Daffodil Hospital & Research Center

Health Care => Blood Bank => Topic started by: Dr. Sushanta Kumar Ghose on January 16, 2023, 09:30:46 AM

Title: রক্তদান নিয়ে নানা প্রশ্নের উত্তর
Post by: Dr. Sushanta Kumar Ghose on January 16, 2023, 09:30:46 AM
(https://images.prothomalo.com/prothomalo-bangla%2F2021-06%2F5b508b86-363f-4e5a-ab84-46be11ac29d1%2Fblood_donation_1024x731.jpg?auto=format%2Ccompress&format=webp&w=640&dpr=1.0)

প্রশ্ন:  কারা অন্যকে রক্ত দিতে পারবেন?

উত্তর:
[/color] শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী যেকোনো মানুষ রক্তদান করতে পারবেন। যাঁদের ওজন ন্যূনতম ৪৭ কেজি (ক্ষেত্রবিশেষে ৪৫ কেজিও গণ্য করা হয়) এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক (পুরুষের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১২ গ্রাম/ ডেসিলিটার এবং নারীর ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১১ গ্রাম/ ডেলি) তাঁরা চার মাস পরপর রক্ত দিতে পারবেন।

প্রশ্ন: উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগীদের কি রক্ত দেওয়া নিষেধ?

উত্তর:
সাধারণভাবে বলা হয়, উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের রোগীরা রক্তদান থেকে বিরত থাকবেন। তবে তাঁরা একেবারেই রক্তদান করতে পারবেন না, বিষয়টি এমনও না। যদি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বা স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে, তবে রক্তদান করা যাবে। উচ্চরক্তচাপের ক্ষেত্রেও তা–ই। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে রক্তদানে বাধা নেই। তবে উভয় ক্ষেত্রে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে বা চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে রক্তদান করাটাই নিরাপদ।

প্রশ্ন: রক্ত গ্রহণের প্রয়োজন হলে নিজের ভাই–বোন, বাবা–মায়ের রক্ত নেওয়া কি ভালো?

উত্তর:
আপন ভাই-বোন বা পিতা-সন্তানের মধ্যে রক্ত পরিসঞ্চালন নিরাপদ নয়। এ রকম নিকটাত্মীয় বা রক্তসম্পর্কীয়দের কাছ থেকে রক্ত নিলে একধরনের জটিলতা হতে পারে, যা বিরল কিন্তু প্রাণঘাতী। এই জটিলতাকে বলা হয় ‘ট্রান্সফিউশন অ্যাসোসিয়েটেড গ্রাফট ভার্সাস হোস্ট ডিজিজ (টিএজিভিএইচডি)’।

প্রশ্ন: ধূমপায়ীর রক্ত নেওয়া যাবে?

উত্তর:
ধূমপায়ীরাও রক্ত দিতে পারবেন। ধূমপায়ীদের রক্ত নিতে বাধা নেই। এমনকি অ্যাজমা ও অ্যালার্জির রোগীরা রক্ত দিতে পারবেন, যদি রক্তদানের আগে থেকেই তাঁরা উপসর্গমুক্ত থাকেন। কিন্তু যদি অ্যাজমা রোগী শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকেন, তাহলে সে সময়ে তিনি রক্ত দিতে পারবেন না।

প্রশ্ন: রক্ত পুরোটাই দেওয়া ভালো, নাকি বিশেষ বিশেষ অংশ?

উত্তর:
আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতিতে রোগীর শরীরে পুরো রক্ত দেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়। বিশেষ বিশেষ অংশ দেওয়াই যুক্তিযুক্ত ও নিরাপদ। আর এতে একই ব্যক্তির রক্তে অনেকে উপকৃত হতে পারেন। যেমন: যাঁর অ্যানিমিয়া আছে, তাঁকে কেবল লোহিতকণিকা দেওয়া বা যাঁর প্লাটিলেট ঘাটতি আছে, তাঁকে কেবল প্লাটিলেট দেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত ও নিরাপদ। কারও শুধু প্লাজমা বা রক্তের তরল অংশ দেওয়া হয়। এতে পরিসঞ্চালনজনিত জটিলতাও কম হয়।

প্রশ্ন: স্বামী–স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কি সন্তানের জটিলতা হয়?

উত্তর:
স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হওয়া ভালো নয়, এটি একটি বহুল প্রচলিত গুজব। এর কোনো সত্যতা নেই। স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কোনো সমস্যা নেই। তবে স্ত্রী নেগেটিভ আর স্বামী পজিটিভ হলে এবং সন্তান পিতার গ্রুপ পেলে নবজাতকের জন্ডিসসহ কিছু জটিলতা হতে পারে, তবে তা আগে থেকে জানা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

প্রশ্ন: রক্তশূন্যতা হলেই কি রক্ত নেওয়া উচিত?

উত্তর:
রক্তশূন্যতার ক্ষেত্রে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৭ গ্রাম/ ডেলির নিচে নামলে তবেই রক্ত পরিসঞ্চালন করা যেতে পারে। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে শরীরে বিশেষ কিছু উপসর্গ দেখা দিলে (যেমন অতিরিক্ত দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি) বা চিকিৎসক প্রয়োজন মনে করলে ৮ বা ৯ গ্রাম/ ডেলি হলেও রক্ত দেওয়া যেতে পারে। রক্তশূন্যতার মূল চিকিৎসা রক্ত দেওয়া নয়, বরং কারণ খুঁজে বের করে তার সমাধান করা।

প্রশ্ন: গ্রুপিং ও ক্রস ম্যাচিং করার পরও কি রক্ত নেওয়ার কারণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে?

উত্তর:
অবশ্যই গ্রুপিং বা ক্রস ম্যাচিংয়ের পরও রক্ত নেওয়ার পর শরীরে নানা রকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে।


লেখক: সুশান্ত কুমার ঘোষ, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, ডিআইইউ মেডিকেল সেন্টার