দেয়া উচিত হবে না। *ঈদের ছুটিতে সময় পেলে সাইক্লিংও করতে পারেন, এতে টানা কয়েক দিনে আপনার শরীর ফুরফুরে হয়ে উঠতে পারে। *দীর্ঘক্ষণ মুঠোফোনে কথা বলা বা টিভি দেখে না কাটানোই ভালো। দীর্ঘক্ষণ স্মার্ট ফোন বা টিভি দেখলে ঘাড়, গলা ও মস্তিষ্কের ওপর বিরূপ প্রভাব তৈরি হয়। *অনেকেই এ সময় বাড়িতে বেশি সময় কাটান। একদম বাড়ি থেকে বের হতে চান না, এটা ঠিক নয়। একটু ঘুরাঘুরি করলে শরীর ভালো থাকে। *আলস্যের কারণে অনেকেই এ সময় জিমনেসিয়ামে যেতে চান না। এই আলস্য পরিহার করুন। নিয়মিত জিমে যাওয়া বন্ধ করলে শরীর ও মাংসপেশিতে জটিলতা দেখা যায়।
লেখক: জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা বদরুদজোদা মডার্ন হাসপাতাল, সফিপুর, কালিয়াকৈর, গাজীপুর।
Source: Daily Manobjomin News