Daffodil Hospital & Research Center

General Category => General Discussion => Topic started by: Dr. Sushanta Kumar Ghose on January 29, 2023, 10:38:41 AM

Title: বদহজম ও পেট ফাঁপার কারণসমূহ ও এর ৭টি প্রতিকার!
Post by: Dr. Sushanta Kumar Ghose on January 29, 2023, 10:38:41 AM
(https://www.shajgoj.com/wp-content/uploads/2014/05/pain-in-stomach-700x431.jpg)

পেট ফাঁপা তলপেটের একটি অস্বস্তিকর অবস্থা। এই অবস্থা সম্পর্কে কম বেশি সবাই জানে। আমাদের পাকস্থলী যে পরিমাণ খাদ্য হজম করতে পারে, তার অতিরিক্ত কোন খাবার খেলেই বদহজম হতে পারে। শর্করা জাতীয় খাদ্য – আলু, ভাত, রুটি, খতকাসহ ফল ইত্যাদি অনেক সময় অজীর্ণ অবস্থায় মলাশয়ে প্রবেশ করলে সেখানে অবস্থিত কার্বনডাইঅক্সাইড জারিত হয়ে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করে। শর্করা জাতীয় খাবার থেকে যে গ্যাস উৎপন্ন হয় তাতে কোন গন্ধ থাকে না। কিন্তু আমিষ পঁচে যে গ্যাস হয় তা হয় দুর্গন্ধযুক্ত। চলুন জেনে নিই বদহজম ও পেট ফাঁপার কারণসমূহ এবং এর চমৎকার কিছু প্রতিকার।

পেট ফাঁপার কারণসমূহ

কোষ্ঠকাঠিন্য, পেপ্টিকআলসার এবং পেটে কৃমি থাকলেও পেট ফেঁপে যেতে পারে। অনেকের অভ্যাস আহারের ফাঁকে ফাঁকে পানি পান করা, এতে খাবার ভালো মত হজম হয় না। এ অভ্যাস পরিহার করা উচিত। এই ক্ষেত্রে রসুন, ১ টি উপাদেয় উপাদান কারণ রসুন মলাশয়ে জীবাণু বৃদ্ধিকে বাঁধা দেয়। তবে কাঁচা পেঁয়াজ অনেকের গ্যাস উৎপন্ন  করে।


পেট ফাঁপা রোধে যে নিয়ম মেনে চলবেন

১. খাবার ভালো মত চিবিয়ে খেতে হবে। কম চিবানো খাবার পরিপাক কম হয়।

২. মাত্রা অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। এটি পেট ফাঁপার অন্যতম কারণ।

৩. ঢেকুর যদি দুর্গন্ধযুক্ত হয় তবে খাবারে মাংস, ডিম কমাতে হবে এবং ডাল বাদ দিতে হবে।

৪. সবজি – সাজনা, বরবটি, বাধাকপি, শিম কমিয়ে দিতে হবে।

৫. খুব বেশি তেলে ভাজা জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলতে হবে।

৬. আচার, চাটনি, মিষ্টি বাদ দিতে হবে।

৭. রাতের খাবার হবে হালকা। ঘুমানোর ২ ঘণ্টা আগে খাবার খেতে হবে।

৮. সিমের বিচি, ডাল, মাঝে মাঝে লেবুও গ্যাস এর সমস্যা করতে পারে।

পেট ফাঁপার প্রতিকার

১. ব্যায়াম করলে ছোট খাটো পেটের সমস্যা, পেট ফাঁপা থেকে কোষ্ঠ দূর হয়। পাচক নলে খাদ্য চলমান হয় সাবলীল গতিতে, বর্জ্য নিষ্কাশন হয় সহজে। কমে মনের চাপও। তাই ব্যায়ামের অভ্যাসটা করে ফেলুন।

২. খাবারের দিকে খেয়াল রাখবেন। পেটের জন্য উত্তেজক বা পেটের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়  অথবা পেটে ব্যথা তৈরি করতে পারে এমন খাবার পরিহার্য। কিছু কিছু খাদ্য পেটে গ্যাস তৈরি করে যেমন শিম, বাদাম তৈলাক্ত খাবার ও পনির; যাদের সহ্য হয় না এসব খাবার তারা এসব এড়িয়ে যাবেন।  অনেকে আবার কমলার রস, কফি, চা, টমেটো খেলে সমস্যায় পড়েন।

৩. ধূমপান বা মদ্যপান করার অভ্যাস থাকলে তা বর্জন করা উচিত।

৪. খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করবেন না, আস্তে ধীরে চিবিয়ে খান। একটু সময় নিয়ে খাবারকে সময় নিয়ে গিলুন। গোগ্রাসে গেলা ঠিক না। পেটে বাতাস ঢুকবে না ।

৫. আচার, চিপস ও নোনা খাবার যত কম খাবেন তত ভালো। লবণ কম খাবেন।

৬. ‘দুধ সহ্য হয় না, অর্থাৎদুগ্ধ শর্করা ল্যাকটোজ হজম হয় না। তাই দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্য খেলে প্রচুর গ্যাস হয় পেটে’ এমন হলে দুধ, পনির, দুধজাত খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিন। সয়া দুধ অথবা দই খাওয়া যেতে পারে। কারণ দই এ ল্যক্টজ ল্যক্টিক এসিড হয়ে যায়।

৭. কিছু না হতেই মেডিসিন খেয়ে নিবেন না। তবে সমস্যার উন্নতি না হলে ডাক্তার এর পরামর্শ নিন।

এই বিষয়গুলো মনে রাখলে এবং মেনে চললে সহজেই আপনি বদহজম ও পেট ফাঁপা সমস্যা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।



লেখক: সুশান্ত কুমার ঘোষ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিআইইউ মেডিকেল সেন্টার।